ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪

যেসব কারণে বিতর্কিত মোদি

প্রকাশিত : ১৫:২৪, ১২ মে ২০১৯ | আপডেট: ১৫:৩৬, ১২ মে ২০১৯

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে নেতিবাচকভাবে স্থান পেয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রচ্ছদে মোদিকে উপস্থাপন করা হয়েছে ভারতে বিভেদের প্রধান গুরু হিসেবে।

পত্রিকাটির ২০ মে সংখ্যার ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে ছাপা হয়েছে নরেন্দ্র মোদির ছবি। মোদির ওই ছবির দৃষ্টিতে বিষণ্ণতা, গলায় গেরুয়া চাঁদর দেখা যাচ্ছে। তার পাশে হেডলাইন- ‘ইন্ডিয়াজ ডিভাইডার ইন চিফ’ অর্থাৎ ভারতের বিভাজন বা বিভক্তির হোতা।

প্রচ্ছদে সাহিত্যিক আতিশ তাসের লিখেছেন মূল প্রবন্ধ। যার শিরোনাম, ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের দেশটি আরও পাঁচ বছর মোদি সরকারকে সহ্য করবে?’

তাসির তার প্রবন্ধে লিখেন, মোদির অর্থনৈতিক অলৌকিক কাজই কেবল সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়েছে, তিনি ভারতে বিষাক্ত ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের বায়ুমণ্ডল তৈরিতেও সাহায্য করেছেন।

প্রবন্ধে মোদিকে নিয়ে তিনি লেখেন, তিনি একটি মশীহ ছিলেন, ভবিষ্যতে খুব উজ্জ্বল হয়ে উঠছিলেন, এক অংশ হিন্দু পুনর্জাগরণ, দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনৈতিক কর্মসূচির এক অংশ। এখন তিনি কেবল একজন রাজনীতিবিদ যিনি পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন।

তবে দ্বিতীয় আরেকটি প্রবন্ধে ইয়ান ব্রেমার মোদিকে ভারতীয় অর্থনীতি সংস্কারের জন্য ইতিবাচক চরিত্র হিসেবে তুলে ধরেছেন।

পত্রিকাটিতে মোদীর অর্থনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে দ্বিতীয় একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-দেশের বেকার তরুণদের স্বনির্ভরতার স্বপ্ন দেখিয়ে ২০১৪-য় ভোট কুড়িয়েছিলেন মোদী। কিন্তু জানুয়ারিতে সরকারেরই এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বেকারত্বের হার ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ জায়গায় পৌঁছেছে।

টাইম পত্রিকার অভিযোগ, মোদি সরকারের পাঁচ বছরে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতা, উদার নীতি ও স্বাধীন সংবাদমাধ্যম-ভারতীয় রাষ্ট্রগঠনের তিনটি প্রধান সুরকেই নাকচ করে দেয়া হয়েছে।

টাইম পত্রিকায় প্রকাশিত এই প্রচ্ছদ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে ভারতীয় রাজনীতিতে। বিভিন্ন জায়গায় এ নিয়ে চলছে নানা সমালোচনা। যার প্রভাব পড়তে পারে ভারতের লোকসভা নির্বাচনে।

মোদি জমানায় অর্থাৎ ২০১৪ সালের পর থেকে আমেরিকার কোনো ম্যাগাজিনে এ ধরনের মোদিবিরোধী লেখা স্থান পায়নি। আমেরিকার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কই বজায় ছিল মোদি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় বসার পর থেকেই।

এর আগে নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল ২০১২ সালে। তখন তিনি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী। সেই প্রতিবেদনে নরেন্দ্র মোদিকে এক বিতর্কিত চরিত্র বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।

বলা হয়েছিল, তিনি উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং কূটরাজনীতিক। আবার ২০১৯-এ ভারতে যখন ভোটযুদ্ধ নিয়ে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে, তখনই এ ধরনের এক প্রতিবেদন এবার মোদির ক্ষমতায় ফেরা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিল।

এরআগে, ২০১৪ তে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পরের বছর টাইম পত্রিকার প্রচ্ছদে জায়গা পেয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। ২০১২ সালে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীনও একবার তাকে নিয়ে প্রচ্ছদ ছাপা হয়েছিল। কিন্তু সরাসরি এমন আক্রমণ এই প্রথম।


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি