ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

নতুন দল গঠনের ঘোষণায় ফের আলোচনায় মাহাথির মোহাম্মদ

মালয়েশিয়া প্রতিনিধি:

প্রকাশিত : ২১:৪১, ৭ আগস্ট ২০২০

মালয়েশিয়ায় আবারও নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়ে আলোচনায় এসেছেন ৯৬ বছর বয়সি বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। নানা উত্থান-পতন ও আলোচনা-সমালোচনা পেছনে ফেলে আবারও প্রমান করলেন দেশটির রাজনীতিতে এখনও তার রয়েছে সরব উপস্থিতি।  

শুকবার (৭ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন এ রাজনৈতিক দল করার ঘোষণা দেন তিনি।  তবে দলটির নাম এখনও প্রকাশ না করলেও দলটি মালয়ভিত্তিক হবে বলে জানান। বর্তমানে দলটির অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে রয়েছেন তারই ছেলে দাতুক সেরি মুখরিজ বিন মাহাথির।

এর আগে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ক্ষমতা থেকে দূরে থাকলেও ২০১৮ সালে নতুন দল গঠনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা মাহাথির মোহাম্মদ রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে হলে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়ে চমক দেখান।  এরপর তার দলের মন্ত্রী মহিউদ্দীন ইয়াসিন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন।  প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের আগে তার গঠন করা রাজনৈতিক দল বেরসাতু থেকেও পদত্যাগ করেন মাহাথির মোহাম্মদ।  

পরবর্তীতে পদত্যাগপত্র ফেরতে চ্যালেঞ্জ করলেও আর ফিরে যেতে পারেননি দলের চেয়ারম্যানের পদে।  এছাড়া তার নিজ দলের মন্ত্রী মহিউদ্দীন ইয়াসিনের কাছে ধরাসায়ীসহ নানা কারণে ৯৬ বছর বয়সী এ রাজনীতিবিদ নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন বলে অনেকেই মনে করছেন।

দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাকের করা দুর্নীতির অভিযোগে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা মাহথির মোহাম্মদের সাবেক দল বারিশান ন্যাশনাল থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। এরপর মাহাথির মোহাম্মদ ক্ষমতায় আসার পরপরই সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়।

রাজনীতিতে মাহাথির মোহাম্মদের হাতেখড়ি ১৯৪৬ সালে।  তখন বয়স মাত্র ২১ বছর।  ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে তখন উত্তাল মালয়েশিয়া।  ওই সময়ে সদ্য প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনে (ইউএমএনও) যোগ দেন তিনি।  ওই দলের মূল আদর্শ ছিল জাতীয়তাবাদ।  ইউনিভার্সিটি অব মালয় থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশোনা করেছেন মাহাথির।  এরপর জন্মভূমি কেদাহ রাজ্যে ৭ বছর চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।  মাহাথির মোহাম্মদ ধীরে ধীরে ‘ডক্টর এম’ নামে জনপ্রিয়তা লাভ করেন।  ইউএমএনও দলের হয়ে ১৯৬৪ সালে মালয়েশিয়ার পার্লামেন্ট সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি।  তবে ১৯৬৯ সালে ঘটে ছন্দপতন।  দল থেকে বহিষ্কৃত হয়ে পার্লামেন্ট আসন হারান তিনি।  মালয় সম্প্রদায়কে অবহেলার অভিযোগ তুলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী টেংকু আবদুল রহমানের কাছে খোলা চিঠি লিখেছিলেন মাহাথির।  এতেই ক্ষমতাসীন দলের রোষের মুখে পড়েন তিনি।

২০১৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বারিসান ন্যাশনাল সরকারকে বিদায়ের জন্য ডা. মাহাথির মোহাম্মদ সব বিরোধী দলকে নিয়ে মহা ঐক্যজোট গঠন করেছিলেন।  নাম দেয়া হয় পাকাতান হারপান।  এর নেতৃত্ব দেন মাহাথির মোহাম্মদ নিজেই।  জোট গঠনের আগে মাহাথিরের সঙ্গে আনোয়ারের চুক্তি হয় পাকাতান জয়ী হলে পরবর্তী সরকারের দুই বছরের জন্য নেতৃত্ব দেবেন মাহাথির মোহাম্মদ।  এরপর আনোয়ার ইব্রাহিমের কাছে তিনি প্রধানমন্ত্রিত্ব হস্তান্তর করবেন।  জোট গঠনে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আনোয়ার ইব্রাহিমের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে আগ্রহী নন মাহাথির।  বরং বিজয়ী হয়ে তিনি আনোয়ার-পত্নী সেরি ডা. ওয়ান আজিজাহ ওয়ান ইসমাইলকে উপপ্রধানমন্ত্রী করেন।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি