এলিফ্যান্ট ওয়াচ টাওয়ারে দুই ভাইয়ের কোয়ারেন্টাইন!
প্রকাশিত : ১৩:৪৩, ১৬ জুন ২০২০
করোনাভাইরাস আমাদের আর কত দূর নিয়ে যাবে তা একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন। সব ক্ষেত্রেই রয়েছে সংক্রমণের ঝুঁকি। বাহির থেকে কেউ এলে তাকে নিয়ে সৃষ্টি হয় সন্দেহ। এমনই এক সন্দেহে গ্রামে পায়নি জায়গা, এমনকি কী বাড়িতেও না। শেষ পর্যন্ত হাতি দেখার উঁচু টাওয়ারে (এলিফ্যান্ট ওয়াচ টাওয়ার) আশ্রয় নিয়েছেন দুই ভাই।
ঘটনাটি ভারতের জলপাইগুড়ির। অমর বাহাদুর রাই নামের এক লোক আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে কর্মরত ছিলেন। তিনি সেখান থেকে কোনক্রমে শিলিগুড়িতে ফেরেন। সেখান থেকে দাদাকে আনতে শিলিগুড়িতে যান তার ভাই জিওয়ান। নিজেদের গ্রাম মালিভিটাতে ফেরার পরেই দুই ভাইকে করোনা সতর্কতায় ১৪ দিনের জন্যে কোয়ারান্টাইনে থাকার কথা বলেন গ্রামের বাসিন্দারা। কোথাও থাকার জায়গা না পেয়ে শেষপর্যন্ত গ্রামের বাইরে থাকা এক এলিফ্যান্ট ওয়াচ টাওয়ারে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন দুই ভাই।
হোটেল ম্যানেজমেন্টের ডিগ্রিধারী অমর রাই আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের একটি বিলাসবহুল রিসোর্টে কাজ করতেন। সেখান থেকেই নিজের গ্রামে ফিরে আসেন তিনি। অমর বলেন, ‘আমাদের পরিবারের সদস্য এবং গ্রামের লোকজনের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে আমরা প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে গ্রামের বাইরে থাকা এই ওয়াচ টাওয়ারটিতেই দু'সপ্তাহের জন্যে কোয়ারেন্টাইনে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটাই এখন আমাদের বাড়ি।’
তবে অমর বাহাদুর রাইয়ের এক আত্মীয় অভিযোগ করেছেন যে, গ্রাম পঞ্চায়েতকে তাঁর গ্রামে ফিরে আসার খবর আগে থেকেই দেওয়া হলেও প্রশাসন তার কোয়ারেন্টাইনে থাকার ব্যবস্থাই করেনি। তাই বাধ্য হয়েই গত ১০ জুন থেকে ওই দুই ভাইকে ওয়াচ টাওয়ারের মাত্র ৮ বর্গফুট জায়গায় থাকতে হচ্ছে।
এদিকে বেলাকোবা ফরেস্টের রেঞ্জ অফিসার সঞ্জয় দত্ত বলেছেন, ওয়াচ টাওয়ারটি আসলে হাতির দলের চলাচলের দিকে নজর রাখা এবং আশেপাশের গ্রামগুলোতে ঢোকার চেষ্টা করলে তাদের ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্যে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এখন আর সেটিকে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, যেহেতু ওয়াচ টাওয়ারটি কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্যে ব্যবহার করা হচ্ছে, তাই আমরা সমস্যার সম্মুখিন হয়েছি। কিন্তু মানবিক কারণে আমরা ওই দু'জনকে তাড়িয়ে দেওয়ার কথা ভাবছি না।
অন্যদিকে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রঞ্জিতা রায় দাবি করেন যে, যদিও ওই পরিবার জানিয়েছিল যে অমর রাই আন্দামান থেকে ফিরে আসবেন, তবে তার ফিরে আসার পরে আর কিছুই জানানো হয়নি তাদের পরিবার থেকে।
সূত্র: এনডিটিভি
এএইচ/
আরও পড়ুন