ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

ইসরায়েলের অধিগ্রহণকে যেভাবে দেখছে আরব বিশ্ব

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:৩৪, ১ জুলাই ২০২০ | আপডেট: ২২:৪১, ১ জুলাই ২০২০

অ্যাকশন ভঙ্গিতে ইসরাইলের সেনা- সিনহুয়া

অ্যাকশন ভঙ্গিতে ইসরাইলের সেনা- সিনহুয়া

অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও ভূরাজনৈতিক আগ্রহকে মাথায় রেখে আস্তে আস্তে ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করছে মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশ। কিন্তু ইসরায়েলের পশ্চিম তীর অধিগ্রহণকে কীভাবে দেখবে আরব বিশ্ব, সে বিষয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। খবর ডয়চে ভেলে’র। 

চলতি মাসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের ৩০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করার লক্ষ্যে একটি বড় পদক্ষেপ নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত এই চাল সারা বিশ্বজুড়ে নানামুখী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

ফিলিস্তিনের পক্ষে থাকা আরব লীগও জানিয়েছে যে, এই পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে এই অঞ্চলের ভেতরে-বাইরে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে ধর্মীয় যুদ্ধের আঁচ। পাশাপাশি, জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ মে মাসে জার্মান সংবাদপত্র ডেয়ার স্পিগেলকে জানিয়েছেন যে ইসায়েল এই অধিগ্রহণের পথে অনড় থাকলে ব্যাপক গণ্ডগোল বাধতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আরব আমিরাতের দূত ইউসেফ আল-ওতাইবাও মনে করেন যে এই পদক্ষেপ আরব-ইসরায়েল সম্পর্কের স্বাভাবিকত্বে আঘাত হানতে পারে।

আংশিক অধিগ্রহণ:
জেরুসালেমে মার্কিন কনসুল জেনারেল জেক ওয়ালেস এবিষয়ে বলেন, ‘ইসরায়েল থেকে পাওয়া খবর থেকে আমরা জেনেছি যে আরব দেশগুলির প্রতিক্রিয়ার জেরে সম্পূর্ণ অধিগ্রহণের বদলে আংশিক অধিগ্রহণের পথে হাঁটছে তারা।’ ওয়ালেসের মতে, আরব দেশগুলির সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতেই এমন পদক্ষেপ। এই অধিগ্রহণ যদি ১৯৬৭ সালের তথা কথিত সীমান্ত মেনে করা হয়, যা আন্তর্জাতিক মতানুসারে অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চল ও ইসরায়েলের সীমান্তও (সম্পাদকের নিজস্ব মতামত), তাহলে এর প্রত্যুত্তরে জর্ডান নানা বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, জানান তিনি।

এর আগে মার্কিন-ইসরায়েলের অধিগ্রহণ বিষয়ক সিদ্ধান্তে ফিলিস্তিনের বন্ধু হিসাবে পরিচিত আরব দেশগুলির বিরোধিতা নজরে আসলেও তা ছিল তুলনামূলকভাবে ক্ষীণ। এর কারণ হিসাবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন ইসরায়েলের সাথে এই দেশগুলির ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সুসম্পর্কের কথা।

এ বিষয়ে ইসরায়েল ফোরাম ফর রিজিওনাল থিংকিঙের গবেষক এলিজাবেথ সুরকভ বলেন, ‘আরব দেশগুলি এতদিন ধরে যা করে এসেছে তারই ফসল এই দুর্বল প্রতিরোধ। ফিলিস্তিনিদের ওপর অসহনীয় সামরিক অত্যাচারের সময়েও ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে লেগেছিলেন তারা।’

দ্বিধাবিভক্ত মধ্যপ্রাচ্য:
জর্ডান ও অন্যান্য আরব দেশগুলি যদি ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের বিরোধিতায় অনড় থাকে, তাহলে তা ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষকে আরো কড়া হতে উৎসাহ দেবে৷ পাশাপাশি, গাজা অঞ্চলে হামাসের কার্যকলাপ বাড়িয়ে ইসরায়েলকে কড়া বার্তা দেওয়া সম্ভব হবে। কিন্তু ইসরায়েলের তিন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক প্রধান ফরেন পলিসি পত্রিকায় একটি প্রতিবেদনে আরব দেশগুলির উদ্দেশ্যে সাবধান বাণী দিয়েছেন। তাদের মত, বিরোধিতার পথে থাকলে এরপর কূটনৈতিক রাস্তায় সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সম্ভাবনা কমবে।

এর মধ্যে বর্তমান অবস্থাকে আরও জটিলতার দিকে ঠেলে দিতে পারে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের বিষয়টি। কড়া পদক্ষেপের ফলে যদি বড় সংখ্যায় শরণার্থীরা জর্ডানের সীমান্তে এসে পৌঁছান, তাহলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে অনেকের ধারণা।

জেক ওয়ালেসের বক্তব্য, ‘রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহর ওপর এখন এক দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তাদের সম্পর্ক বজায় রাখা ও অন্য দিকে নিজের দেশের নাগরিকদের পক্ষ থেকে উঠে আসা ফিলিস্তিনপন্থি আওয়াজের চাপ। এটাই হয়ত জর্ডানের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়।’

এমএস/এসি
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি