চীনের কনস্যুলেট ছাড়ছেন মার্কিন কূটনীতিকরা
প্রকাশিত : ১১:১১, ২৭ জুলাই ২০২০ | আপডেট: ১১:১৩, ২৭ জুলাই ২০২০

চেংডু কনস্যুলেট ভবন থেকে কূটনীতিক প্রতীকগুলো সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
বেশ কিছুদিন ধরেই পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। এরই মধ্যে বেইজিংয়ের নির্দেশের ডেটলাইন পার হওয়ার আগেই চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চেংডু কনস্যুলেট ছাড়তে শুরু করেছেন আমেরিকান কূটনীতিকরা। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনে চীনা কনস্যুলেট বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্তের পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে চেংডুর কনস্যুলেট বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল চীনা প্রশাসন। খবর বিবিসি
চীনের ডেটলাইন ছিল সোমবার সকালের আগে এই কনস্যুলেট খালি করতে হবে। তবে এর আগেই ফাইলের বক্স এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র বহন করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে সেখানকার কর্মীদের। এ সময় স্থানীয় মানুষজন কনস্যুলেটের বাইরে জড়ো হয়ে চীনের পতাকা নাড়াচ্ছেন এবং সেলফি তুলছেন।
চীন বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ ‘চুরি’ করছিল এই অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনের কনস্যুলেট বন্ধ করা নির্দেশ দেয় মার্কিন প্রশাসন। কনস্যুলেট খালি করতে ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা পার হওয়ার সময়সীমা শেষ হয় গত শুক্রবার। এরপর ভবনের দরজা ভেঙ্গে সেখানে প্রবেশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র হিউস্টনের দূতাবাস বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কারণ চীন বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ ‘চুরি’ করছিল। এর প্রতিক্রিয়ায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াঙ ওয়েনবিন বলেছিলেন, “এটা হচ্ছে চীনবিরোধী যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাবের একটা জগাখিচুড়ি পদক্ষেপ।”
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে, মার্কিন কনস্যুলেট থেকে ট্রাক বেরিয়ে যাচ্ছে এবং কর্মীরা ভবন থেকে কূটনীতিক প্রতীকগুলো সরিয়ে ফেলছে। ভবনের বাইরে অনেক পুলিশ মোতায়েন করা রয়েছে, যারা দর্শনার্থীদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে এবং যেকোনো ধরনের উস্কানি ঠেকাতে চেষ্টা করছে।
হিউস্টন থেকে যখন চীনের কূটনীতিকরা কনস্যুলেট খালি করে চলে যাচ্ছিলেন, সেখানেও জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীরাও তাদের নিয়ে ব্যঙ্গ করেছিলেন।
১৯৮৫ সালে চেংডুর এই কনস্যুলেটটি স্থাপিত হয়েছিল। সেখান থেকে তিব্বতসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করা হতো। এই কনস্যুলেটে দুইশ’র বেশি স্থানীয় কর্মী কাজ করতেন।
চেংডুর কনস্যুলেট বন্ধ করে দেয়ার পরও চীনে যুক্তরাষ্ট্রের আরও চারটি কনস্যুলেট থাকছে। পাশাপাশি হংকংয়েও একটি কনস্যুলেট রয়েছে মার্কিনীদের। অপরদিকে ওয়াশিংটনে দূতাবাসের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে আরও চারটি কনস্যুলেট রয়েছে চীনের।
সম্প্রতি চীন আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অস্থিরতা বাড়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। প্রথমত, মার্কিন কর্মকর্তারা সারাবিশ্বে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার দায় চাপিয়েছেন চীনের ওপর। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এমনও অভিযোগ তুলেছেন যে, ভাইরাসটি চীনের ল্যাবরেটরি থেকে উদ্ভূত হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে অনেক আগে থেকেই অন্যায্যভাবে বাণিজ্য পরিচালনা ও বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ চুরির অভিযোগ তুলেছেন। তবে বেইজিং বলেছে, অর্থনৈতিক পরাশক্তি হিসেবে চীনের উত্থান ঠেকানোর চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
এএইচ/এমবি
আরও পড়ুন