ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ : পশ্চিমবঙ্গে ৫টি ট্রেনে আগুন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২৩, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১০:৫৫, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯

ভারতে নাগরিকত্ব বিল সংশোধনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্নস্থানে ব্যাহত হচ্ছে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা। মুর্শিদাবাদ, ফারাক্কা স্টেশন ও হাওড়ার বাউরিয়া ও নলপুর স্টেশনগুলোতে রেল অবরোধ বিক্ষোভকারীদের। গেল রাতে ৫টি ফাঁকা ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।

শুধু ট্রেনে আগুন নয়, পার্লামেন্টে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পর থেকে গোটা ভারতজুড়ে চলছে জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন। বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব ভারতে আন্দোলনের ডামাডোল ছড়িয়ে পড়েছে সবচেয়ে বেশি। সে হাওয়া গত শুক্রবারই এসে পৌঁছেছে পশ্চিমবঙ্গে।

তার একদিন পরই আসামের ন্যায় উত্তাল হতে থাকে মমতার রাজ্যে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন- এনআরসির প্রতিবাদে স্বয়ং তৃণমুল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন।

তার এমন ঘোষণায় দ্বিতীয় দিন শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) থেকে আন্দোলনের স্রোতে ভাসছে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে নতুন করে অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে।

বেশ কিছু দোকান-পাট, টিকিট কাউন্টার, ১৫টি বাস ও পাঁচটি ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা রেল স্টেশনে ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে।

এর আগে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে অনুমোদন দেওয়ার পর বিলটি আইনে পরিণত হয়। এরপর থেকেই মূলত সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।

আসাম থেকে শুরু করে পশ্চিমবঙ্গে পরিস্থিতিও অশান্ত হতে শুরু করে। শুক্রবার শুরু হওয়া রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ধারাবাহিকতায় শনিবারও প্রতিবাদ ও সহিংসতা অব্যাহত ছিল।

এর আগে এমন পরিস্থিতি দেখা গেছে আসামে। সেখানে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাওয়ায় গুয়াহাটিতে কারফিউ জারি করা হয়। যদিও পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় ধীরে ধীরে সেখানেও নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু এবার পশ্চিমবঙ্গে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছেই।

এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের মানুষকে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ-আন্দোলন করার আহ্বান জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাধারণ মানুষের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করবেন না, উত্তেজনা বা আতঙ্ক ছড়াবেন না, সাম্প্রদায়িক উসকানিতে পা দেবেন না।’

সংবাদ সংস্থা আইএএনএস জানিয়েছে, মুর্শিদাবাদ জেলার পোড়াডাঙা, জঙ্গিপুর এবং ফারাক্কা স্টেশন এবং হাওড়া জেলার দক্ষিণ পূর্ব রেলপথে বাউরিয়া ও নলপুর স্টেশনগুলোতে দফায় দফায় রেল অবরোধ করেছে বিক্ষোভকারীরা। পাশাপাশি তারা রাজ্য পরিবহন দফতরের অধীনস্থ তিনটি সরকারি বাসসহ পনেরটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়।

অপরদিকে হাওড়ায় সাঁকরাইল রেলস্টেশন ও এর আশপাশে কয়েকশো মানুষ রাস্তা অবরোধ করার পাশাপাশি কয়েকটি দোকানে আগুন লাগিয়ে দেয়। স্টেশন কমপ্লেক্সে প্রবেশ করে টিকিট কাউন্টারেও আগুন লাগিয়ে দেয় তারা।

এদিকে, গত শুক্রবারের দেয়া ঘোষণা অনুযায়ী আগামিকাল সোমবার মাঠে নামছে তৃণমুল কংগ্রেস। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-এনআরসির প্রতিরোধে এ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিবেন স্বয়ং মমতা। ইতিমধ্যে বেশ আটঘাট বেধে নামার ঘোষণা দিয়েছে দলটি।

মমতা বলেন, ‘প্রয়োজনের জেলে যাবো, তবুও রাজ্যে নাগরিত্ব আইন-এনআরসি হতে দেব না।’

একে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি