সম্প্রীতি ও ভালোবাসায় নিউজিল্যান্ড বাসীর বিরল দৃষ্টান্ত
প্রকাশিত : ২৩:৫৫, ২২ মার্চ ২০১৯ | আপডেট: ০০:১০, ২৩ মার্চ ২০১৯
শান্তির দেশ হিসেবে খ্যাত নিউজিল্যান্ড। শান্তির পাদভুমি নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে অবস্থিত আন নূর মসজিদ ও লিনউড মসজিদে গত ১৫ মার্চ স্মরণকালের ভয়াবহতম সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় হতবাক গোটা পৃথিবী।শোকে মুহ্যমান মুসলিম বিশ্ব। আল্লাহর পবিত্র ঘর মসজিদে এমন নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড শুধু নিউজিল্যান্ডে নয়; পৃথিবীতেই বিরল। উগ্র বর্ণবাদী শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসীর এ হামলায় পাঁচ বাংলাদেশিসহ ৫০ জন মুসল্লি নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন ৬০ জন। অল্পের জন্য বেঁচে যান বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা। তাঁরাও ওই মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতে যাচ্ছিলেন। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়া এরই মধ্যে জানিয়েছে, হতাহতদের মধ্যে এসব দেশের নাগরিকও রয়েছেন।
ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে বন্দুকধারী সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের শোকে মুহ্যমান হয়ে পরেছে পুরো মুসলিম বিশ্ব। মুসলমানদের প্রার্থনা গৃহে সন্ত্রাসী হামলার পর দুনিয়াজুড়ে শোক ও নিন্দা অব্যাহত রয়েছে। এই ঘটনায় বিভিন্ন দেশ ও দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা সন্ত্রাসের বিপক্ষে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। এই নৃশংস হামলায় নিহতদের স্মরণে সেদেশের গির্জায় প্রার্থনা চলছে। বলতে গেলে এই রক্তের দাগ কিছুতেই ভুলতে পারছেন না নিউজিল্যান্ডের শান্তি প্রিয় জনগণ।
ঘটনার এক সপ্তাহ পর আজ ছিল প্রথম জুমা। মুসলমানদের প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে নিউজিল্যান্ড সরকার সেদেশের বেতার এবং টিভিতে আযান সম্প্রচার করার সিদ্ধান্ত নেয়। জুমার নামাজে বাড়তি নিরাপত্তা দিতে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আহডার্নও রাস্তায় নেমে এসেছেন। পাশে দাঁড়িয়েছেন স্বজনের পাশে। মুসলমানদের ধর্ম চর্চায় অভয় দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে নিউজিল্যান্ডের লাখো শান্তি প্রিয় মানুষ।
শুক্রবার হামলাস্থল আল নূর মসজিদের কাছের একটি পার্কে নিহতদের স্মরণে হাজারো মানুষ জড়ো হন। এ শোকসভায় প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আহডার্নও যোগ দেন।
শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুরে দেশটির রাষ্ট্রীয় রেডিও, টেলিভিশনে জুমার নামাজের আজান প্রচার ও এরপর দেশটি জুড়ে দুই মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এদিন মুসলিমদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশের জন্য দেশটির অন্য ধর্মের নারীরাও মাথায় হিজাব পরেছেন।
এই উপলক্ষে আল নূর মসজিদে জুমার নামাজের সময় সমবেত হন হাজার হাজার শোকাহত মানুষ। জুমার নামাজ শুরুর ঠিক আগে আগে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা ওই মসজিদে পৌঁছান।
এ জুমার নামাজের ইমামতি করেন ইমাম গামাল ফৌদা। নামাজ শুরুর আগে তিনি বলেন, বন্দুকধারী বিশ্বের কোটি-কোটি মানুষের হৃদয় ভেঙে দিয়েছে। সেই একই জায়গা থেকে তাকিয়ে আজ মানুষের ভালোবাসা ও সহানুভূতি দেখতে পাচ্ছি। আমাদের হৃদয় ভেঙে গেলেও আমরা ভেঙে পড়িনি। আমরা বেঁচে আছি, একসঙ্গে আছি। আমাদের মধ্যে বিভক্তি আনতে দেব না।
তিনি আরও বলেন, নিউজিল্যান্ডের প্রতিটি মানুষকে ধন্যবাদ। প্রত্যেকের চোখ দিয়ে যে অশ্রু পড়েছে তার জন্য ধন্যবাদ। ধন্যবাদ শোক প্রকাশ করার জন্য। ধন্যবাদ ফুলের জন্য। ধন্যবাদ তোমাদের ভালোবাসার জন্য। ধন্যবাদ আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে। ধন্যবাদ আপনার নেতৃত্বের জন্য। আজ এটা বিশ্বের অন্যান্য নেতাদের জন্য শিক্ষা হয়ে থাকল।
এ সময় মুসলিমদের উদ্দেশে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলেন, নিউজিল্যান্ড আপনাদের সঙ্গে শোকাহত, আমরা এক।
কট্টর ডানপন্থি বর্ণবাদী মতাদর্শের মূল উৎপাটনের লক্ষ্যে বিশ্বের সব দেশের সম্মিলিতভাবে লড়াই করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন।
উগ্র ডানপন্থি জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের উত্থান সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে জাসিন্ডা আরডার্ন বলেন, `নিউজিল্যান্ডে আমরা এ ধরনের মতাদর্শে বিশ্বাস করি না। নিউজিল্যান্ডের মানুষের সঙ্গে এ রকম মানসিকতা মেলানো হলে অধিকাংশ নিউজিল্যান্ডারকেই অপমান করা হবে।`
তার মতে, এ ধরনের মানসিকতার মূল খুঁজে বের করে এমন পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে এমন মানসিকতা ছড়িয়ে পড়তে না পারে।
আরডার্ন বলেন,আমি বিশ্বব্যাপী একটি আহ্বান জানাতে চাই। নিউজিল্যান্ডের ঘটনায় এখানকার মানুষ এমন এক ব্যক্তির সহিংসতার ভুক্তভোগী হয়েছে যে নিউজিল্যান্ডের বাইরে তার কট্টরপন্থি মতাদর্শের সঙ্গে পরিচিত হয়েছে এবং সেখানেই এর অনুশীলন করেছে। `আমরা যদি নিরাপদ ও সহনশীল একটি বিশ্ব চাই তাহলে সীমানার বিষয়ে চিন্তা করলে চলবে না।`
শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে নিউজিল্যান্ডের ভূমিকার প্রশংসা করে জাসিন্ডা আরডার্ন বলেন, `আমাদের দেশে মানুষকে স্বাগত জানানো হয়। তিনি বলেন, `নিউজিল্যান্ডকে যারা নিজের দেশ মনে করে তাদের স্বাগত জানাতে গিয়ে সে রকম (উগ্রপন্থি) মতাদর্শ ছড়ানোর পরিবেশ তৈরি করে দিচ্ছি—এই ধারণা আমি প্রত্যাখ্যান করি।`
ক্রাইস্টচার্চে হামলা চালানো বন্দুকধারীর নাম উচ্চারণ না করার ঘোষণায় অটল থাকার কথা জানিয়ে আরডার্ন বলেন, `সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের মাধ্যমে সে অনেক কিছুই হাসিল করতে চেয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম ছিল কুখ্যাতি। তাই আমরা কখনোই তার নাম উচ্চারণ করবো না।`
নিউজিল্যান্ডে যেভাবে মুসলিমদের স্বাগত জানাচ্ছে-
নিউজিল্যান্ডের মুসলমান নারীদের প্রতি সমর্থন জানাতে আজ (শুক্রবার) সারাদেশ জুড়ে নারীরা একদিনের জন্য মাথা ঢেকে রাখবেন।
`হেডস্কার্ফ ফর হারমনি`র আয়োজকরা বলছেন, কী ধরনের কাপড় মাথায় পরতে হবে, বা কিভাবে তা পরতে হবে, তা নিয়ে বিশেষ কোন নিয়ম-কানুন থাকবে না।
নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড বলছে,`হেডস্কার্ফ ফর হারমনি`র ধারণাটা প্রথম আসে অকল্যান্ডের একজন ডাক্তার থায়য়া আশমানের মাথায়।
নিউজিল্যান্ডে মাথায় স্কার্ফ, বুকে গোলাপ নিয়ে নিরাপত্তায় নারী পুলিশ
নিউজিল্যান্ডে ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার পর মাথায় ওড়না জড়িয়ে মুসলিম জাতির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন। প্রধানমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী ব্যাপক প্রশংসিত হয়।
এবারও আরও একটি ঘটনা বিশ্ববাসীর দৃষ্টি কাড়লো। গতকাল বৃহস্পতিবার ক্রাইস্টচার্চের মেমোরিয়াল পার্ক সমাধিক্ষেত্রে একজন নারী পুলিশকে মাথায় ওড়না পরে এবং বুকে লাল গোলাপ নিয়ে পাহাড়া দিতে দেখা গেছে।
ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার দিলে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়। নেটিজেনরা ওই নারী পুলিশের এই ছবিটিকে সংহতি,সম্মান ও নিরাপত্তার প্রতীক হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তাদের মতে, এই তিনটি বিষয়ের সমন্বয়ে এটি ‘অত্যন্ত শক্তিশালী’ একটি ছবি।
জানা গেছে, ওই নারী পুলিশ সদস্যের নাম মাইকেল ইভানস। তিনি মাথায় কেলভিন ক্লেইন স্কার্ফ জড়িয়ে, বুকের ওপর লাল গোলাপ নিয়ে এবং বুশমাস্টার সেমি-অটোমেটিক রাইফেল হাতে নিয়ে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন।
ছবিটি তুলেছেন নিউজিল্যান্ডের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘স্টাফ’ এর ফটো সাংবাদিক আলডেন উইলিয়ামস।
তিনি বলেন, “সাংবাদিকতা জীবনে অনেক পুলিশ সদস্যের ছবি তুলেছি। কিন্তু মাথায় হিজাব, হাতে অ্যাসল্ট রাইফেল আর বুকে লাল গোলাপ- এর মতো অসধারণ সামঞ্জস্যের এরকম ছবি আগে কখনো দেখেনি। এমনকি ওই নারী পুলিশ সদস্য যদি এগুলোর যেকোনো একটি নিয়ে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতো, সেটা হতো ভিন্ন কিছু।”
তিনি বলেন,“অধিকাংশ গণমাধ্যম কর্মীরা সেখানে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করতে আসা মগরেল মবদের ছবি তোলায় ব্যস্ত ছিল। তখন আমি আমি এই ছবিটি তুলি।”
ছবিটি প্রথমে শেয়ার করা হয় ’স্টাফ’ এর লাইভ ব্লগে। সেখানে মুহূর্তেই এটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়। পরে সেটি ফটোগ্রাফার উইলিয়ামস তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টেও শেয়ার করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই প্লাটফর্মে মাত্র কয়েক ঘণ্টায় ছবিটি এত পরিমাণে লাইক পায়, যা অন্য সবগুলো ছাড়িয়ে যায় মুহূর্তেই।
ছবিটি নিয়ে অনেকে কমেন্টও করেছেন। একজন লিখেছেন, “ছবিটি নিউজিল্যান্ডের সহিষ্ণুতা, সমবেদনা এবং মানবতার এক বলিষ্ঠ উদাহরণ।”
আরেকজন লিখেছেন, “ছবিটি অবিশ্বাস্য, সুন্দর এবং শক্তিশালী।”
মুসলিম নারীদের সাথে নিউজিল্যান্ডের মাওরি নারীর একাত্বতা।
নির্যাতন আর বৈষম্যের প্রতীক মাথায় বেঁধে আপনারা এক হত্যাযজ্ঞের স্মরণ অনুষ্ঠান করছেন," অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, "এটা ভুলে গেলে চলবে না।"
অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. যাইন আলী বলছেন, এর মধ্য দিয়ে মুসলিম নারীদের অবমাননা হবে না বলেই তিনি বিশ্বাস করেন। কিন্তু এর মাধ্যমে অন্য নারীদের কি অপমান করা হচ্ছে? না, কারণ কাউকে জোর করে মাথায় কাপড় দেয়ানো হচ্ছে না।
তিনি বলেন, নিউজিল্যান্ডের নারীরা যদি মাথায় স্কার্ফ পরেন, তার মানে এই নয় যে সৌদি আরব বা ইরানে যা ঘটছে তারা তার সাথে একমত। দুটি ভিন্ন বাস্তবতাকে আলাদা করে দেখার পরিপক্বতা থাকা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এদিকে মসজিদে হামলার ঘটনায় নিহতদের জন্য ক্রাইস্টচার্চের গির্জায় গির্জায় প্রার্থনা করা হয়। আল নূর ও লিনউড মসজিদে হামলায় হতাহত ব্যক্তিদের পরিচয় নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ দ্রুততার সঙ্গে কাজ করছে জানিয়ে পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ বলেন, এটি খুবই সংবেদনশীল প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে আমাদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হচ্ছে।
হামলার ঘটনাসহ দেশের অস্ত্র আইন সংস্কারের জন্য সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে আমাদের দেশের অস্ত্র আইন পরিবর্তন করা হবে।
গত শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দু`টি মসজিদে বন্দুকধারী সন্ত্রাসী ব্রেনটন টারান্টের হামলায় ৫০ জন নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হন। এখনও ৩৪ জনকে ক্রাইস্টচার্চ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, তাদের মধ্যে ১২ জন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রয়েছেন।
ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে নৃশংসতার পর নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের দরদি চেহারা বিশ্ব দেখেছে। একদিকে তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘাতকতে গ্রেপ্তার করতে পেরেছেন। অন্যদিকে হতাহতের ঘটনায় শোকার্ত মুসলিমদের তিনি বুকে টেনে নিয়েছেন। অভয় দিয়ে বলেছেন, ‘আমরা তোমাদের শোকের সঙ্গী হয়তো হতে পারব না। কিন্তু কথা দিচ্ছি, একসঙ্গে আমরা অনেকটা পথ হাঁটব।’
শুরু থেকেই পোশাকেও জেসিন্ডা থেকেছেন নির্মোহ। নিজেদের সংস্কৃতির বাইরে গিয়ে মুসলিম কমিউনিটিতে হাজির হয়েছেন হিজাব পরিধান করে। গত মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) জেসিন্ডা যেন হৃদয়ের জানালা খুলে দিয়েছেন। গত ১৫ মার্চের নৃশংসতার স্মরণে সংসদের বিশেষ অধিবেশনে জেসিন্ডা তাঁর বক্তব্য শুরু করেন আরবিতে ‘আসসালামু আলাইকুম (অর্থ : আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক)’ বলে।
শুধু তা-ই নয়, এদিন নিউজিল্যান্ডে বসবাসকারী মুসলিম ছাড়াও অন্য ধর্মের অনুসারীদের সংসদে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধিরা নিজ ধর্মের বেশে সংসদে প্রবেশ করেন। পরে প্রথমে মুসলিমদের জন্য সংসদে নামাজের ব্যবস্থা করে দেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন। এরপর বাকি ধর্মের অনুসারীরাও প্রার্থনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী উঠে গিয়ে সংসদে আসা মুসলিমদের সঙ্গে গত ১৫ মার্চ মসজিদে হতাহতের ঘটনায় সমবেদনা প্রকাশ করেন। মুসলিম নারীদের বুকে টেনে নেন।
এদিকে নিউজিল্যান্ডের মসজিদে হামলার পরপরই দেশটির বিদ্যমান অস্ত্র আইন পরিবর্তনের ঘোষণা দেওয়া দিয়েছেন তিনি। বর্তমানে যে কেউ অস্ত্র কিনতে পারে। বয়স ১৬ বছর হলেই এ লাইসেন্স দেওয়া হয়। একবার লাইসেন্স হাতে পেলে একজন ব্যক্তি একাধিক অস্ত্র কিনতে পারে। এ নিয়ে দেশটির গণমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা আছে। তবে আশার কথা হলো, নিউজিল্যান্ডের মসজিদে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অস্ত্র আইনে সংশোধন আনা হচ্ছে। ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পরই এ আইন সংস্কারের কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন। সব কিছু মিলিয়ে হামলা-পরবর্তী নিউজিল্যান্ডের সরকার, বিশেষত প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা গোটা বিশ্বের কাছে প্রশংসনীয় হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার দিকে ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদে জুমার নামাজ আদায়রত মুসলিমদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় একজন শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী উগ্রপন্থী যুবক ব্রেনটন টারান্ট (২৮)। এর কিছু পরে ব্রেনটন কাছাকাছি লিনউড মসজিদে হামলা চালায় সে। দুটি হামলায় পাঁচ জন বাংলাদেশিসহ ৫০ জন নিহত ও আরও ৫০ জন আহত হয়। হামলার কিছুক্ষণ পরই ব্রেনটনকে আটক করে পুলিশ।
কেআই/
আরও পড়ুন