অবশেষে ক্ষমা চাইলেন জাকির নায়েক
প্রকাশিত : ১৫:২৫, ২১ আগস্ট ২০১৯ | আপডেট: ১৭:১৭, ২২ আগস্ট ২০১৯
নিজের বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন ভারতের ইসলামি বক্তা ডা. জাকির নায়েক। সেইসঙ্গে তিনি নিজেকে অসাম্প্রদায়িক দাবি করে বলেন, তার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠদের মধ্যে বসবাসকারী হিন্দু ও চীনা সম্প্রদায়ের বিষয়ে উসকানিমূলক মন্তব্য করে শান্তি বিঘ্নিত করার অভিযোগে জাকির নায়েককে স্থানীয় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তার বিরুদ্ধে উত্তেজক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ আনা হয়।
‘পিস টিভির’ প্রতিষ্ঠাতা ও বিশিষ্ট উপস্থাপক জাকির নায়েক বলেন, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের থেকে মালয়েশিয়ার সংখ্যালঘু হিন্দুরা ১০০ গুণ বেশি অধিকার ভোগ করে।
এ মন্তব্য করার পরপরই তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন জাকির। এমনকি তাকে মালয়েশিয়া থেকে বহিষ্কারের দাবি উঠলে ‘তাকে বহিষ্কারের আগে চীনা মালয়েশীয়দের (মালয়েশিয়া থেকে) বহিষ্কার করা উচিত’ বলে মন্তব্য করে ফের বিতর্ক সৃষ্টি করেন তিনি। তবে এর পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমাও চান তিনি।
মঙ্গলবার জাকির নায়েকের বিবৃতির বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, কোনও ব্যক্তি বা সম্প্রদায়কে আঘাত করা কখনই জাকিরের উদ্দেশ্য ছিল না, এটা ইসলামের মূল তত্ত্বগুলোর পরিপন্থী এবং তিনি এই ভুল বোঝাবুঝির জন্য আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন।
এর আগেও একবার ৯/১১-এর সন্ত্রাসবাদী হামলাকে ‘ভেতরের ব্যাপার’ বলে চিহ্নিত করে বিতর্কে জড়ান জাকির নায়েক। এরপরেই ২০১৬ সালে ভারত ছেড়ে মুসলিম অধ্যুষিত মালয়েশিয়ায় চলে যান জাকির। যেখানে তাকে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেয় দেশটির তৎকালীন সরকার।
তারই জেরে গত বছরের জুলাই মাসে মালয়েশিয়ার কাছে জাকির নায়েককে প্রত্যার্পণের দাবি জানিয়ে অনুরোধ করে ভারত। তবে সে সময় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির বলেছিলেন, ‘যতক্ষণ তিনি কোনও সমস্যা তৈরি না করছেন’ ততক্ষণ তাকে প্রত্যার্পণের কথা ভাববে না তার সরকার।
এদিকে সম্প্রতি দেয়া জাকির নায়েকের উসকানিমূলক বক্তব্যে বেজায় চটেছে মালয়েশিয়ার সরকার। ভারতীয় এ ধর্মপ্রচারকের বক্তৃতার উপর নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে দেশটির সরকার। আগে সাতটি রাজ্যে তার বক্তৃতা নিষিদ্ধ থাকলেও এবার পুরো মালয়েশিয়ায় নিষিদ্ধ হলেন তিনি।
দেশটির পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন থেকে জাকির নায়েক আর মালয়েশিয়ায় বক্তৃতা দিতে পারবেন না।
মালয় মেইলের খবরে বলা হয়, সোমবার মালয়েশীয় পুলিশ সাম্প্রদায়িক স্পর্শকাতর মন্তব্যের বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। এমনকি বাতিল হতে পারে তার সেখানে বসবাসের অনুমতিও।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মাহাথির বলেছেন, এটা পুরোপুরি স্পষ্ট যে, জাকির নায়েক জাতিগত রাজনীতিতে উসকানি দিচ্ছেন। কেউ (ধর্ম) প্রচার করতেই পারেন, কিন্তু তিনি তা করছিলেন না। তিনি চীনাদের চীনে ফিরে যাওয়ার কথা এবং ভারতীয়দের ভারতে ফিরে যাওয়ার কথা বলে উসকানি দিচ্ছেন। আমার সরকার কখনও এ জাতীয় কথা বলেনি। এটা নিছক রাজনীতি।
অবশ্য এর আগে মালয় সরকার জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে অনিচ্ছুক বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু এবার ওই মুসলিম ধর্ম প্রচারকের বিরুদ্ধে বেশ কড়া হচ্ছে দেশটির সরকার।
মালয়েশিয়ার ৩ কোটি ২০ লাখ অধিবাসীর মধ্যে ৬০ শতাংশই মুসলিম। বাকি অংশটির মধ্যে অধিকাংশই হিন্দু, যারা হয় চীনা নয়তো ভারতীয় বংশোদ্ভূত। সূত্র-ইউএনবি।
এনএস/
আরও পড়ুন