ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪

ভারতে লোকসভা নির্বাচন

‘মন ঠিক করে ফেলেছে দেশ’

প্রকাশিত : ১০:৪৭, ২০ এপ্রিল ২০১৯

চলছে দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বলছেন, দেশের লোক মনস্থির করে ফেলেছেন, তারা মোদিকে ক্ষমতায় ফেরাবেন। অন্যদিকে, কর্নাটকে প্রচারে গিয়ে রাহুল গান্ধী শুক্রবার দাবি করলেন, দেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন মোদিকে তারা হটাবেন। এবং লোকসভা ভোটের পর কংগ্রেসই সরকার গড়বে দিল্লিতে।

কংগ্রেসের সরকারের কথা বললেও মোদিকে হটানোর কাজটা যে এককভাবে তার দলই করবে- এমন দাবি অবশ্য করেননি রাহুল। উত্তর কর্নাটকে রায়চুরের সভায় কংগ্রেস সভাপতি শুক্রবার স্বীকার করেন, বিজেপি-বিরোধী অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলোও মোদিকে হটানোর কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নিচ্ছে।

রাহুলের কথায়, মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন, ২০১৯-এ তারা দিল্লি থেকে মোদিকে হটাবেন। কর্নাটকে কংগ্রেস এবং জেডিএসকে, অন্ধ্রপ্রদেশে চন্দ্রবাবু নায়ডুকে এবং দেশের অন্যত্র যারাই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ছেন, তাদেরই জেতাবেন বলে মানুষ মনস্থির করে ফেলছেন।

কর্নাটকে আসার আগে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার গুজরাটে প্রচার করেছেন রাহুল। সেই প্রসঙ্গ টেনে রায়চুরের সভায় বলেন, গুজরাত হয়ে আসছি। আমি আপনাদের বলছি, গুজরাটের মানুষ মন ঠিক করে ফেলেছেন। মোদির রাজ্যে কংগ্রেসের পক্ষে চোরা স্রোত বইছে।

কংগ্রেস সভাপতির দাবি, গুজরাটের মানুষ ফুঁসছেন। তারা বলছেন, দেশ তো দূরের কথা, নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের জন্যও কিছু করেননি।... শুধু লাখ লাখ একর জমি ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিয়েছেন।       

বালাকোটে বিমান হানা ও সার্জিকাল স্ট্রাইকের প্রসঙ্গ টেনে মোদি সমানে তার সরকারের কঠোর ও সাহসী সিদ্ধান্তের জন্য বুক ঠুকে চলেছেন। কংগ্রেস বা ‘মহাভেজাল’ জোটের দুর্বল (মজবুর) সরকার এলে দেশের সুরক্ষা বিপন্ন হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন রোজ।

রাহুল এর জবাবে বলেন, মোদি দেশের সুরক্ষার কথা বলছেন! কিন্তু কোটি কোটি যুবককে কর্মহীন করে দিয়ে দেশ মজবুত হতে পারে না। প্রতিদিন দেশে ২৭ হাজার নতুন বেকার যোগ হচ্ছে মোদির আমলে।

কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে কী কী করতে চায়, সে কথাও তুলে ধরছেন রাহুল। গুজরাটের বাজিপুরার সভায় তিনি আশ্বাস দেন, কংগ্রেসের ন্যূনতম আয় যোজনা তথা ন্যায় প্রকল্পে কর্মসংস্থান হবে। নোটবন্দি এবং জিএসটির ব্যর্থ বাস্তবায়নে বিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতিকেও চাঙ্গা করবে কংগ্রেসের এই প্রকল্প।

তবে এটা স্পষ্ট, একা সরকার গড়তে না পারলে ন্যায়ের জন্য বাড়তি কিছুটা পথ দৌড়তে হবে কংগ্রেসকে। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, এনডিএ বা ইউপিএ-র নয়, এবার সরকার হবে নতুন সমীকরণে। এমন ক্ষেত্রে দলগুলোকে বসে অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি তৈরি করতে হবে।

প্রশ্ন করা হলেও মমতা অবশ্য কংগ্রেসের ন্যায় প্রকল্প নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে রাজনীতির লোকজন বলছেন, মোদিকে হারানোই শেষ কথা নয়, অন্যান্য দলের সঙ্গে মিলে সরকার গড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে, ন্যায় প্রকল্পকে অভিন্ন কর্মসূচিতে রাখার জন্য দর কষাকষিতে নামতে হবে কংগ্রেসকে।

কারণ ন্যায় প্রকল্প রূপায়ণে অর্থের জোগান কোথা থেকে আসবে, সেই প্রশ্ন তুলছে বিজেপি শিবির। বিজেপি-বিরোধী অন্য দলগুলো প্রকাশ্যে কিছু না-বললেও, একই প্রশ্ন রয়েছে তাদের ভেতরেও। রাহুল গতকাল এই বিষয়ে ভরসা জোগানোর চেষ্টা করেন বাজিপুরার সভায়। জানান, কংগ্রেসের যতজন অর্থনীতিবিদ রয়েছেন, তাদের কাছে তিনি জানতে চেয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে গরিবদের কতটা বেশি দেওয়া সম্ভব। তারাই হিসাব কষে ওই ৭২ হাজার অঙ্কটি জানিয়েছেন। এটা আদৌ প্রত্যেকের ব্যাংক খাতায় ১৫ লাখ টাকা জমা করে দেওয়ার মতো মোদির ফাঁপা বুলি নয়।

রাহুল তাই জোর গলাতেই ন্যায়ের প্রচার চালাচ্ছেন প্রতিটি সভায়। এ দিনের সভাগুলোতেও নিয়ম করে বলেছেন, ‘চৌকিদার চোর।’ প্রশ্ন ছুড়েছেন, দেশের চৌকিদার যদি অনিল অম্বামীর পকেটে ৩০ হাজার কোটি টাকা ভরে দিতে পারেন, কংগ্রেসের সরকার এলে দেশের গরিব পরিবারগুলোকে বছরে ৭২ হাজার টাকা করে দিতে বাধা কোথায়?

সূত্র: আনন্দবাজার


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি