ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

এনআরসি নিয়ে চাপের মুখে বিজেপি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০০:০০, ২৯ নভেম্বর ২০১৯

জাতীয় নাগরিক তালিকা (এনআরসি) নিয়ে ঘরে ও বাইরে চাপে পড়েছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং বিভিন্ন মন্তব্য করছেন বিভিন্ন সময়। তিনি কখনও বলছেন, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) করলে মানুষের সুবিধা হবে। কখনও আবার বলছেন, এনআরসি কার্যকর করতে গেলে নাগরিকত্বের প্রশ্নে তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়তে হবে। 

তাঁর দল বিজেপি বলছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও দলের বিজেপি’র সর্ব ভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের ঘোষণা অনুযায়ী সারা দেশেই এনআরসি চালু করা প্রস্তুত হবে। মুখ্যমন্ত্রী এবং সরকারের অবস্থানের জেরেই ত্রিপুরায় এখন এনআরসি-প্রশ্নে বিভ্রান্ত হয়েছে। এরই মধ্যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করে চাপ তৈরী করেছে বিরোধী দলগুলো। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা’র।  

আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করে পরে এনআরসি নিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার কৌশল নিয়েছে বিজেপি সরকার। দলটির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোয় ঘুরে বিজেপি এবং সহযোগী দলগুলির মতামতও নিয়েছেন। ত্রিপুরার আগরতলায় গিয়েও তিনি বিজেপি এবং জোটসঙ্গী আইপিএফটি-র নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। এ বৈঠকেও নাগরিকত্ব সংশোধনী নিয়ে ক্ষোভের বিষয়টি তিনি বুঝেছেন। একই সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের পরামর্শ, এনআরসি নিয়ে অযাচিত মন্তব্য না করে দলের নেতারা যেন নাগরিকত্বের বিষয়টিই মাথায় রাখেন।

বাংলায় এনআরসি’র বিরোধিতা করে জেলায় জেলায় পথে নেমেছে বাম দলগুলো। তবে ত্রিপুরায় তেমন চিত্র এখনও দেখা যায়নি। সিপিএমের ত্রিপুরা রাজ্য নেতৃত্ব এবং গণ-সংগঠন উপজাতি গণমুক্তি পরিষদের ব্যাখ্যা, অসমের পরে এনআরসি নিয়ে বিপ্লব দেবের সরকার কী করবে, তারই ঠিক নেই! তাই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের উদ্যোগের বিরুদ্ধেই আগে জনমত গড়ে তোলায় জোর দিচ্ছেন তাঁরা।

সিপিএমের ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদক গৌতম দাশের বলেন, ‘এনআরসি নিয়ে আমাদের অবস্থান তো পরিষ্কার। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নানা রকম মন্তব্যে রাজ্য সরকারের অবস্থান নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গোটা উত্তর-পূর্বেই নাগরিকত্ব সংশোধনের উদ্যোগের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ হচ্ছে। ধর্মের ভিত্তিতে দেশের নাগরিকত্ব স্থির করার প্রস্তাব আমরা মেনে নিচ্ছি না।’

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের (সিএবি) বিরোধিতা করছে রাজ্যে জনজাতিদের দুই সংগঠন আইপিএফটি ও আইএনপিটি। আইপিএফটি-র সাধারণ সম্পাদক মেবার কুমার জামাতিয়া তাঁদের বিরোধিতার কথা বিজেপি নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। রাম মাধব-সহ বিজেপি নেতারা আশ্বাস দিয়েছেন, ওই বিল পাশ হলেও জনজাতিদের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকবে। তবে সেই আশ্বাসে বিশেষ একটা কাজ হয়নি। বিরোধী দল আইএনপিটি-র সাধারণ সম্পাদক জগদীশ দেববর্মাও জনজাতিদের অধিকার ক্ষুণ্ণ হওয়ার অভিযোগে সরব হয়েছেন। 

এর জেরে এনআরসি-র আগে নাগরিকত্ব নিয়েই বিজেপির অস্বস্তি বাড়ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব বলছেন, নিজেদের বাড়ির লোকজনের যাবতীয় তথ্য যেমন কাছে রাখতে হয়, দেশের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারও একই চেষ্টা করছে। রাজ্য বিজেপির নেতা রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘উত্তর-পূর্বের সব সংগঠনের সঙ্গেই আমরা কথা বলছি। জনজাতি প্রতিনিধিদেরও বলছি, তাঁদের স্বার্থ মাথায় রাখা হবে।’

এমএস/এসি
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি