মানবতা নাড়িয়ে দিলো এক মর্মস্পর্শী ছবি
প্রকাশিত : ০০:১০, ২৭ জুন ২০১৯
আইলান কুর্দির কথা মনে আছে অনেকের। তুরস্কের উপকূলে পাঁচ বছর বয়সী ওই শিশুর মরদেহ পড়ে থাকার ছবি বিশ্বজুড়ে তীব্র আলোড়ন তুলেছিল। সিরিয়া থেকে আসা একদল শরণার্থী তুরস্ক হয়ে গ্রিসের কস্ দ্বীপে যাওয়ার সময় নৌকাডুবিতে আইলান মারা যায়। আইলানের নিথর দেহ ভেসে আসে সৈকতে। আর ওই ছবি নিয়ে সেই সময় ব্যাপক মিডিয়ায় আলোচনা হয়।
ইউরোপের শরণার্থী সংকট কতটা গভীর তা এই ছবিটিই জানান দিয়েছিল, কাঁদিয়েছিল বিশ্ব মানবতাকে।।
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন প্রত্যাশী এক বাবা তার শিশু কন্যাকে নিয়ে নদী পার হওয়ার সময় ডুবে মারা গেছেন। এই ছবি ছড়িয়ে পড়তেই বিশ্ব মিডিয়ায় ফের আলোড়ন উঠেছে।
ছবিতে দেখা গেছে, বাবা ও ছোট্ট শিশুটির নিথর দেহ উপুড় হয়ে নদীর তীরে পানির মধ্যে পড়ে আছে। শিশুটির পরনে লাল রঙের প্যান্ট, পায়ে জুতা। বাবা আর মেয়ের মাথার কিছু অংশ কালো কাপড়ে ঢাকা। শিশুটির একটি হাত তখনও বাবার কাঁধ জড়িয়ে ধরে আছে।
যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাতে অভিবাসন প্রত্যাশীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেমন বিপদজনক পথ পাড়ি দিতে হয় সোমবারের হৃদয়বিদারক এই ছবিটিই তা জানান দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত সঙ্কট এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিষ্ঠুর অভিবাসন নীতির জলন্ত প্রমাণই যেন এই ছবিটি।
সিএনএন জানিয়েছে, অস্কার আলবার্টো মার্টিনেজ রিও গ্রান্ডো নদী সাঁতরে তার স্ত্রীর কাছে আসছিলেন। এসময় তার ২৩ মাস বয়সী শিশু কন্যা ভ্যালেরিয়া তাকে দেখে পানিতে ঝাঁপ দেয়।
মর্মস্পর্শী এই ছবিটি তুলেছেন মেক্সিকান ফটোগ্রাফার জুলিয়া লে ডাক। তিনি মেক্সিকান সংবাদপত্র লা জর্নাদায় লিখেছেন, মেয়েকে বাঁচাতে বাবা প্রাণপন চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু প্রচণ্ড স্রোতে তাদের এই করুণ পরিণতি হয়।
আলবার্টোর স্ত্রী তানিয়া লা জর্নাদাকে বলেন, চোখের সামনেই আমি আমার স্বামী ও বাচ্চাকে স্রোতে ডুবে যেতে দেখেছি।
পরে তাদের নিথর দেহ রিও গ্রান্ডে নদীর মেক্সিকোর মাতামোরোস অংশে ভেসে ওঠে।
আলবার্টো এল সলভাদরের বাসিন্দা। তিনি সোমবার স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে মেক্সিকান বর্ডার দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাওযার চেষ্টা করছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর জন্য গত দুই মাস ধরে পরিবারটি মাতামোরোসের একটি শরণার্থী শিবিরে অপেক্ষা করছিলো।
তীব্র গরমের মধ্যে দীর্ঘ অপেক্ষার পরও বর্ডার পার হতে না পারায় তারা সিদ্ধান্ত নেন, নদী পার হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করবেন।
আলবার্টোর স্ত্রী জানিয়েছেন, তারা মেক্সিকান সরকারের কাছ থেকে মানবিক ভিসা পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন