কাশ্মীর যেন এক জেলখানা
প্রকাশিত : ১৩:১৪, ১৬ আগস্ট ২০১৯ | আপডেট: ১৪:৫৩, ১৬ আগস্ট ২০১৯
ভারতের কাছ থেকে কাশ্মীরকে দেওয়া বিশেষ মর্যাদা তথা ৩৭০ ও ৩৫-ধারা প্রত্যাহারের পর সেখানকার অবস্থা এখন জেলখানার মতো। ভারতের কয়েকজন রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মী কাশ্মীরের নানা প্রান্ত ঘুরে এসে এই মন্তব্য করেছেন।
জানা গেছে, ওই রাজনৈতিক আর সামাজিক কর্মীরা কাশ্মীর থেকে ঘুরে বুধবার দিল্লিতে সেই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন।
পাঁচ দিনের সফর শেষে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘কাশ্মীর কেজড,’ অর্থাৎ খাঁচাবন্দি কাশ্মীর।
তারা জানায়, কাশ্মীরে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করারও পরিস্থিতি নেই। বিশেষ মর্যাদা বাতিলের ক্ষোভ যাতে সামনে না আসে, তার জন্য একদিকে রয়েছে কঠোর নিষেধাজ্ঞা, অন্যদিকে চলছে সংবাদমাধ্যমের ওপরে অঘোষিত নিয়ন্ত্রণ।
রাজধানী শ্রীনগরসহ রাজ্যের নানা প্রান্তে ঘুরেছেন তারা, সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে বুঝেছেন যে ৩৭০ ধারা বিলোপ নিয়ে একটা ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে মানুষের মধ্যে। কিন্তু সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ করার কোনো সুযোগ নেই।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ৬০০ রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে আটক করে রাখা হয়েছে। এছাড়াও শহরে বা গ্রামে যেখানেই তারা গেছেন, সেখানেই দেখেছেন তরুণ বা যুবক, এমনকি স্কুলছাত্রদের আটক করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে নিরাপত্তাবাহিনী মাঝরাতেও বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি চালিয়ে আটক করছে।
প্রতিনিধি দলটির একজন সদস্য ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নেত্রী মইমুনা মোল্লা জানান, ‘মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর সর্বোচ্চ আর দ্বিতীয় পর্যায়ের নেতাদের আটক করা হয়েছে। এছাড়া প্রায় প্রতিটি গ্রাম থেকেই বহু ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিবাদ বা বিক্ষোভ সংঘটিত করার দক্ষতা আছে, এমন লোকদেরই আটক করা হয়েছে। কত লোক যে জেলে আছে, কেউ জানে না।’
ওই দলেরই আরেক সদস্য অর্থনীতিবিদ জঁ দ্রঁজ বলেন, ‘শ্রীনগর হোক বা তার বাইরে, সব জায়গাতেই মানুষ ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, যেন একটা জেলখানায় তাদের রাখা হয়েছে। খুব বেশি প্রতিবাদ করতে পারছেন না মানুষ।’
তিনি বলেন, ‘সরকার নিষেধাজ্ঞা একটু শিথিল করলেই মানুষ প্রতিবাদ জানাতে বেরিয়ে পড়ছেন, তাই আবারও নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হয়ে যাচ্ছে। যেখানে কিছুটা প্রতিবাদ হয়েছে, সেখানেই ছররা গুলি চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। এজন্য হাসপাতালগুলোতে ছররা গুলিতে আহত এরকম বেশ কয়েকজনকে দেখা গেছে।’
এমএইচ/
আরও পড়ুন