ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

ভারতের ৮ কিমির মধ্যে ঢুকে বসে আছে চীনা সেনা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১২, ১১ জুন ২০২০ | আপডেট: ১০:৩৪, ১১ জুন ২০২০

চীন-ভারত বিরোধপূর্ণ সীমান্তের একটি এলাকা। ছবি: সংগৃহীত

চীন-ভারত বিরোধপূর্ণ সীমান্তের একটি এলাকা। ছবি: সংগৃহীত

চীন-ভারত সীমান্ত সংঘাতের যে মূল এলাকা, সেই প্যাংগং লেকের উত্তর তীরে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি। সেখানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে চীনের সেনা প্রায় ৮ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে বসে আছে। এ খবর দিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার।

ভারতীয় সেনা সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, প্যাংগং লেকের চার নম্বর ফিঙ্গার থেকে আট নম্বর ফিঙ্গার পর্যন্ত গোটা এলাকা চীন মে মাসের গোড়া থেকেই দখল করে রেখেছে এবং ওই এলাকায় ভারতীয় সেনার কোনও নজরদারিই হচ্ছে না। প্যাংগং লেকের মাঝে মাঝে পাহাড়ের কিছু অংশ আঙুলের মতো ঢুকে রয়েছে। এগুলোকে ‘ফিঙ্গার’ বলা হয়।  প্রসঙ্গত, দুই সেনাবাহিনীর মধ্যে বুধবারও বৈঠক হয়েছে।

আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, এ নিয়ে চীন লাদাখে ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করে ফেলেছে বলে সরাসরি অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। রাহুল গান্ধীর এই অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেনি নরেন্দ্র মোদী সরকার। আবার স্বীকারও করেনি।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ, লাদাখের বিজেপি সাংসদ জাময়াঙ্গ সেরিং নামগিয়াল রাহুলকে আজ পাল্টা আক্রমণ করে বলেছেন, কংগ্রেস জমানাতেই চীন লাদাখের অনেকটা অংশ দখল করে ফেলেছিল। কিন্তু রাহুলের দাবি, “চীনারা হেঁটে হেঁটে ঢুকে লাদাখে আমাদের ভূখণ্ড দখল করে ফেলেছে।” লক্ষণীয়, তা অসত্য বলে রবিশঙ্কর প্রসাদ উড়িয়ে দেননি। লাদাখে চীন ভারতীয় এলাকা দখল করে রাখেনি বলেও তাঁরা দাবি করেননি।

জানা যায়, ৫ মে লাদাখের প্যাংগং লেক এলাকায় ভারত ও চীনের সেনা সংঘাত শুরু হয়। তারপর থেকেই দুই বাহিনী লাদাখে পরস্পরের চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে। তবে, শনিবার দুই দেশের সেনা কমান্ডার স্তরে বৈঠক হওয়ার পরে ভারত ও চীনের সেনা লাদাখের তিনটি জায়গা—গলওয়ান ভ্যালির ১৪ ও ১৫ নম্বর নজরদারি এলাকা, গোগরা-হট স্প্রিংস-এর ১৭ নম্বর নজরদারি এলাকায় মুখোমুখি অবস্থান থেকে পিছু হটেছে। 

ভারত চাইছে, এপ্রিলে যে যে যেখানে ছিল, সেই স্থিতাবস্থা বজায় থাকুক। কিন্তু চীন এ নিয়ে আলোচনাতেই রাজি নয়। তাদের দাবি, এখন তারা যেখানে রয়েছে, সেই স্থিতাবস্থা বজায় রাখা হোক। ভারতীয় সেনার যুক্তি, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা নিয়ে ভারতের দিক থেকে কোনও অস্পষ্টতা নেই। তা সামরিক মানচিত্রে স্পষ্ট দেখানো রয়েছে।  যদিও ২০০২-সালে দু’দেশের বিশেষজ্ঞ গোষ্ঠীর বৈঠকে চীন তা ফিরিয়ে দেয়।

নয়াদিল্লির দাবি, চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন এলাকা থেকে হাজার দশেক সেনা, কামান ও ট্যাঙ্ক রেজিমেন্ট সরালে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরবে। অতীতে ডোকলামে ভারত-চীনের সেনা সংঘাতের অবস্থান থেকে পিছু হঠার পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সরকারি বিবৃতি দিয়েছিল। কিন্তু এবার পূর্ব লাদাখের তিনটি জায়গা থেকে দুই দেশের সেনাদের পিছু হটার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু সরকারিভাবে মোদী প্রশাসন এখনও কিছু বলেনি। 

এখানেই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন। রাহুল গান্ধী বুধবার সকালে টুইট করেন, “চীনারা হেঁটে হেঁটে ঢুকে লাদাখে আমাদের ভূখণ্ড দখল করে ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রী একেবারে নীরব। তিনি উধাও হয়ে গিয়েছেন।” 

রাহুল গান্ধীর পাল্টা জবাব দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর। তিনি বলেন, “রাহুল গান্ধীর বোঝা উচিত, এই রকম আন্তর্জাতিক বিষয়ে, যেখানে চীনের প্রশ্ন জড়িত, তা নিয়ে টুইটে প্রশ্ন তোলা যায় না।” রাহুল বালাকোটে বিমানবাহিনীর অভিযানেরও প্রমাণ চেয়েছিলেন বলে আঙুল তুলেছেন রবিশঙ্কর। তাঁর যুক্তি, নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ২০২০’র ভারত ও ১৯৬২’র ভারত এক নয়।

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি