মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে মোদির সফর বাতিল হচ্ছে না
প্রকাশিত : ০৮:৫৬, ৩ মার্চ ২০২০ | আপডেট: ০৯:০১, ৩ মার্চ ২০২০
ইসলামপন্থী এবং বামপন্থী দলগুলোর আপত্তির মুখেই মুজিব জন্ম শতবর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকায় আসা নিশ্চিত করা হয়েছে। আগামী ১৭ মার্চ দুই দিনের সফরে ঢাকা আসছেন তিনি।
এই সফর নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা গতকাল সোমবার ঢাকায় এসে বাংলাদেশের সরকারের দু’জন মন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠক থেকে মোদির ঢাকার সফর নিশ্চিত করা হয়।
কিন্তু মুজিব জন্ম শতবর্ষের অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা নাকি প্রধান অতিথি- কি হিসেবে মোদিকে রাখা হচ্ছে, সে ব্যাপারে এখনই স্পষ্ট করা হচ্ছে না বলে কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে।
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সাম্প্রতিক দাঙ্গার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে ইসলামপন্থী বিভিন্ন দল এবং সংগঠন মোদির ঢাকা সফর প্রতিহত করার যে ঘোষণা দিয়েছে, সেই পটভূমিতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব ঢাকায় এসে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সিনিয়র মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দেখা করেন।
এসব আলোচনায় মুল বিষয়ই ছিল নরেন্দ্র মোদির ঢাকার সফর নিশ্চিত করা। বৈঠকগুলোর পর দুই দেশই মোদির ঢাকা সফর নিশ্চিত করেছে।
এদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলছিলেন, আমন্ত্রিত অতিথিকে তারা যথাযথ সম্মান দেবেন। তিনি বলেন, উনি আসবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। আমরা উনাকে দাওয়াত দিয়েছি, আমরা খুব ভাগ্যবান যে উনি দাওয়াত গ্রহণ করেছেন। উনি আসবেন আমাদের দেশে আমাদের মেহমান হিসেবে। আর আমাদের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী মেহমানকে দেখভাল করার দায়িত্ব আমাদের। এবং আমরা সম্মানের সঙ্গে সে দায়িত্ব পালন করবো।
দিল্লির দাঙ্গার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে যে প্রতিবাদ বা আপত্তি উঠেছে মোদির ঢাকা সফর নিয়ে, তা বিবেচনায় নিচ্ছে না বাংলাদেশ সরকার।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সাথে আলোচনার পর মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেছেন, কারও প্রতিহত করার ঘোষণায় সরকার বিব্রত নয়।
ঢাকায় সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলাও দিল্লীর দাঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন।
তিনি বলেছেন, দিল্লিতে পরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়িয়ে এসব ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এখনও ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যম এবং গণমাধ্যমে অনেক গুজব ছড়ানোর প্রমাণ ভারত সরকারের আছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব তাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী ঢাকা সফর প্রসঙ্গে বলছিলেন, ‘দুই দেশের সম্পর্ককে দীর্ঘ সময়ের প্রেক্ষাপট থেকে দেখা উচিত। এখনকার কোনো ইস্যু নিয়ে এই সম্পর্ক বিবেচনা করা উচিত নয়। বাংলাদেশ এবং ভারত- দুই দেশের সম্পর্ককে নরেন্দ্র মোদির এই সফর আরও শক্তিশালী করবে।
বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শত বর্ষের অনুষ্ঠানের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অনেক আগে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে ঢাকায় কর্মকর্তারা বলেছেন। মোদির এই সফর যখন নিশ্চিত করা হয়েছে, তখন বাংলাদেশ সরকার দ্বিপাক্ষিক কিছু ইস্যুতে অগ্রগতি চাইছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের বক্তব্যেও এমন ইঙ্গিত মেলে।
তিনি বলেন, আমরা আরও প্রত্যাশা করবো, আমাদের মেহমান, আমাদের দেশের জনগণের আশা আকাংখাকে গুরুত্ব দিয়ে সম্মানেরে সঙ্গে আরও মনযোগ দেবেন।
ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার কাছে সাংবাদিকরা দ্বিপাক্ষিক সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।
জবাবে তিনি বলেছেন, তিস্তা সহ সাতটি নদীর পানিবণ্টন প্রশ্নে এবার আলোচনায় আগ্রগতি হতে পারে।
একে//
আরও পড়ুন