ব্রেক্সিটে লণ্ডভণ্ড ইংল্যান্ড
প্রকাশিত : ২০:০৪, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | আপডেট: ২০:০৭, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ (ব্রেক্সিট) প্রশ্নে ব্রিটিশরা বড় ধরনের সমস্যায় রয়েছেন। আর এই ব্রেক্সিটের কারণে প্রধানমন্ত্রীত্ব হারিয়েছেন ডেভিড ক্যামেরুন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে এখন এই ব্রেক্সিট নিয়ে বেশ সমস্যায় রয়েছে। আর এই ব্রেক্সিস সমস্যা নিয়ে টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে দেশটি।
ব্রেক্সিস সমস্যা এখন ওই দেশের মন্ত্রী-এমপিদেরও পিছু ছাড়েনি। একে একে ‘গোগ্রাসে গিলেছে’ ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের (টরি পার্টি) ১১ মন্ত্রী ও ১৪ এমপিকে। সর্বশেষ গত তিন দিনে বিরোধী লেবার পার্টির ৮ এমপিও পড়েছেন একই খপ্পরে। পদত্যাগের মুখে রয়েছেন টরি দলের আরও ১০ এমপি ও লেবারের ৮ এমপি। এক ব্রেক্সিট ভূমিকম্পে ১৯২০ সালের পর ব্রিটিশ রাজনীতিতে ‘শতাব্দীর সেরা ধস’ দেখা দিয়েছে।
আগামী ২৯ মার্চ ইইউ’র সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ কার্যকর হওয়ার কথা। সময় মাত্র ৩৬ দিন। গত ১৫ জানুয়ারি সর্বশেষ ব্রেক্সিট সমঝোতা নিয়ে পার্লামেন্টে ভোটাভুটিতে পরাজিত হন মে। চুক্তির একটি ধারা পরিবর্তনের দাবি তোলেন অধিকাংশ এমপি। তাদের মন রক্ষায় বুধবার আবারও ব্রাসেলস যান। কিন্তু ইইউ তাতে নারাজ। বরাবরের মতো তাকে এবারও খালি হাতেই ফিরিয়ে দেয় ইইউ। পরিস্থিতি এখন আরও বিগড়ে গেছে।
বিচ্ছেদের পর ইইউর সদস্য স্বাধীন আয়ারল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যের অংশ নর্দান আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার সীমান্ত উন্মুক্ত রাখার (বেকস্টপ) পক্ষে এমপিরা। অন্যথায় নর্দান আয়ারল্যান্ড আইনগতভাবে যুক্তরাজ্যের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। আর এর জেরেই পদত্যাগের হিড়িক পড়ে গেছে। ব্রেক্সিট নিয়ে মতবিরোধে বুধবার কনজারভেটিভ থেকে পদত্যাগ করেন অ্যানা সোবরি, সারাহ উলস্টন ও হেইডি অ্যালেন।
সর্বশেষ পদত্যাগ করা ৭ লেবার এমপি নিউ ইন্ডিপেনডেন্ট গ্রুপে যোগ দিয়েছেন। তারাই এ দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ‘রাজনীতি ভেঙে পড়েছে, পরিবর্তন প্রয়োজন’ স্লোগানে গঠিত একটি গোষ্ঠী এটি। রাজনৈতিক অনিবন্ধিত এ দলের সবাই এমপি। গোষ্ঠীটি এখন ব্রিটিশ পার্লামেন্টের চতুর্থ সংখ্যাগরিষ্ঠ। হাউস অব কমন্সে তৃতীয় বৃহত্তম দল স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টিকে (৩৫ আসন) টপকে যাওয়ার পথেই এগিয়ে চলেছে তারা।
২০১৮ সালেও ব্রেক্সিট বিরোধের জেরে পদত্যাগ করেন ১১ টরি মন্ত্রী। তারা হলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন, বিজ্ঞানমন্ত্রী স্যাম গিমাহ, জুনিয়র ব্রেক্সিট সেক্রেটারি সুয়েলা ব্রাভারম্যান, অবসরবিষয়ক মন্ত্রী ইসথার ম্যাকভে, ব্রেক্সিট সেক্রেটারি ডমিনিক রাবো ও ডেভিড ডেভিস, নর্দার্ন অ্যায়ারল্যান্ড মন্ত্রী শাইরেশ ভারা, পরিবহন মন্ত্রী জো জনসন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুটো বেব, ব্রেক্সিট মন্ত্রী স্টিভ ব্যাকার ও সরকারের হুইপ গ্যারেথ জনসন।
ব্রেক্সিট ঝড় থামছে না ব্রিটিশ জুড়ে। এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে যাচ্ছে দেশটি কিন্তু কাজের কাজ তেমন হচ্ছে। তাই বলা যায়, এই ব্রেক্সিট ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়ছে দেশটি।
এসএইচ/
আরও পড়ুন