এক নজরে ভারতের লোকসভা নির্বাচন
প্রকাশিত : ১৪:৫৮, ১১ এপ্রিল ২০১৯ | আপডেট: ১০:৪০, ২৫ এপ্রিল ২০১৯
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপ শুরু হয়েছে আজ বৃহস্পতিবার। এবার সাত দফায় ভোট হবে। দেশটির এই সপ্তদশ নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হবে আগামী ২৩ মে। লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে সঙ্গে অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, সিকিম এবং অরুণাচল প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ভারতের সংসদীয় রাজনীতির ইতিহাসে এত বড় নির্বাচন এর আগে আর কখনও হয়নি। কাল এক দফায় অন্ধ্রপ্রদেশ, সিকিম এবং অরুণাচল প্রদেশের বিধানসভায় ভোট হবে। ওড়িশায় বিধানসভা ভোট হবে চার দফায়। এবারের লোকসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন দেশের প্রায় ৯০ কোটি ভোটার। গতবারের থেকে এবার ভোটারের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৯ শতাংশ।
১৩ কোটি নতুন ভোটার এবার নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। তবে ২০১৪ সালে নতুন ভোটারের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল।
ভারতীয় ভোটারদের দুই-তৃতীয়াংশের বয়স ৩৫ বা তার থেকে কম। এবারের নির্বাচনে ডিজিটাল মিডিয়ার প্রভাব খুবই বেশি। ২০১৪ সালে দেশের ৫৪৩ টি আসনের মধ্যে ২৮২ টিতে জিতে সরকার করে বিজেপি। পরাজিত হয় কংগ্রেস। জনসংখ্যার দিক থেকে দ্বিতীয় এবং আয়তনের দিক থেকে সপ্তম ভারতের ভোট অংশ নিচ্ছে ২ হাজারটি দল, প্রার্থীর সংখ্যা প্রায় ৮ হাজার।
লোকসভা নির্বাচনের ভোট গণনা কেন্দ্রের সংখ্যা
এবার দেশটির প্রায় দশ লাখেরও বেশি গণনা কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হবে শুধু ভারতে নয় গোটা বিশ্বের হিসাবে এটা একটি রেকর্ড। মোট ১১ লাখ ইভিএমে নিজেদের মত জানাবেন ভোটাররা। এবারের নির্বাচনে ভি ভি প্যাট ও থাকছে।
কারা ভোট দিতে পারবেন
নির্বাচন কমিশনের হিসাব বলছে, প্রায় ৯০ কোটি ভোটার এবার ভোট দেবেন। এর মধ্যে নতুন ভোটার সংখ্যা প্রায় ১৩ কোটি তবে ২০১৪ সালে নতুন ভোটার সংখ্যা ছিল ২৭ কোটিরও বেশি।
লোকসভা নির্বাচনে প্রথম ভোট
১৮- ১৯ বছর বয়স এমন ভোটার সংখ্যা দেড় কোটির কাছাকাছি।
আদার্স ক্যাটাগরির ভোট
রূপান্তরকামীদের এই ক্যাটাগরিতে রাখা হয় এবার রূপান্তরকামী ভোটারের সংখ্যা ৩৮ হাজারেরও বেশি।
লোকসভা নির্বাচনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দল
এক হাজার ৮৪১টি রাজনৈতিক দল এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।
ভোটের খরচ
বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে জানা গেছে এবার ভোটের খরচ প্রায় ৫০০ বিলিয়ন।
লোকসভা নির্বাচনের আদর্শ আচরণ বিধি
ভোট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই লোকসভা নির্বাচনের আদর্শ আচরণ বিধি লাগু হয়ে গেছে এমতাবস্থায় সরকার কোনও নতুন প্রকল্পের ঘোষণা করতে পারে না।
কবে কবে ভোট ?
এপ্রিলের ১১, ১৮, ২৩, ২৯ তারিখ ভোট হবে। মে মাসের ৭ , ১২ এবং ১৯ তারিখেও ভোট হবে।
প্রথম দফা (১১ এপ্রিল)
১. অন্ধ্রপ্রদেশ: ২৫
২. অরুণাচল প্রদেশ: ২
৩. আসাম: ৫
৪. বিহার: ৪
৫. ছত্রিশগড়: ১
৬. জম্মু ও কাশ্মীর: ২
৭. মহারাষ্ট্র : ৭
৮. মণিপুর: ১
৯. মেঘালয়: ২
১০. মিজোরাম: ১
১১. নাগাল্যান্ড: ১
১২. ওড়িশা: ৪
১৩. সিকিম: ১
১৪. তেলেঙ্গানা: ১৭
১৫. ত্রিপুরা: ১
১৬. উত্তরপ্রদেশ: ৮
১৮. উত্তরাখণ্ড: ৫
১৯. পশ্চিমবঙ্গ: ২
২০. আন্দামান: ১
২১. লাক্ষাদ্বীপ: ১
দ্বিতীয় দফা (১৮ এপ্রিল)
১. আসাম: ৫
২. বিহার: ৫
৩. ছত্তিশগড়: ৩
৪. জম্মু ও কাশ্মীর: ২
৫. কর্নাটক: ১৪
৬. মহারাষ্ট্র: ১০
৭. মণিপুর: ১
৮. ওড়িশা: ৫
৯. তামিলনাড়ু: ৩৯
১০. ত্রিপুরা: ১
১১. উত্তরপ্রদেশ: 8
১২. পশ্চিমবঙ্গ: ৩
১৩. পন্ডিচেরী: ১
তৃতীয় দফা (২৩ এপ্রিল)
১. আসাম: ৪
২. বিহার: ৫
৩. ছত্তিশগড়: ৭
৪. গুজরাট: ২৬
৫. গোয়া: ২
৬. জম্মু ও কাশ্মীর: ১
৭. কর্নাটক: ১৪
৮. কেরালা: ২০
৯. মহারাষ্ট্র: ১৪
১০. ওড়িশা: ৬
১১. উত্তরপ্রদেশ: ১০
১২. পশ্চিমবঙ্গ: ৫
১৩. দাদরা নগর হাভেলী: ১
১৪. দমন দিউ: ১
চতুর্থ দফা (২৯ এপ্রিল)
১. বিহার: ৫
২. জম্মু কাশ্মীর: ১
৩. ঝাড়খণ্ড: ৩
৪. মধ্যপ্রদেশ: ৬
৫ মহারাষ্ট্র: ১৭
৬. ওড়িশা: ৬
৭. রাজস্থান: ১৩
৮. উত্তরপ্রদেশ: ১৩
৯. পশ্চিমবঙ্গ: ৮
পঞ্চম দফা (৭ মে)
১. বিহার: ৫
২. জম্মু কাশ্মীর: ২
৩. ঝাড়খণ্ড: ৪
৪. মধ্যপ্রদেশ: ৭
৫. রাজস্থান: ১২
৬. উত্তরপ্রদেশ: ১৪
৭. পশ্চিমবঙ্গ: ৭
ষষ্ঠ দফা (১২ মে )
১. বিহার: ৮
২. হরিয়ানা: ১০
৩. ঝাড়খণ্ড: ৪
৪. মধ্যপ্রদেশ: ৮
৫. উত্তরপ্রদেশ: ১৪
৬. পশ্চিমবঙ্গ: ৮
৭. দিল্লি: ৭
সপ্তম দফা (১৯ মে)
১. বিহার: ৮
২. ঝাড়খন্ড: ৩
৩. মধ্যপ্রদেশ: ৮
৪.পাঞ্জাব: ১৩
৫. পশ্চিমবঙ্গ: ৯
৬. চন্ডিগড়: ১
৭. উত্তরপ্রদেশ: ১৩
৮. হিমাচল প্রদেশ: ৪
ইস্তেহারে কাশ্মীরিদের বিশেষ অধিকার প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাছাড়া কৃষকদের রোজগার দ্বিগুণ করার কথাও বলা আছে ইস্তেহারে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এবং রাজনাথ সিং ইস্তেহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মোদি বলেন, ‘জাতীয়তা বোধ আমাদের অনুপ্রেরণা। দুর্বলকে শক্তিশালী করা আমাদের লক্ষ্য এবং সুশাসন আমাদের মন্ত্র।’ ইস্তেহারে রাম মন্দির নির্মাণের কথাও বলেছে বিজেপি। মোদি আরও বলেন, সমস্ত দলই ইস্তেহার প্রকাশ করবে। কিন্তু রাজনাথ সিং জি দীর্ঘ দিন ধরে পরিশ্রম করে এই ইস্তেহার প্রকাশ করেছেন। এটা এমন একটা ইস্তেহার যা প্রতিফলিত হবে। আমাদের দেশ একটি লক্ষ্যকে সামনে রেখে এগিয়ে যাবে।
লোকসভা নির্বাচনের আগে গরিবদের জন্য নূন্যতম রোজগারের প্রতিশ্রুতি দিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। তিনি জানালেন, দেশের সবচেয়ে গরিব মানুষদের মধ্যে ২০ শতাংশ মানুষের জন্য বছরে ৭২ হাজার টাকা রোজগার সুনিশ্চিত করা হবে। কংগ্রেস সভাপতি বলেন, টাকা সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবে। আর এই প্রকল্পের ফলে ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্র সীমা বাইরে চলে আসবে বলে মনে করেন কংগ্রেস সভাপতি। তার কথায়, আমরা দীর্ঘ দিন ধরে চিন্তা ভাবনা করে বুঝেছি গরিব মানুষের জন্য নূন্যতম রোজগারের ব্যবস্থা করা সম্ভব। আমরা মানরেগার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। করেছি। এবার আমরা গরিব মানুষকে সুবিচার পাইয়ে দেব। তার মতে, এ ধরনের ভাবনা ঐতিহাসিক, প্রচণ্ড শক্তিশালী এবং বহুমুখী। তার দাবি, শুধু ভারত নয় বিশ্বের আগে কোথাও এমন কোনও ভাবনা কেউ ভাবেনি। দলের ইস্তেহারে এই বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিয়েছে কংগ্রেস।
সূত্র: এনডিটিভি
একে//
আরও পড়ুন