যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের সঙ্গে ভার্চুয়াল কনফারেন্স
প্রকাশিত : ১৯:৪২, ২৬ এপ্রিল ২০২০
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম গত বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ-বাংলাদেশি চেম্বার ও এসোশিয়েশনের প্রতিনিধিদের সাথে এক বিশেষ ভার্চুয়াল কনফারেন্সে অংশ নিয়েছেন। এসময় করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাবের ফলে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা যেসব ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছেন বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য-সামগ্রী এবং তৈরি পোষাক যুক্তরাজ্যে আমদানীর ক্ষেত্রে যেসব সমস্যার মোকাবেলা করছেন তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে করোনা বিশ্ব-মহামারীর ফলে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের দ্বিপাক্ষিক ব্যবসার ক্ষতি কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ হাইকমিশন যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সেগুলি অবহিত করেন। তিনি ব্রিটিশ-বাংলাদেশি পোষাক রপ্তানীকারকদের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আর্থিক প্রণোদনায় প্রদত্ত সুবিধা গ্রহনের আহবান জানান।
হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বলেন, বাংলাদেশ হাই কমিশন লন্ডন ইউকে ফরেন এন্ড কমনওয়েলথ অফিস (এফসিও), ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড, বিজিএমইএ এবং যুক্তরাজ্যের কনফেডারেশন অব ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রি (সিবিআই) সহ অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে কাজ করছে যাতে ব্রিটিশ রিটেইলাররা বাংলাদেশে তৈরী পোষাকের জন্য আমদানী মূল্য পরিশোধ করেন এবং যে আমদানী আদেশ দিয়েছিলেন তা কার্যকর করেন। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে মালামাল পরিবহন এবং এই দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল লকডাউনের সময়ও যাতে অব্যাহত থাকে সে লক্ষ্যে হাই কমিশন অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
কনফারেন্সে ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিবিসিসিআই), ইউকে-বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস্ অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ইউকেবিসিসিআই), বাংলাদেশ ক্যাটারারস এসোসিয়েশন(বিসিএ), ব্রিটিশ-বাংলাদেশ ক্যাটারারস এসোসিয়েশন, ইউকে বিমান অনুমোদিত ট্রাভেল এজেন্ট এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ফ্রেস ভ্যাজিটেবেল এন্ড ফ্রুটস আমদানীকারক এসোসিয়েশন, ইউকে এবং ওয়েলস্ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অংশগ্রহন করে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কান্ট্রি ম্যানেজারও এতে অংশ নেন।
এসব চেম্বার ও এসোশিয়েশনের নেতৃবৃন্দ হাইকমিশনারের সাথে বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ সংক্রমনের ফলে বাংলাদেশ থেকে হিমায়িত খাদ্য, ফল, শাক-সবজি এবং তৈরী পোষাক যুক্তরাজ্যে আমদানীর ক্ষেত্রে এবং এসব পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশে লকডাউনের জন্য যে স্থিতাবস্থা দেখা দিয়েছে সে সব দূরীকরণের বিষয়ে আলোচনা ও মত-বিনিময় করেন। ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কারিশিল্প যুক্তরাজ্যে লকডাউনের জন্য যে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে সে বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়।
হাইকমিশনার ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেন জানান, বাংলাদেশ হাই কমিশন লন্ডন ইতিমধ্যেই একটি ২৪/৭ কনস্যুলার হেল্প লাইন ও বাংলাদেশি ব্রিটিশ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি প্যানেল গঠন করে একটি নতুন ২৪/৭ করোনা ভাইরাস হেল্প লাইন চালু করেছে যার মাধ্যমে বাংলাদেশি কমিউনিটির যারা এদেশের ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিসের আওতাভূক্ত নন, যুক্তরাজ্যে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রী অথবা বয়োবৃদ্ধ ও বাংলা ভাষায় ডাক্তারের পরামর্শ নিতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন, তারা কভিড-১৯ সংক্রান্ত যে কোন ধরনের পরামর্ম পেতে পারেন।
ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ হাইকমিশনারকে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস বা চাটার্ড কার্গো বিমানের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেন, যাতে তাঁরা নিয়মিতভাবে প্রতি সপ্তাহে বাংলাদেশ থেকে হিমায়িত খাদ্য, শাক-সবজি ও ফল যুক্তরাজ্যে আমদানী করতে পারেন। তাঁরা জানান এসব পণ্য কার্গো বিমান না থাকায় বর্তমানে আমদানী করা যাচ্ছেনা এবং এর ফলে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি পণ্যের দোকানগুলো করোনা লকডাউনের সময় এবং এই পবিত্র রমজান মাসে ভয়ানক সরবরাহ সংকটের মধ্যে রয়েছে।
হাইকমিশনার ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্থ করে বলেন, তাঁদের মতামত ও পরামর্শ বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনতিবিলম্বে জানানো হবে এবং সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য সম্ভাব্য দ্রুততার সাথে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো জানান, করোনা ভাইরাস সংক্রমনের কারণে লকডাউনের সময় বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সময়ে সময়ে এ ধরনের ভার্চুয়াল কনফারেন্সের আয়োজন করা হবে।
কনফারেন্সে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের মধ্যে ইকবাল আহম্মেদ ওবিই, বসির আহম্মেদ, বজলুর রশিদ এমবিই, এম.এ মুনিম, সেলিম চৌধুরী, লুৎফুর রহমান সায়ীদ, মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, কামর উদ্দিন চৌধুরী পাপলু এবং আব্দুল আলিম প্রমুখ অংশগ্রহন করেন।
আরকে//
আরও পড়ুন