কংগ্রেসের নতুন নেতৃত্বে আলোচনায় যারা
প্রকাশিত : ১১:০৯, ৪ জুলাই ২০১৯ | আপডেট: ১৯:৫৯, ৪ জুলাই ২০১৯
লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির দায় মাথায় নিয়ে শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন রাহুল গান্ধী। বুধবার এ টুইটবার্তায় তিনি পদত্যাগের বিষয়টি প্রকাশ করেন।
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দলটির নতুন নেতা নির্বাচন করা হবে বলে কংগ্রেস সূত্র জানিয়েছে।
রাহুলের পদত্যাগে ঐতিহ্যবাহী দলটির ক্ষমতায় কে আসছেন তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। তবে গান্ধী পরিবারের বাইরে যে হবে তা ভালোভাবেই অনুমান করা যাচ্ছে।
এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ঐতিহ্যবাহী দলটির হাল ধরতে এগিয়ে আছেন মহারাষ্ট্রের সাবেক মূখ্যমন্ত্রী ও সাবেক ইউনিয়ন প্রধান সুশীল কুমার সিন্ধেই (৭০)।
বলা হচ্ছে, দলিত সম্প্রদায়ের এ নেতা গান্ধী পরিবারে বেশ আস্থাভাজন। এ বছরের শেষ দিকে মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। যেখানে সিন্ধেইয়ে ভরসা রাখতে চান গান্ধী পরিবার।
সিন্ধেইয়ের পরই যিনি কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার দৌঁড়ে এগিয়ে আছেন তিনি হলেন মল্লিকার্জুন খারগে (৭৬)। যিনি গত বছর কংগ্রেস নেতা হিসেবে ছিলেন।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে কয়েক দশকের ইতিহাস পাল্টে দিয়ে এই প্রথম মোদির কাছে হেরে যান এই কংগ্রেস নেতা।
গতকাল বুধবার এক টুইটবার্তায় পদত্যাগের কারণ হিসেবে রাহুল বলেন, কংগ্রেসের দায়িত্ব পালন করতে পারাটা অনেক সম্মান ও গর্বের। এ দলের আদর্শ ও মূল্যবোধ দেশ রক্ষার কাজে শক্তি জোগায়।
এবারের নির্বাচনে দলের সর্বোচ্চ পদে ছিলাম আমি, তাই পরাজয়ের দায় আমি এড়াতে পারিনা। তাই সরে দাঁড়ালাম। পাশাপাশি তিনি গান্ধী পরিবারের কাউকে নতুন নেতা হিসেবে নির্বাচন করার আহ্বান জানান।
রাহুল আরও বলেন, বিজেপির প্রতি আমার কোন ক্ষোভ নেই। তবে আমার শরীরের প্রতিটি সেল তাদের মতাদর্শের বিরোধিতা করে। নির্বাচনে বিষয়ও টেনে আনেন তিনি।
বলেন, কংগ্রেসকে শুধু একটি আদর্শের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়নি, গোটা ভারতের সমগ্র মেশিনারির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে। এর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে যে, ভারতের প্রাতিষ্ঠানিক নিরপেক্ষতা বলে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। প্রতিষ্ঠানে আরএসএসের মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা পাওয়ায় আমাদের গণতন্ত্র মৌলিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে বলেও মন্তব্য করেন।
এর আগে গত ২৩ মে ভারতে সাত দফা নির্বাচনের ভোটে ব্যাপকভাবে ভরাডু্বি হয় কংগ্রেস ও তার জোটের।
আর ভারতের পুরনো ইতিহাস পাল্টে টানা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসে এনডিএ জোট। মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) একার ৩০৩টি আসনের বিপরীতে কংগ্রেসের ভাগ্যে জুটেছে মাত্র ৫২টি আসন।
নির্বাচনের আগে কংগ্রেসে রাহুলের বোন প্রিয়াংকা গান্ধী যোগ দিলে নির্বাচনে ভাল ফলের আশা করা হলেও, মোদির কৌশলের কাছে ধরাশয়ী হয়ে যায় কংগ্রেস।
ফলে, এমন অবস্থায় নিজেকে দায়ী করে সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন রাহুল। কিন্তু কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত ছিল রাহুলের পদত্যাগ।
সবশেষ নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে বুধবার কংগ্রেসের পদ থেকে সরে দাঁড়ান রাহুল। তিনি বলেন, আমি আর কংগ্রেসের সভাপতি নই। তবে, দলের হয়ে সবসময় কাজ করার কথা জানান তিনি।
এর মধ্যদিয়ে নেহেরু-গান্ধী পরিবারের বাইরে যাচ্ছে তৃতীয়বারের মতো কংগ্রেসের নেতৃত্ব।
আই/
আরও পড়ুন