ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

আসঞ্জ দূতাবাসে গুপ্তচরবৃত্তি করছিলেন: ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট

প্রকাশিত : ১৫:২৬, ১৫ এপ্রিল ২০১৯ | আপডেট: ১৫:৩৬, ১৫ এপ্রিল ২০১৯

লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসকে ‘গুপ্তচরবৃত্তির কেন্দ্র’ হিসেবে ব্যবহার করছিলেন জুলিয়ান আসঞ্জ। ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনো এ কথা বলেন। উইকিলিকসের সহ-প্রতিষ্ঠাতার আশ্রয় বাতিল করার সিদ্ধান্তের পেছনে অন্য কোনো দেশের ইন্ধন নেই বলেও জানান তিনি।

ব্রিটিশ পত্রিকা ‘দ্য গার্ডিয়ান’কে প্রেসিডেন্ট মোরেনো বলেন,ইকুয়েডরের সাবেক সরকার অন্য রাষ্ট্রের কার্যক্রমে ‘হস্তক্ষেপ’ করার উদ্দেশ্যে তাদের দূতাবাসের ভেতরে সহায়তা প্রদান করতো।

আসঞ্জে’র আইনজীবী একুয়েডরের বিরুদ্ধে ‘যাচ্ছে-তাই অভিযোগ’ আনার অভিযোগ তুলেছেন।

২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসা প্রেসিডেন্ট মোরেনো দূতাবাসে আসঞ্জের সাত বছরের আশ্রয় বাতিল করার কারণ সম্পর্কে বলেছেন, ‘অস্থিতিশীলতা তৈরি করার যে কোনো প্রচেষ্টাই একুয়েডরের জন্য নিন্দনীয়, কারণ আমরা একটি সার্বভৌম দেশ এবং আমরা অন্যান্য দেশের রাজনীতির সম্মান করি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আমাদের বাড়ি - যেই বাড়ির দরজা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে - সেটিকে গুপ্তচরবৃত্তির কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করতে দিতে পারি না।’

প্রেসিডেন্ট মোরেনো ইকুয়েডরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জুলিয়ান আসঞ্জের স্বাস্থ্যের খারাপ অবস্থা সম্পর্কে সেদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়া পাওলা রোমো’র মন্তব্যেরও প্রসঙ্গ টানেন।

আসঞ্জের আইনজীবী জেনিফার রবিনসন ব্রিটিশ টেলিভিশন চ্যানেল স্কাই’য়ে এক অনুষ্ঠানে এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।

রবিনসন বলেন, ‘দূতাবাসের ভেতরে ব্রিটিশ পুলিশকে ঢুকতে দেয়ার বেআইনি এবং বিস্ময়কর সিদ্ধান্তকে ন্যায্যতা দিতে একুয়েডর গত কয়েকদিনে কিছু গর্হিত অভিযোগ এনেছে।’

তিনি আরো বলেন, আসঞ্জ যে সন্দেহ করছিলেন যে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে প্রত্যর্পণ করা হতে পারে, তা আরো ঘনীভূত হয়েছে এই সপ্তাহে তার বিরুদ্ধে আনা পেন্টাগনের কম্পিউটারে হ্যাক করার অভিযোগ প্রকাশিত হওয়ার পর।

২০১২ সালে একুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নিয়ে জামিনের শর্ত ভঙ্গ করায় ৪৭ বছর বয়সী আসঞ্জ ১২ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডের শাস্তি পেতে পারেন।

সুইডেনের হাতে প্রত্যর্পণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে হেরে গিয়ে ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আসঞ্জ। সুইডেনে ধর্ষণসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়েছে আসঞ্জের বিরুদ্ধে।

লন্ডনে ইকুয়েডর-এর রাষ্ট্রদূত বৃহস্পতিবার স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে দূতাবাসে আমন্ত্রণ জানিয়ে জুলিয়ান আসঞ্জকে তাদের হাতে তুলে দেন। এর আগে একুয়েডর সরকার আসঞ্জ-এর রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিল করে। 

ইকুয়েডর-এর প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনো বলেছেন, জুলিয়ান আসঞ্জ-এর আচার-ব্যবহারের কারণে তাদের ধৈর্যের সীমা একেবারে শেষ প্রান্তে এসে ঠেকেছে।

সম্প্রতি ভ্যাটিকান সম্পর্কিত কিছু দলিলপত্র ফাঁস করে দেবার বিষয়টি উল্লেখ করেন ইকুয়েডর-এর প্রেসিডেন্ট। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে এসব দলিলপত্র ফাঁস করা হয়।

ইকুয়েডর-এর প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এসব কাগজপত্র ফাঁস করার মাধ্যমে বিশ্ব নিশ্চিত হয়েছে যে উইকিলিকস-এর সাথে তার এখনো সম্পর্ক আছে এবং অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তারা হস্তক্ষেপ করছে।’

ইকুয়েডর-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটির সংসদে যে বক্তব্য দিয়েছেন সেখানেও তিনি বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। সে বক্তব্যের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান বলেছে, আসঞ্জ দূতাবাসের ভেতরে স্কেটবোর্ডিং করতেন এবং ফুটবল খেলতেন। এ নিয়ে তিনি দূতাবাসের কর্মকর্তাদের অবজ্ঞা করেছেন।

ইকুয়েডর দূতাবাস সাত বছর তাকে আশ্রয় দিলেও জুলিয়ান আসঞ্জ কোন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেন না। বরং ইকুয়েডর দূতাবাসের কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে তার উপর নজরদারী করছেন।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

এমএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি