ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪

ভারতের নির্বাচনে কি এককভাবে সরকার গঠন সম্ভব?

প্রকাশিত : ২০:১৮, ১৭ মে ২০১৯

ভারতের এবার কেন্দ্রীয় সরকার গঠনে রাজ্যভিত্তিক ছোট ছোট দলগুলোর বড় ভূমিকা থাকবে বলে মনে করছেন অনেকেই। এবার সরকার গঠন করার জন্য রাজ্যের আঞ্চলিক দলগুলোর সহায়তা ছাড়া বিজেপি জোট বা কংগ্রেস জোট কোনো দলই সরকার এককভাবে গঠন করতে পারবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিজেপির নরেন্দ্র মোদি যদি আবার সরকার গঠন করতে চায় তাহলে তাদের ছোট দলগুলোর সহায়তার প্রয়োজন হবে। আর কংগ্রেস যদি সরকার গঠন করতে চায় তাহলে তাদেরও আঞ্চলিক দলগুলোর সহায়তার প্রয়োজন হবে।

তাই বিজেপি বা কংগ্রেসের সরকার গঠনের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস, কলকাতার অরবিন্দ্র কেজরিওয়াল, বিহারে লালু প্রসাদ যাদব, উত্তরপ্রদেশে তেমনই মায়াবতী বা মুলায়ম সিং যাদব এরা কেন্দ্রীয় সরকার গঠনে বড় ভূমিকা রাখবে বলে জানা গেছে।

নির্বাচনি প্রচারণায় এই নেতাদের ছবিও ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। তারা আঞ্চলিকভাবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে ইতোমধ্যে। তারা কেন্দ্রীয় সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। তাই আঞ্চলিক এই ছোট দলগুলোর গুরুত্বও বেড়েছে বিজেপি বা কংগ্রেসের কাছে।

জানা যায়, ১৯৪৯ সালে দক্ষিণ ভারতের শহর মাদ্রাজে যেটার এখনকার নাম চেন্নাই – সেখানেই - আন্নাদুরেই ওই বছরে তৈরি করেছিলেন দ্রাবিঢ় মুন্নেত্রা কাজাগম বা ডি এম কে দল। সেটাই ছিল ভারতের প্রথম আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল। যদিও তার বেশ কিছু আগে থেকেই ব্রিটিশ রাজ আর তামিল ব্রাহ্মণ্যবাদের বিরুদ্ধে তথাকথিত নিম্নবর্গের মানুষদের প্রতিবাদ জানানোর জন্য প্রথমে জাস্টিস পার্টি আর তারপরে দ্রাবিঢ় কাজাগম নামে দুটি সংগঠন তৈরি হয়েছিল।

কিন্তু আঞ্চলিক আশা-আকাঙ্খাকে তুলে ধরার জন্য রাজনৈতিক দল প্রথম গড়েছিলেন আন্নাদুরেই – যিনি এত দশক পরে এখনও আন্না বা বড় দাদা নামে জনপ্রিয়। মানুষ চেয়েছেন যে রাজ্যভিত্তিক দলগুলোকেই সমর্থন করলে দিল্লিতে বার্তা পৌঁছান যাবে।

সেই সময়েই শুরু হয়েছিল দিল্লির বড়দাদা সুলভ ব্যবহার আর হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, যা আরও পরে ছড়িয়ে পড়ে দক্ষিণ ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলিতেও।

রাধাকৃষ্ণানের কথায়, “শুরুটা ছিল ব্রাহ্মন্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই। তারপরে সেটা হয়ে দাঁড়ায় দিল্লির বড়দাদা সুলভ আচরণ – যেমন হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করে সেটা তামিলদের ওপরে চাপিয়ে দেওয়া বা তামিলদের স্বার্থপূরণে দিল্লির ব্যর্থতা – এভাবেই ডি এম কে-র শুরু। আর তারপরেও তো অনেক ইস্যুতে বঞ্চনা সহ্য করতে হয়েছে – এখনও হয়।“

অন্যদিকে নিজেদের আঞ্চলিক এজেন্ডা পূরণ করতে তামিলনাডুর ডি এম কে বা তার প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী এ আই এ ডি এম-কে হোক, মহারাষ্ট্রের শিবসেনা বা তাদের বিরোধী এন সি পি হোক বা হিন্দি বলয়ে সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি, রাষ্ট্রীয় জনতা দল হোক – সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রতিটা রাজ্যভিত্তিক দলই কোনও না কোনও জাতীয় দলের জোটে থাকছে।

তৃণমূল কংগ্রেস সমাবেশ

তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার সেই প্রচেষ্টার প্রথম দিনে – দিল্লির রামলীলা ময়দানে আন্না হাজারে নিজেও যেমন আসেননি, তেমনই জনসমাগম হয়েছিল মাত্রই কয়েকশো।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক সব্যসাচী বসুরায়চৌধুরী অবশ্য ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন যে জাতীয় স্তরে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার সময়টা ঠিক মতো বাছতে পারেননি তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।

তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী প্রায় প্রতিটা জনসভাতেই দাবি করে চলেছেন যে তাঁর দলই হবে পার্লামেন্টে তৃতীয় বৃহত্তম শক্তি আর সরকার বানানোর চাবিকাঠিও থাকবে তাঁদেরই হাতে।

 এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি