ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

করোনা সন্দেহে বাস থেকে ছুঁড়ে ফেলে মারলো তরুণীকে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:৪৩, ১১ জুলাই ২০২০

আনশিকা যাদব

আনশিকা যাদব

চলমান মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে নিজেকে ও পরিবারের সদস্যদের বাঁচানোর তাগিদে অচেনা মানুষের থেকে দূরে থাকতে চাইছেন সবাই। তবে বাঁচার এই তাগিদ যে মানুষকে কতটা বেপরোয়া ও নির্মম করে তুলেছে তার একটা প্রমাণ পাওয়া গেল ভারতের উত্তরপ্রদেশের একটি ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর। কোভিড-১৯ আক্রান্ত সন্দেহে ১৯ বছরের এক তরুণীকে বাস থেকে টেনে-হিঁচড়ে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন যাত্রীরা।  

ভারতীয় গণমাধ্যগুলো জানায়, আনশিকা যাদব নামে ১৯ বছরের এক কিশোরী উত্তরপ্রদেশের শিকোহাবাদ থেকে দিল্লি যাওয়ার বাসে উঠেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন তার মা। দিল্লির মাণ্ডাওয়ালির বাসিন্দা ওই তরুণী ফের লকডাউন শুরুর আগে ফিরতে চাইছিলেন বাকি পরিবারের কাছে। পরিকল্পনামাফিক দিল্লি যাওয়ার জন্য মাকে নিয়ে সে গত ১৫ জুন শিকোহাবাদ থেকে বাসে ওঠে। ঘটনার দিন শরীরটা বিশেষ ভালো ছিল না ওই তরুণীর। কিডনিতে পাথর ধরা পড়ায় চিকিৎসা চলছিল তার। যাত্রার ধকলে আর গরমে বাসে বেশ অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। ব্যাপারটা চোখ এড়ায়নি সহযাত্রীদের। মুহূর্তের মধ্যে কিভাবে যেন গোটা বাসে গুজব ছড়িয়ে যায় যে, তরুণীটি করোনা আক্রান্ত! বাসের যাত্রীরা প্রচণ্ড ক্ষেপে গিয়ে তাদেরকে অকথ্য গালিগালাজ করতে থাকে। বাস থেকে নেমে যাওয়ার জন্য জোর-জবরদস্তিও করতে থাকেন তারা।

এহেন পরিস্থিতিতে ভয়ে আতঙ্কে প্রায় কান্নায় ভেঙে পড়েন অসহায় তরুণী ও তার মা। মাঝ রাস্তায় এভাবে কোথায় যাবেন তা বুঝতে না পেরে সবার কাছে বারবার কাকুতি মিনতি করতে থাকেন তারা। মেয়েটি যে করোনায় আক্রান্ত নন, তার মায়ের সে আশ্বাস-বাণী কারোরই কানে যায়নি। শেষে এমন পরিস্থিতি দাঁড়ায় যে, করোনা আক্রান্ত-এই ভয়ে ছোঁয়া যাবে না তাই বাসের মধ্যে থাকা একটা নোংরা কম্বল জোর করে ওই কিশোরীর গায়ে জড়িয়ে, কম্বল ধরেই তাকে সিট থেকে টেনে নামানো হয়। এরপর বাসের কনডাক্টর জোর করে টেনে-হিঁচড়ে ১৯ বছরের অসহায় মেয়েটিকে ওই কম্বলসুদ্ধ চলন্ত বাস থেকে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দেয়।

আগ্রা এক্সপ্রেসওয়ের ওপর গুরুতর জখম ও রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকেন আনশিকা যাদব নামের ভুক্তভোগী ওই তরুণী। কিছুক্ষণের মধ্যে ওখানেই মারাও যায় সে। নিহতের পরিবারের দাবি, এ ঘটনায় প্রথমে কোনো অভিযোগ নিতে চায়নি মথুরা পুলিশ। ওই তরুণীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলেই তাদেরকে বলা হয় পুলিশের তরফ থেকে। তবে নিহত ওই তরুণীর ভাই বিপিন যাদবের দাবি, তার বোনকে খুন করা হয়েছে।

এদিকে, এমন ঘটনার খবর পেতেই উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কাছে রিপোর্ট চায় দিল্লি কমিশন ফর উইমেন। এমন ঘৃণ্য অপরাধের জন্য কেউই রেহাই পাবে না। দোষীদের চিহ্নিত করার জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে বলেই এক টুইট বার্তায় আশ্বাস দিয়েছেন দিল্লি কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল। সূত্র-জিনিউজ।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি