আমি আর বেঁচে থাকতে চাইনি: মেগান
প্রকাশিত : ১৬:৫১, ৮ মার্চ ২০২১ | আপডেট: ১৭:০৮, ৮ মার্চ ২০২১
ডাচেস অব সাসেক্স বলেছেন, ব্রিটিশ রাজ পরিবারে তার জীবন এতো বেশি কঠিন হয়ে পড়েছিল যে এক সময় ‘তিনি আর বেঁচে থাকতে চাননি।’ তিনি যখন সাহায্য চেয়েছেন তখন সেটি পাননি।
মার্কিন টিভি ব্যক্তিত্ব অপরা উইনফ্রে’র সাথে একান্ত এক সাক্ষাৎকারে মেগান এ কথা বলেন।
মেগান বলেন, সবচেয়ে খারাপ সময়টি ছিল যখন রাজপরিবারের এক সদস্য হ্যারিকে তাদের ছেলের গায়ের রং নিয়ে জিজ্ঞাসা করেছিল যে সে ‘কতটা কালো’ হতে পারে।
প্রিন্স হ্যারিও বলেছেন যে, তিনি যখন সরে আসতে চেয়েছিলেন, তখন তার বাবা প্রিন্স চার্লসও তার ফোন ধরাও বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
এই দম্পতি বিভিন্ন বিষয় যেমন বর্ণবাদ, মানসিক স্বাস্থ্য, গণমাধ্যমের সাথে তাদের সম্পর্ক এবং রাজপরিবারের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। তারা জানান যে, আসছে গ্রীষ্মে তারা আবার বাবা-মা হতে যাচ্ছেন এবং এই সন্তানটি একটি মেয়ে।
২০২০ সালের মার্চে রাজ পরিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের পর এই দম্পতি ক্যালিফোর্নিয়ায় গিয়ে বসবাস শুরু করেন। গত মাসেই তারা ঘোষণা দেন যে, রাজপরিবারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য হিসেবে তারা আর ফিরবেন না।
মেগান বলেন, একসময় তিনি একাকী বোধ করতে থাকেন যখন তাকে বলা হয় যে, তিনি কী করতে পারবেন আর কী করতে পারবেন না। এমন এক সময় দাঁড়ায় যখন তিনি মাসের পর মাস বাড়ি থেকে বের হননি।
সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে মেগান বলেন, ‘হ্যাঁ। এটা খুব বেশি স্পষ্ট ছিল এবং ভয়ংকর। সেসময় বুঝতে পারছিলাম না যে কার কাছে যাবো।’
‘গর্ভবতী থাকা অবস্থায় হ্যারির সাথে রয়াল অ্যালবার্ট হলে এক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার সময়কার এক ছবির কারণে আতঙ্কবোধ করেছিলেন তিনি। ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে আগে সকালে হ্যারির সাথে এ নিয়ে আলাপ হয়েছিল আমার’ মেগান বলেন।
তিনি বলেন যে, ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন কারণ তিনি আর ‘একাকী’ বোধ করতে চান না। তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, অ্যালবার্ট হলে অনুষ্ঠানের সময় হ্যারি তার হাত শক্ত করে ধরে ছিলেন।
১৯১৭ সালের একটি আইনের কারণে ডিউক এবং ডাচেস অব সাসেক্সের সন্তানরা স্বাভাবিকভাবেই প্রিন্স কিংবা প্রিন্সেস হবেন না, যদি না রানী কোন পদক্ষেপ নেন।
মেগান বলেন, আমার গর্ভবতী থাকার মাসগুলোতে আলোচনা চলছিল যে তাকে সুরক্ষা দেয়া হবে না, তাকে হয়তো কোন পদবী দেয়া হবে না এবং জন্মের পর তার ত্বক কতটা কালো হবে তা নিয়েও উদ্বেগ এবং আলোচনা চলেছে। এসব কথা হ্যারিকে বলা হয়েছিল এবং তার কাছ থেকেই তিনি এসব বিষয় জেনেছেন।
হ্যারি সে বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরতে অসম্মতি জানিয়ে বলেন, ‘ওই আলোচনা আমি কখনোই কাউকে বলবো না। সে সময়ে এটা বেমানান ছিল এবং আমি বিস্মিত হয়েছিলাম।’
তিনি বলেন যে, গণমাধ্যমের কাছ থেকে মেগান যে ধরণের বর্ণবাদের শিকার হয়েছিল, তার বিরুদ্ধে কোন স্বজনই মেগানের পক্ষে কথা বলতে এগিয়ে আসেনি। ওই তিন বছরে আমার পরিবারের কেউই কোন কথা বলেনি। এটা খুবই কষ্টকর।
সাক্ষাৎকারের রাজপরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয় যে, তারা ডিউক এবং ডাচেসকে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। মেগান ওই পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বলেন, ২০১৮ সালের মে মাসে বিয়ের পর ‘সেটি আরও খারাপ হতে থাকে।’
সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্বে স্ত্রীর সাথে যোগ দেয়ার পর হ্যারি পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে তার সম্পর্কের বিষয়গুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন যে, তার দাদীর (রানী) সাথে তার সম্পর্ক খুবই ভাল ছিল। তারা দুজন প্রায়ই কথা বলেন। তবে তার বাবা প্রিন্স অব ওয়েলসের সাথে তার সম্পর্ক তেমন ভাল নেই।
হ্যারি তার ভাই আর বাবাকে রাজপরিবারের ব্যবস্থার ‘ফাঁদে আটকে পড়া’ বলে উল্লেখ করে বলেন, ‘তারা সেখান থেকে বেরুতে পারবে না।’
এএইচ/
আরও পড়ুন