ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

চীনে নিখোঁজ করোনার খবর প্রচার করা সাংবাদিক!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৩৫, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০

চীনা সাংবাদিক চেন কুইশি- টুইটারে সৌজন্যে

চীনা সাংবাদিক চেন কুইশি- টুইটারে সৌজন্যে

করোনা ভাইরাস হানা দিতে পারে এমন ইঙ্গিত দিয়ে চীন প্রশাসনের রোষের মুখে পড়েছিলেন লি ওয়েংলিয়ান নামে উহানের এক চিকিত্সক। পরে এ ভাইরাসেই আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় সেই চিকিত্সকের। সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই জনরোষ তৈরি হয়। এ বার উহানেরই খবর করে নিখোঁজ হয়ে গেলেন চেন কুইশি নামে এক সাংবাদিক। একবারে নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছেন তাঁরই সঙ্গে থাকা আরও এক সাংবাদিক ফ্যাং বিন। চিকিত্সকের ঘটনাটি সামনে আসার পর থেকেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন চীনের নাগরিকরা। এবার ঐ সাংবাদিক নিখোঁজ হওয়ায় ক্ষোভটা আরও বেড়েছে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা’র। 

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের পর থেকে উহানের প্রতি মুহূর্তের খবর, শহরের কোথায় কী ঘটছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চেন ও ফ্যাং তুলে ধরেছিলেন গোটা বিশ্বের কাছে। শুধু তাই নয়, উহানের আক্রান্তদের ভয়াবহ পরিস্থিতি, সেই সঙ্গে বাস্তব চিত্রটাও সামনে এনেছিলেন তারা। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার থেকেই নিখোঁজ হয়ে যান চেন। করোনা ভাইরাসের খবর করা এক জন সাংবাদিকের হঠাত্ উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতোমধ্যেই। ফ্যাং-ই বা কেন চুপ করে গেলেন?

গত শুক্রবারই এক চিকিত্সকের মৃত্যু সামনে আসার পর বিক্ষোভ ছড়িয়েছে চিনের অন্দরে। লি ওয়েনলিয়াং নামে ঐ চিকিত্সক উহানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অনেক আগেই। কিন্তু প্রশাসন বেমালুম বিষয়টি চেপে যায় বলে অভিযো‌গ। ভুয়া খবর ছ়ড়ানোর অভিযোগ তুলে ওয়েংলিয়াংকে শাস্তিও দেওয়া হয়।  চেন-এর নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার খবরটি সামনে আসতেই শোরগোল পড়েছে। প্রশ্ন উঠছে, উহানের বাস্তব চিত্র সামনে আনার জন্যই কি চেন-কে ওয়েনলিয়াংয়ের মতো প্রশাসনের রোষে পড়তে হল?

গত ২৪ জানুয়ারি থেকে উহান এবং তার পার্শ্ববর্তী শহরগুলোর বাস্তব পরিস্থিতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরছিলেন চেন ও ফ্যাং। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথাও বলেন। তারপর সেই ছবি, ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন। এর জন্য তাকে প্রশাসনের রোষানলে পড়তে হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন চেন। একটি ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘এই প্রথম আমার প্রচণ্ড ভয় করছে। আমার সামনে ভয়ানক রোগ, পিছনে চিন প্রশাসন। কিন্তু যত দিন জীবিত থাকব, যা দেখেছি সেটাই বলব। মরতে ভয় পাই না।’ তারপর পরই নিখোঁজ হয়ে যান চেন। 

চেন পেশায় এক জন আইনজীবী। কিন্তু সাংবাদিকতার নেশাও রয়েছে তার। সিটিজেন জার্নালিস্ট হিসেবে ২০০৯-এ গানঝৌ-এর বন্যার রিপোর্টিং করেছিলেন তিনি। সম্প্রতি হংকংয়েও গিয়েছিলেন সেখানকার জন-আন্দোলনের বাস্তব চিত্রটাকে তুলে ধরতে। উহানে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের খবর পেয়েই সেখানে ছুটে যান পরিস্থিতি চাক্ষুষ করতে। বাস্তব চিত্রটাকে তুলে ধরেন।

করোনা ভাইরাসে ইতোমধ্যেই চিনে মারা গিয়েছেন ৯০০-র বেশি মানুষ। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪০ হাজার। রোববারই ৯৭ জনের মৃত্যু হয়। ৩ হাজার জন নতুন করে আক্রান্ত হন। চিনের জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, মৃত ৯৭ জনের মধ্যে ৯১ জনই হুবেই প্রদেশের। বাকি মৃত্যু হয়েছে হাইনান, গানসু, জিয়াংজি, আনহুই প্রদেশে।

এমএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি