ঢাকা, বুধবার   ০৬ নভেম্বর ২০২৪

অভিবাসী কোভিড কর্মীদের সহজে নাগরিকত্ব দিচ্ছে ফ্রান্স

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৫২, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০

করোনাকালে সামনে থেকে লড়াই করা কোভিডযোদ্ধা অভিবাসীদের শিথিল শর্তে নাগরিকত্ব দিচ্ছে ইউরোপের দেশ ফ্রান্স। সহজ প্রক্রিয়ায় দেশটির নাগরিকত্ব পাচ্ছেন অভিবাসীরা কোভিড কর্মীরা। ইতিমধ্যেই অনেক কোভিড যুদ্ধের ফ্রন্টলাইনারকে নাগরিকত্ব দেওয়ার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সুযোগের আওতায় স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে পরিচ্ছন্নকর্মীরাও রয়েছেন।

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় তরঙ্গে ভয়াবহ সংকটে ইউরোপের দেশ ফ্রান্স। যেখানে এখনও প্রতিদিনই কয়েক হাজার মানুষ ভাইরাসটির কবলে পড়ছেন। একই সাথে প্রাণ হারাচ্ছেন শত শত ভুক্তভোগী। এমতাবস্থায় ফ্রান্সে বসবাসরত অভিবাসী যারা করোনা মোকাবিলায় সম্মুখভাগ থেকে কাজ করে যাচ্ছেন, তাদেরই নাগরিকত্ব দেয়া হচ্ছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় করোনাযোদ্ধাদের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার আহ্বান জানিয়েছেন।  

এমন সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না দেশটিতের বসবাসরত অভিবাসীরাও। এরই মধ্যে প্রায় ৩ হাজার অভিবাসী আবেদন করেছেন। এর মধ্যে ৭শ’ জন অভিবাসী এই প্রক্রিয়ায় দেশটির নাগরিকত্ব পাওয়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বিবিসির এক খবরে। নাগরিকত্ব পাওয়া অভিবাসীদের মধ্যে রয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং দোকানের কর্মচারীরা।

মঙ্গলবার নাগরিকত্ব বিষয়ক জুনিয়র মিনিস্টার মারলিন শিয়াপ্পার দপ্তর থেকে জানানো হয়, পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মী, নারী পরিচ্ছন্নকর্মী, শিশু পরিচর্যা কর্মী, চেকআউট কর্মী: এরা সবাই এই দেশের প্রতি তাদের অঙ্গীকারবদ্ধ থাকার প্রমাণ দিয়েছেন, আর এখন এই প্রজাতন্ত্রের দায়িত্ব তাদের জন্য কিছু করা।

অবশ্য এ প্রক্রিয়ায় নাগরিকত্ব দেয়ার ঘোষণা গত সেপ্টেম্বরেই দিয়েছিল ফরাসি সরকার। এখন পর্যন্ত ৭৪ জনকে নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে। পাসপোর্ট পাওয়ার শেষ ধাপে আছেন আরও ৬৯৩ জন। নাগরিকত্ব পেতে আবেদন করেছেন ২ হাজার ৮৯০ জন।

সাধারণভাবে দেশটির নাগরিকত্ব পেতে কমপক্ষে ৫ বছর বাস করতে হয়। পাশাপাশি স্থিতিশীল আয় ও ফরাসি সমাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। তবে করোনাযোদ্ধারা মাত্র দুই বছর বসবাস করলেই পেয়ে যাবেন নাগরিকত্ব।

এদিকে, করোনায় চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে দেশটি। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১৫ হাজার মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে সেখানে। এতে করে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২৫ লাখ ৬ হাজারে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন ২৭৬ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৯৭৮ জনে ঠেকেছে সেখানে।

সে তুলনায় সুস্থতার হার একেবারে কম। স্বাভাবিক চিকিৎসায় এখন পর্যন্ত করোনামুক্ত হয়েছেন ১ লাখ ৮৭ হাজার ২৭২ জন রোগী। বিশ্বে সর্বোচ্চ আক্রান্তের দেশগুলোর তালিকায় ফ্রান্স এখন পাঁচে। ক্রমেই অবস্থা আরও ভয়াবহতার দিকে যাচ্ছে।

এদিকে ক্রিসমাসকে ঘিরে গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে লকডাউন শিথিল করেছে দেশটি। জরুরি প্রয়োজনে জিনিসপত্রের পাশাপাশি অন্য দোকানও খোলার অনুমতি দেয়া হয়েছে। ক্রিসমাসে যাতে মানুষজন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন, সেজন্যই মূলত কঠোরতা থেকে সরে এসেছে ফরাসি সরকার। তবে আগামী ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকবে পানশালা ও রেস্তোরাঁ। 

ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘করোনার তৃতীয় ঢেউ ঠেকাতে আমাদের সবকিছু করতে হবে। তৃতীয় দফা লকডাউন যেকোনভাবেই হোক ঠেকাতে হবে আমাদের। আগামী ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত আমরা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করব। এ সময়ের মধ্যে সংক্রমণ কমে গেলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ রেস্তোরাঁ ও পানশালা খুলে দেয়া হবে।’

এআই//আআ//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি