রাস্তা ও পার্কে নামাজ নিষিদ্ধ!
প্রকাশিত : ১১:১৭, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১১:৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮
সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিন ছুটি বাতিল-সহ একাধিক জায়গার নামবদলের নির্দেশ জারি করে বিতর্কে জড়িয়েছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হল পার্কে নমাজ পড়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা!
গত সপ্তাহে রাজধানী দিল্লি সংলগ্ন নয়ডায়র সেক্টর-৫৮-এর একটি পার্কে নমাজ পড়া যাবে না বলে ফরমান জারি করেছে পুলিশ। ওই নির্দেশিকায় কোম্পানিগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে, তাদের কর্মীরা যদি পার্কটিতে নমাজ পাঠ করেন, তা হলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকেই নির্দেশভঙ্গের দায় নিতে হবে।
নির্দেশিকা জারির পরে ওই শিল্পাঞ্চলে মুসলিম কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। কোম্পানিগুলোর কর্তৃপক্ষ পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ারও চিন্তাভাবনা করছেন।
নয়ডার সেক্টর-৫৮ এলাকায় এইচসিএল-সহ ১২টি বহুজাতিক সংস্থাকে পার্কে নমাজ পড়া বন্ধের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়ে নোটিস দেওয়া হয়েছে। সংস্থাগুলির মুসলিম কর্মীরা শুক্রবার কাজের সময় ওই পার্কটিতে কয়েক বছর ধরেই নমাজ পাঠ করছেন।
ওই নোটিসে বলা হয়েছে, কোম্পানিগুলোর কিছু মুসলিম কর্মীকে শুক্রবার পার্কে নমাজ পড়তে দেখা যায়। তাদের ওই কাজ করতে যেন নিষেধ করা হয়। তা সত্ত্বেও যদি পার্কে কর্মীদের নমাজ পড়তে দেখা যায়, তা হলে কোম্পানিগুলিকে নির্দেশভঙ্গের দায় নিতে হবে। সূত্রের খবর, একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই নির্দেশিকা জারি করেছে। ওই সংগঠনটি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিল, প্রকাশ্যে নমাজ পাঠে এলাকায় ‘সম্প্রীতি বিঘ্নিত’ হচ্ছে।
নির্দেশিকার ফলে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে অস্বস্তিতে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন। নয়ডার এসএসপি অজয় পালের বক্তব্য, কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে উদ্দেশ করে ওই নির্দেশিকা জারি করা হয়নি।
তিনি বলেন, ‘কিছু লোক সেক্টর-৫৮’র পার্কটিতে নমাজ পাঠের অনুমতি চেয়েছিলেন। বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করেননি। কিন্তু এখনও সেখানে কিছু লোক ধর্মীয় কারণে জড়ো হচ্ছেন। তাদের উদ্দেশেই ওই নোটিস।’
বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, উত্তরপ্রদেশে বিজেপি ক্ষমতা দখলের পর থেকে গোরক্ষা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে হিন্দুত্ববাদীরা। সম্প্রতি কয়েকটি জায়গার নাম বদলেছে।সেই পথ ধরেই নমাজ নিয়ে এমন নিষেধাজ্ঞা। যোগী যদিও আজ বলেছেন, ‘জাত-ধর্মের ভিত্তিতে যারা নেতিবাচক রাজনীতি করে, তারা আসলে গণতন্ত্রকেই ঠকায়।’
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার
এমএইচ/
আরও পড়ুন