বিক্ষোভে পুড়ছে চিলি, নিহত ৮
প্রকাশিত : ১৯:০৯, ২১ অক্টোবর ২০১৯
ল্যাটিন আমেরিকার দেশ চিলিতে টানা কয়েক দিন ধরেই অব্যাহতভাবে চলছে বিক্ষোভ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের মত ঘটনা। ইতিমধ্যে এসব ঘটনায় ৮ জন নিহত ও বহু লোক আহত হয়েছেন। গ্রেফতার করা করা হয়েছে শতাধিক বিক্ষোভকারীকে। এ নিয়ে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করার পর বিক্ষোভ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। শেষ পর্যন্ত তা সরকার পতনের দিকে মোড় নিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
যে ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে জনগণের এই বিক্ষোভ তা স্থগিত ঘোষণা করেছে সরকার। তবুও থামছে না চিলিবাসীর অসন্তোষ। তারা মনে করছে এটি সরকারের একটি কৌশল। তাই বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।
সোমবার (২১ অক্টোবর) বিক্ষোভের তৃতীয় দিনেই মৃত্যু হল কমপক্ষে এই ৮ জনের। অভিযোগ, আজ বিক্ষোভকারী ও পুলিশের সংঘর্ষের সময়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় সান্তিয়োগোর একটি সুপারমার্কেটে। ঘটনাস্থলেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান দু’জন। পরে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় আট জনে।
চিলির বর্তমান অবস্থা হঠাৎ করেই সৃষ্টি হয়নি। দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ এই বিক্ষোভ। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল এখানকার বাসিন্দাদের। এরই মধ্যে গত ৬ অক্টোবর মেট্রোরেলের ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা দেয় সরকার। তারপরই রাস্তায় নেমে জনগণ বিক্ষোভ করতে থাকে। এই বিক্ষোভ ক্রমেই বেগবান হচ্ছে।
৭০ লাখ জনগণের দেশ চিলি। এই দেশটি লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে ধনী দেশ। তারপর জীবনযাত্রার ব্যয়ের ঊর্ধ্বগতিতে অতিষ্ঠ হয়ে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছে চিলির জনগণ। সরকারও এই বিক্ষোভ দমনে কঠোর। ইতিমধ্যে জরুরি অবস্থা জারি করে ধর-পাকড় অব্যাহত রেখেছে। কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করছে এবং প্রায় দেড় হাজারের মতো লোককে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।
বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে চিলির সর্বত্র। গত শনিবার রাতে চিলির রাজধানীর একটি মার্কেটে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছে। এর পূর্বে বিক্ষোভকারীরা একটি পোশাক কারখানায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। রাস্তাঘাটে যখনই সরকারি যানবাহন পাচ্ছে তখনই আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে বিক্ষোভকারীরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, চিলিতে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক বিক্ষোভ এটি। কোনরকম ধামাচাপা দিয়ে সমাধান করার চেষ্টা হলে এই বিক্ষোভ ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। এমনকি সরকারের গদি নিয়েও টান শুরু হতে পারে। সূত্র- বিবিসি ও ওয়াশিংটন পোস্ট।
এনএস/
আরও পড়ুন