শামীমার ‘অন্যায়ের’ জন্য ব্রিটেনের কাছে ক্ষমা চাইলেন তার বাবা
প্রকাশিত : ১৩:৫১, ১০ মার্চ ২০১৯ | আপডেট: ১৫:১৩, ১০ মার্চ ২০১৯
শামীমা বেগম ইসলামিক স্টেটে যোগ দিয়ে যুক্তরাজ্য থেকে সিরিয়া গিয়েছিলেন। সেখানে যাওয়ার এই সিদ্ধান্তের জন্য শামীমার বাবা ব্রিটিশ জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তারা বাবা আহমেদ আলী বলেন, তার মেয়ে ‘বুঝে করুক বা না বুঝে, সে ভুল করেছে।’
তবে তিনি মনে করেন যুক্তরাজ্যের উচিত শামীমা বেগমকে দেশে ফিরতে দেয়া, যেখানে ফেরার পর শামীমাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
শামীমা সিরিয়া থেকে ব্রিটেনে ফেরার ইচ্ছা ব্যক্ত করার পরই, দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে বলে জানান।
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় একটি জেলা সুনামগঞ্জে বসে মি. আলী বিবিসিকে যখন এই সাক্ষাৎকার দেন, তখনো শামীমা বেগমের শিশু সন্তানটি মারা যায়নি।
২০১৫ সালে ইসলামিক স্টেট বাহিনীতে যোগ দিতে ১৫ বছর বয়সে শামীমা বেগম লন্ডন ছেড়ে সিরিয়ায় যান। ফেব্রুয়ারিতে টাইমস পত্রিকাকে সাক্ষাৎকার দেবার সময় মিজ. বেগম নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
তিনি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আইএসে যোগ দেয়া নিয়ে তিনি অনুতপ্ত নন, তবে "খিলাফতে"র দিন ফুরিয়ে আসছে বলে ধারণা।
সন্তান জন্মের কিছুদিন পর বিবিসিকে মিজ বেগম বলেছিলেন, তিনি চান তার সন্তান যুক্তরাজ্যে বেড়ে উঠুক।
কিন্তু নিউমোনিয়ায় ভুগে বৃহস্পতিবার তিন সপ্তাহর চেয়ে কম বয়সী শিশু জারাহ মারা গেছে।
যেহেতু মিজ. বেগমের নাগরিকত্ব বাতিলের আগে শিশু জারাহ`র জন্ম, সে কারণে তাকে ব্রিটিশ নাগরিক বলে ভাবা হচ্ছে।
মেয়ের কর্মকাণ্ড নিয়ে তার বাবা মি. আলী বলেছেন, ‘সে অন্যায় করেছে, আমি তার বাবা হিসেবে সবার কাছে ক্ষমা চাই।’ ‘সে যা করেছে, সেজন্য আমি দুঃখিত। ব্রিটিশ জনগণের কাছে আমার অনুরোধ তাকে ক্ষমা করে দেয়া হোক।’
৬০ বছর বয়সী আলী উল্লেখ করেন, তারা মেয়ে যখন সিরিয়া যায়, তখন সে আসলে শিশু ছিলো। ‘সে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছিল, অত কিছু বুঝতে পারেনি। আমার মনে হয় কেউ তাকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে নিয়ে গেছে,’ তিনি জানান।
‘তবে, যাই করেছে সে ভুল করেছে, সেটা সে বুঝতে পারুক আর নাই পারুক।’ তিনি ব্রিটিশ সরকার ও জনগণের কাছে তার মেয়েকে ফিরে আসার সুযোগ দেবার এবং সে ভুল করে থাকলে সেজন্য শাস্তি দেবার অনুরোধ জানান।
তবে তার মেয়ে উগ্রপন্থার দিকে ঝুঁকে পড়ছে, তা তিনি জানতেন কিনা - গণমাধ্যমের এমন প্রশ্নের জবাবে আলী জানান, ‘তার কোন ধারণাই ছিল না’ এ ব্যাপারে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আলী বেশিরভাগ সময় বাংলাদেশে থাকছেন। লন্ডনে গিয়ে দুই-চার সপ্তাহ থেকে আসেন। ‘আমি বেশি সময় লন্ডনে থাকিনা, যে কারণে তার (শামীমা) সম্পর্কে বেশি কিছু জানিনা আমি,’ তিনি বলেন।
বাংলায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি ভীষণ চিন্তিত। মেয়ে উগ্রপন্থার দিকে কিভাবে চলে গেল - তার কোন ধারণা নেই।
কিন্ত একজনের পাসপোর্ট নিয়ে আরেকজন কিভাবে দেশত্যাগ করলো - ব্রিটিশ ইমিগ্রেশনের কাছে জানতে চান শামীমার বাবা। গণমাধ্যম থেকে দূরে থাকতে চান তিনি।
তথ্যসূত্র: বিবিসি
এমএইচ/
আরও পড়ুন