ঢাকা, শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪

‘‘তুই ছাড়া পৃথিবীতে যে আর কেউ রইল না’’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৪২, ২০ মে ২০২১ | আপডেট: ০৯:৪৪, ২০ মে ২০২১

ইসরায়েলি হামলায় আহত পাঁচ মাসের ছোট্ট ওমর আল হাদিদি

ইসরায়েলি হামলায় আহত পাঁচ মাসের ছোট্ট ওমর আল হাদিদি

অব্যাহতভাবেই বিমান হামলা চালিয়ে অবরুদ্ধ গাজায় রীতিমত ধ্বংসলীলা চালিয়েছে হানাদার ইসরায়েল। সেই ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হওয়া হাজারো ফিলিস্তিনের ভিড়ে একরত্তি ওমর আল-হাদিদিও একজন। চার ভাই ও মা-কে হারিয়েও বাবার একমাত্র অবলম্বন হয়ে বেঁচে আছে সে।

ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র একসঙ্গে কেড়ে নিয়েছে ছোট্ট ওমরের মা আর চার ভাইকে। শিশুদের বয়স ১৩ থেকে ৬-এর মধ্যে। পাঁচ মাসের এই শিশুটিও শিকার হয়েছে মারাত্মক জখমের। তার ছোট্ট পায়ের তিন জায়গায় ভেঙে গেছে। চোখের পাতাগুলো রক্ত জমে কালচে গাঢ় লাল রং। নিথর মায়ের জড়ানো দু’টো হাতের মধ্যে থেকে উদ্ধার করা হয় তাকে।

ইন্টারনেটের সৌজন্যে হাসপাতালের নার্সদের কোলে একরত্তি শিশুটির রক্তাক্ত ছবি দেখে ফেলেছে গোটা দুনিয়া। ওমরের বাবা, মোহম্মাদ আল-হাদিদি গাজার একটি হাসপাতালের বিছানার ধারে বসে বিলাপ করে চলেছেন, ‘‘তুই ছাড়া এই পৃথিবীতে আমার যে আর কেউ রইল না।’’

ঈদের ঠিক পরেই গত শনিবার (১৫ মে) ভোর রাত থেকে ইসরায়েলি সেনাদের একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র নিশানা করেছিল গাজার বহুতলগুলোকে। ঈদ উপলক্ষে ওমরদের নিয়ে এক চাচার বাড়িতে গিয়েছিলেন তার মা। 

৩৭ বছরের মোহম্মাদ আল হাদিদি বলেছিলেন, ‘‘নতুন পোশাক পরে হাতে খেলনা নিয়ে আমার ভাইয়ের বাড়িতে গিয়েছিল ছেলেরা। রাতে বায়না করল ওখানেই থেকে যাওয়ার। আমিও বাধা দেইনি। ভোর রাতে একটা ফোনে ঘুম থেকে উঠে পড়ি। ওই এলাকাতেই পর পর বোমা পড়ছে। পৌঁছে দেখি গোটা বাড়িটাই ধ্বংসস্তূপ। আমার স্ত্রী আবু হত্তাব (৩৬) আর চার ছেলে সুহায়েব (১৩), ইয়াহিয়া (১১), আবদের রহমান (৮) এবং ওসামা (৬) শেষ হয়ে গিয়েছে চাপা পড়ে। ভাইয়ের স্ত্রী আর বাচ্চারাও বেঁচে নেই। বাকি ভাইদের মতো হয়নি ছোট্ট ওমর, সে প্রথম থেকেই মায়ের দুধ খেত না। আল্লাহ ওকে ওই জন্যই এভাবে তৈরি করেছেন হয়তো।’’

প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে চলা ইসরায়েল-হামাস সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২২৭ জন সাধারণ মানুষের। যার মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই ৬১। ধ্বংসস্তূপের আনাচে কানাচে এখনও চাপা পড়ে আছে অনেক শিশু, যাদের বেঁচে থাকার আশাটা ক্ষীণ। একশোরও বেশি হামাস যোদ্ধাকে মেরেছে ইসরায়েলি সেনারা। গত কয়েক দিনে হামাস তাদের দিকে শত শত রকেট ছুড়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে এখনও পর্যন্ত মারা গেছে ১২ জন। 

এদিকে আজও অব্যাহত রয়েছে ইসরায়েলের আক্রমণ। আজ সকাল থেকেই গাজা ভূখণ্ডে বিমান-হামলা জারি রেখেছে তারা। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার ভোর রাতে ইসরায়েলের হামলায় গুঁড়িয়ে গেছে গাজার একমাত্র কোভিড পরীক্ষাকেন্দ্রটি। এর ফলে সেখানকার মানুষের করোনা পরীক্ষা নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সূত্র- এনডিটিভি

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি