মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করছে নিউজিল্যান্ড
প্রকাশিত : ১১:০৪, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১
মিয়ানমারের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে উদ্বেগ ও হতাশ প্রকাশ করেছে নিউজিল্যান্ড। শুধু তাই নয়, দেশটির সঙ্গ রাজনৈতিক ও সামরিকসহ গুরুত্বপূর্ণ সব পর্যায়ের সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডান।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী এ ঘোষণা দেন।
তিনি জানান, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ও সামরিক পর্যায়ের সম্পর্ক থাকবে না। একই সঙ্গে সাহায্য বন্ধসহ সামনের সপ্তাহ থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাও জারি হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আর্ডান আরও বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের এই প্রজন্মের প্রত্যেক নাগরিক মিয়ানমারের অবস্থা দেখে হতাশ। নিউজিল্যান্ডে এখানে বসে আমরা যা পারি করব।’
এদিকে নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নানাইয়া মাহুতা আলাদা বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা মিয়ানমারের সেনা-নিয়ন্ত্রিত সরকারকে সমর্থন করি না। আমরা চাই দেশটিতে আটক হওয়া সকল রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি দেয়া হোক।
এদিকে মিয়ানমারে বিক্ষোভ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে দেশটির সেনা সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং বলেছেন, ‘যারা আইন ভঙ্গ করে বিক্ষোভ করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তবে শিগগিরই নতুন নির্বাচনের আয়োজন করে বিজয়ী দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন দেশটির বর্তমান শাসক ও সেনাপ্রধান।
সোমবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) প্রথমবারের মতো জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন। একই সাথে গত বছরের নভেম্বরের অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ তোলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে দেশটির সাধারণ মানুষ যখন ক্রমেই কঠোর আন্দোলনের দিকে যাচ্ছে, তখনই এমন ঘোষণা দিলেন মিন অং।
ভাষণে মিন অং হ্লাইং বলেন, ‘আগের সময়ের চেয়ে এবারের সামরিক সরকার একেবারেই আলাদা। পূর্বের সামরিক শাসনের তুলনায় এই সামরিক সরকার সত্য ও শৃঙ্খলাবদ্ধ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে।’
উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান হয়। সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী দেশটির নির্বাচিত স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে। সামরিক বাহিনী দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে। একই সঙ্গে তারা দেশটির সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ রাজনীতিক নেতাদের আটক করেছে।
সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারে বিক্ষোভ দানা বাধে। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে দেশটির সেনাবাহিনী ফেসবুক ও টুইটারের পর ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেশটির মানুষ সেনাশাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে আসেন।
এরই ধারাবাহিকতায় দেশটির সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনে সোমবার ১০ হাজারের বেশি মানুষ জান্তা সরকারবিরোধী বিক্ষোভ বের করেন। গণআন্দোলনের তৃতীয় দিনে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি ধীরে ধীরে জটিলের দিকে মোড় নিচ্ছে।
সু চি’র মুক্তি এবং সামরিক সরকার ক্ষমতা না ছাড়লে সামনে বড় ধরনের কর্মসূচির দিকে যাচ্ছে মিয়ানমারের নানা শ্রেণি পেশার মানুষ।
এআই/এসএ/
আরও পড়ুন