করোনায় বিধ্বস্ত মালয়েশিয়ায় বিধিনিষেধ তুলে নেয়ায় ক্ষোভ
প্রকাশিত : ১৬:৩০, ২৯ জুলাই ২০২১ | আপডেট: ১৬:৩৩, ২৯ জুলাই ২০২১
মালয়েশিয়ায় এখন দিনে ১৪ হাজারের এরও বেশি মানুষের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ করোনাভাইরাস শনাক্ত হচ্ছে। সংক্রমণ বাড়ার এমন পরিস্থিতির মধ্যে জরুরি বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে মালয়েশিয়ার সরকার। এ খবর বিবিসি বাংলা’র।
দেশটি বর্তমানে জরুরি অবস্থার মধ্যে রয়েছে, যা পহেলা আগস্টে শেষ হবে। বলা হচ্ছে, এই জরুরি অবস্থা আর বাড়ানো হবে না। গত সপ্তাহে এই বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। তবে সে বিষয়ে অবহিত করা হয়নি বিরোধী নেতাদের। এই সিদ্ধান্তের ফলে জনগণের উপর কেমন প্রভাব পড়বে, তারা সেটা তা জানতে চেয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দেশটির সংসদীয় অধিবেশন চলার সময় ডেমোক্র্যাটিক অ্যাকশন পার্টির ডেপুটি চেয়ারম্যান গোবিন্দ সিং প্রশ্ন রাখেন ‘আমাদের কেন জানানো হয়নি? এটা কার সিদ্ধান্ত ছিল?’
দেশটির হাসপাতালগুলোতে মানুষের ভিড়ে তিল ধারণের জায়গা নেই। সাম্প্রতিক এক ছবিতে দেখা গেছে রোগীরা চেয়ারে বসে অক্সিজেন সিলিন্ডার ভাগ করে ব্যবহার করছেন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিও করোনাভাইরাসের ভয়াবহ সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের আঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দেশটিতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে। মালয়েশিয়ায় এখন দিনে ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ করোনাভাইরাস শনাক্ত হচ্ছে। মঙ্গলবার রেকর্ড সংখ্যক ২০৭ জনের মৃত্যু হয়।
বিপুল সংখ্যক রোগী সামাল দিতে না পারে হাসপাতালগুলো রোগীদের ফিরিয়ে দিচ্ছে। এমনকি ভর্তি হওয়া রোগীদের জন্য শয্যা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। সোমবার দেশটির হাসপাতাল এবং চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোর কয়েকশ’ জুনিয়র চিকিৎসক চাকরি স্থায়ীকরণ ও উন্নত পরিবেশের দাবিতে ওয়াক আউট করেন।
যারা মরদেহের সৎকার করেন এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সংশ্লিষ্ট কর্মীরা স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেছেন যে, তারা কোভিড-১৯তে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের লাশ সৎকারের জন্য অসংখ্য কল পাচ্ছেন, যাদের মধ্যে অনেকে বাড়িতেই মারা গেছেন।
কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, বর্তমান জরুরি ব্যবস্থাও ‘আধাসেদ্ধ’ অবস্থা। ফলে পরিস্থিতি এমন যে এই বিধিনিষেধ কোন কাজে আসছে না।
এদিকে বিধিনিষেধের কারণে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে দিনমজুর এবং নিম্নআয়ের পরিবারগুলোর বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে। তাদের কেউ কেউ সাহায্যের আবেদন জানাতে ঘরের বাইরে সাদা পতাকা উড়িয়েছেন।
মানুষের সঞ্চয় ফুরিয়ে আসছে। এমন অবস্থায় অনেকে দিনে একবেলা খাবার খেয়ে টিকে আছেন। মানুষের এমন সংবেদনশীল খবরগুলো সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির গণমাধ্যমে উঠে আসছে।
উল্লেখ্য, দেশটিতে এখন পর্যন্ত দশ লাখেরও বেশি মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে এবং এতে মারা গেছেন প্রায় ৮ হাজার মানুষ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন সংক্রমণের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি, কারণ পরীক্ষার হার কম।
এএইচ/
আরও পড়ুন