ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪

ভারত-পাকিস্তান বন্ধুত্বের নিদর্শন যে ট্রেন

প্রকাশিত : ১৬:৩৬, ৬ মার্চ ২০১৯ | আপডেট: ১৮:৪৬, ৬ মার্চ ২০১৯

ভারত ও পাকিস্তানের দ্বন্দ্বের গল্প কে না জানে৷ কিন্তু যুদ্ধ ছাড়াও যে এই দুটি দেশের মধ্যে রয়েছে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা, সে সম্পর্কে জানুন এই ছবিঘরে...

সমঝোতা না বন্ধুত্ব?
শিমলা চুক্তির পর ১৯৭৬ সালে শান্তি ও বন্ধুত্বের প্রতীক হিসাবে অমৃতসর ও লাহোরের মধ্যে চালু হয় এই ট্রেন৷ ‘সমঝোতা এক্সপ্রেস’ নামের এই ট্রেনটি ২০০৬ সালে ‘থর এক্সপ্রেস’ চালু হবার আগে পর্যন্ত ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংযোগকারী একমাত্র ট্রেন ছিল৷ ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ও পাকিস্তান রেলওয়ের যৌথ প্রকল্পের ফল এই ট্রেনটি৷

দিল্লি দূরে নয়
দুই দেশের মধ্যে মাত্র ৫২ কিলোমিটারের পথ পাড়ি দেয় এই ট্রেনটি৷ লাহোর থেকে দিল্লি ছাড়া এই ট্রেনটি থামে পাকিস্তানের মুঘলপুরা ও জাল্লো’তে৷ ওয়াগাহ-আটারি সীমান্তে সম্পন্ন হয় কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত কাজ৷ এরপর, ট্রেনটি ভারতে প্রবেশ করলে থামে খাসা, ছেহেরতা ও অমৃতসর স্টেশনে৷

সময়সূচি
যখন প্রথম চালু হয় এই ট্রেন, তখন প্রতিদিন চলত এটি৷ কিন্তু বর্তমানে সপ্তাহে দুইবার, বুধবার ও রবিবারে দিল্লি ও লাহোর থেকে ছাড়ে এই ট্রেন৷

কত দীর্ঘ এই ‘সমঝোতা’?
সাধারণত, চার থেকে আট কামরার হয় গাঢ় সবুজ ও নীল রঙের এই ট্রেনটি৷ বিশেষ উৎসবের মরসুমের সময় কর্তৃপক্ষ ঠিক করে দেন, কত দীর্ঘ হবে ট্রেনটি৷

বন্ধুত্বে ব্যাঘাত
এখন পর্যন্ত, মোট তিনবার বন্ধ রাখা হয়েছে সমঝোতা এক্সপ্রেস৷ প্রথমবার ২০০১ সালে ভারতীয় সংসদভবনে হামলার পর বন্ধ করা হয় এই ট্রেন চলাচল৷ এরপর ২০০৭ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো নিহত হবার পর বন্ধ হয় সমঝোতা৷ এরপর ফেব্রুয়ারিতে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের ফলে বন্ধ করা হলেও এখন আবার চালু হয়েছে এই পরিষেবা৷

সমঝোতায় সন্ত্রাসী হামলা
২০০৭ সালে পানিপতের কাছে এই ট্রেনে বোমা হামলার হয়৷ এতে ৭০ জন পাকিস্তানি নাগরিকসহ মারা যান কয়েকজন ভারতীয় সৈনিক৷ আহত হন শতাধিক মানুষ৷ ২০০৯ সালে জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা এই হামলার সাথে জড়িত বলে জানায় অ্যামেরিকা৷ কিন্তু ২০১০ সালের ভারতের জাতীয় সুরক্ষা এজেন্সির অনুসন্ধানকারী দল জানায় যে, এর মূল প্রণেতা হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সদস্য স্বামী অসীমানন্দ৷ এই দায় পরে স্বীকার করেন তিনি৷

বিপাকে সমঝোতা
২০১২ সালের ৮ অক্টোবর এই ট্রেন থেকে একশ কিলো হেরোইন ও পাঁচশ রাউন্ডেরও বেশি বুলেট উদ্ধার করে পাকিস্তানের পুলিশ৷ দিল্লিগামী এই ট্রেন থেকে পাওয়া হেরোইনের দাম ছিল প্রায় ৫০৫ কোটি ভারতীয় রুপি৷

টালবাহানার সমঝোতা
এখনও চলছে ২০০৭ সালে সমঝোতা এক্সপ্রেসে হামলার তদন্ত৷ আসলেই কে দোষী, তা স্পষ্ট নয়৷ অনেকেই ইঙ্গিত করেন, রাজনৈতিক সুবিধার জন্য বারবার ব্যবহার করা হয়েছে এই রেলসংযোগকে৷ তবুও, ভারত ও পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের মধ্যে আসা-যাওয়া অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে এই বিশেষ ট্রেনটি৷ সূত্র: ডয়েচে ভেলে

এসি

 

 

 

 

 

 

 

 

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি