ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

ইরানে মসজিদে ‘লাল পতাকা’, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের দামামা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:৩৫, ৫ জানুয়ারি ২০২০

এই লাল পতাকা উড়িয়েছে ইরান- সংগৃহীত

এই লাল পতাকা উড়িয়েছে ইরান- সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুমুল উত্তেজনার মধ্যে মসজিদে যুদ্ধের প্রতীক ‘লাল পতাকা’ উড়িয়ে দিয়েছে ইরান। এই পতাকা বা ‘লাল ঝান্ডা’ ওড়ানোর অর্থ ইরান যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। মার্কিন বাহিনীর হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ডের কুদস্ বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার ঘটনায় তিনদিনের শোকের প্রথম দিন গতকাল শনিবার এ পতাকা ওড়ানো হয়। আর এতে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের দামামা বেজেছে।

দেশটির কম প্রদেশের পবিত্র মসজিদ জামকারান’র সর্ব্বোচ্চ গম্বুজে রক্তলাল পতাকা ওড়ায় ইরান। সে ঘটনার আগেই অবশ্য ইরাকের বাগদাদে মার্কিন দূতাবাস ও সালাহউদ্দিন প্রদেশে মার্কিন সেনাদের বালাদ বিমান ঘাঁটিতে রকেট হামলার ঘটনা ঘটে। বাগদাদের মার্কিন স্থাপনায় কারা হামলা চালিয়েছে তা এখনও কেউ নিশ্চিত করেনি। তবে ওই হামলায় এক যোগে ৫টি রকেট ছোড়া হয়। এতে এখন পর্যন্ত ৫ জন আহত বলে জানা গেছে।

ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো ইরান জামকারান মসজিদে রক্তলাল পতাকা ওড়ানো হয়েছে, যেখানে লেখা রয়েছে ‘যারা হোসেনের রক্তের বদলা নিতে চায়’। পতাকাটিকে সোলামানি হত্যার দায়ে আমেরিকার ওপর ইরানের বদলা নেওয়ার অঙ্গীকার হিসেবে দেখা হচ্ছে। সম্ভাব্য যুদ্ধের হুঁশিয়ারি হিসেবেও দেখা হচ্ছে এ পতাকাকে। শিয়া সংস্কৃতিতে লাল পতাকা দিয়ে অন্যায় রক্তপাতের বদলা নেওয়ার প্রতীক।

বিক্ষোভে টালমাটাল ইরাকে এক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা চলছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে। গত ২৭ ডিসেম্বর ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেসের (হাশদ আল-শাবি) শাখা কাতায়েব হিজবুল্লাহর রকেট হামলায় মার্কিন এক ঠিকাদার নিহত হন। তার দু’দিন পর যুক্তরাষ্ট্র আল-শাবির ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে ২৫ জনকে হত্যা করে।

এর প্রতিবাদে আল-শাবির সদস্যরা মিছিল নিয়ে বাগদাদের গ্রিন জোনে (পশ্চিমা দেশগুলোর ঘোষিত কথিত আন্তর্জাতিক জোন) ঢুকে মার্কিন দূতবাসে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তারপর শুক্রবার ভোরে বাগদাদ বিমানবন্দরে হামলা চালিয়ে জেনারেল সোলেইমানি ও আল-শাবির উপ-প্রধানসহ আটজনকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র।

কাসেম সোলাইমানি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সবচেয়ে আস্থাভাজন ছিলেন। দেশের সীমানার বাইরে লেবানন, ফিলিস্তিনসহ গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের যে সামরিক পরিসর বেড়েছে, তার পেছনের কারিগর ছিলেন সোলেইমানি। যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলসহ পশ্চিমারা ইরানকে দমিয়ে রাখতে চাইলেও ‘শত্রুর চোখে চোখ রেখে লড়াই’ করার নীতিতে ইরানকে ‘প্রতিরোধযুদ্ধ’ শিখিয়েছেন তিনিই। এজন্য সোলেইমানি ইরানের ‘জাতীয় বীর’ হয়ে উঠেছিলেন। অন্যদিকে মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিলেন যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলসহ তেহরানবিরোধী পক্ষের।

মার্কিন বাহিনী তাকে হত্যা করায় ‘চরম প্রতিশোধ’ নেয়ার হুমকি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি। এমনকি দেশের আকাশসীমায় যুদ্ধবিমানও মোতায়েন করেছে তেহরান। ইরানের এই হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে মধ্যপ্রাচ্যের ঘাঁটিগুলোতে আরও সাড়ে ৩ হাজার সৈন্য পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এরমধ্যে তেহরান যুক্তরাষ্ট্রকে আঘাত করতে ৩৫ স্থাপনা টার্গেট করার কথা বললে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উল্টো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ৫২ স্থানকে টার্গেট করেছে। 

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাতে বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন হামলায় নিহত হন ইরানি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর এলিট কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলামানি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে সোলামানিকে হত্যা করা হয় বলে নিশ্চিত করেছে পেন্টাগন।

এমএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি