ঢাকা, বুধবার   ০৯ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

মালয়েশিয়ায় পাসপোর্ট পেতে ভোগান্তি চরমে

মালয়েশিয়া প্রতিনিধি: 

প্রকাশিত : ১৭:০৪, ৩০ জুলাই ২০২১

Ekushey Television Ltd.

পাসপোর্ট পেতে চরম ভোগান্তিতে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের। যতই দিন যাচ্ছে ভোগান্তির মাত্রা যেন বৃদ্ধি পাচ্ছে।  প্রবাসীদের অভিযোগ, আবেদনের পর দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও মিলছে না কাঙ্খিত পাসপোর্ট। কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন ৪ থেকে ৫ মাস হয়ে গেলেও পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছেন না। একদিকে চলমান মহামারি করোনায় আইনী জটিলতায় কর্মহীন প্রবাসীরা, অন্যদিকে সময়মত পাসপোর্ট না পাওয়ায় ভিসা রিনিউ থেকে শুরু করে নতুন করে অবৈধদের বৈধ হওয়ার সুযোগে অংশ নিতে দেখা দিয়েছে জটিলতা। 

অবৈধদের বৈধতার (রিক্যালিব্রেশন) মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত । সুতরাং পাসপোর্ট জটিলতার নিরসন না হলে অনেকেই হারাবে বৈধ হওয়ার সুযোগ এবং হয়ে যাবে পুনরায় অবৈধ। 
অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন, সময় মতো পাসপোর্ট জটিলতা সমস্যার  সমাধান না হলে অন্তত লাখের অধিক কর্মী এবারও অবৈধ হয়ে পড়বেন। 

জানা গেছে, লকডাউনের কারণে গত এক মাসের অধিক সময় ধরে দূতাবাস থেকে সরাসরি পাসপোর্ট বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সম্প্রতি পাসপোর্ট শাখার কয়েকজন কর্মী করোনায় আক্রান্ত ও একজনের মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে সরাসরি পাসপোর্ট বিতরণ বন্ধ রাখা হয়। বিকল্প হিসেবে এই সময়ে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাসপোর্ট বিতরণ করা হলেও তা যথেষ্ট নয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাসপোর্ট পেতে হলে কয়েক ধাপে অনলাইনে নিবন্ধন বা এ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হয়। আগে যেখানে আমপাং পাসপোর্ট অফিস থেকে দৈনিক ৯০০ থেকে ১১০০ পাসপোর্ট বিতরণ করা হতো বর্তমানে সরাসরি বিতরণ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় পাসপোর্ট পেতে প্রবাসীদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে।  অনেকেই অভিযোগ করেছেন ৪/৫ মাসেরও বেশি সময় পার করেও তারা পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছেন না। 
নারায়নগঞ্জের মো: মোস্তাক আহমেদ বলেন, ৬ মাস আগে পাসপোর্ট রিনিউয়ের আবেদন করেছেন, এ্যাপয়েন্টমেন্ট ও বারকোড নিতে গেলে এরোর আসে। আবার এ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে গেলে আজকের কোটা পূরণ হয়ে গেছে পরবর্তীতে আবার চেষ্টা করুন। কবে নাগাদ হাতে পাসপোর্ট পাবেন সংশয়ে রয়েছেন।

কুমিল্লা দেবিদ্দার এর জালাল উদ্দীন জানান, নতুন পাসপোর্টের জন্য জুন মাসে আবেদন করেছি এখনো এনরোলমেন্ট হয়নি। এ সব বিষয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনের দূতালয় প্রধান ও প্রথম সচিব রাজনৈতিক, রুহুল আমিন এই প্রতিবেদককে বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বাংলাদেশ হাই কমিশনের সেবা কার্যক্রম চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর মাঝেও হাই কমিশন প্রবাসীদের কাছে দ্রুত পাসপোর্ট পৌঁছে দেবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মালয়েশিয়া দীর্ঘমেয়াদী লকডাউনের কারণে প্রবাসীরা যথাসময়ে পাসপোর্ট পেতে বেগ পেতে হচ্ছে, তদুপরি  অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে ।

সম্প্রতি পাসপোর্ট কার্যক্রম আরো গতিশীল করা হয়েছে, যার সুফল ইতিমধ্যে প্রবাসীরা পেতে শুরু করেছেন। প্রবাসীরা তাদের নিকটস্থ পোস্ট অফিসের  মাধ্যমে পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছে। গত ৬/৭ মাসে হাইকমিশন প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার নতুন পাসপোর্ট বিতরণ করেছে। আগামী দিনগুলোতেও প্রবাসীদের প্রযুক্তি-নির্ভর আধুনিক এবং নতুন নতুন সেবার মাধ্যমে বাংলাদেশ হাইকমিশন উদাহরণ সৃষ্টি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ বিষয়ে হাইকমিশন সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে।

মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের  রাষ্ট্রদূত গোলাম সারোয়ার বলেন, করোনা মহামারীর মধ্যে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে জীবনের ঝুকি নিয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রবাসীদের নিরবিচ্ছিন্ন সেবা প্রদানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে দুতাবাসের অর্ধেকের মত কর্মকর্তা/কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যগন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন এবং একজন কর্মচারী অকালে মৃত্যু বরন করেছেন। কিন্তু প্রবাসী ভাই-বোনদের সেবার স্বার্থে  দূতাবাস একদিনের জন্যও বন্ধ রাখা হয়নি। সুতরাং দূতাবাসের প্রতি আস্থা রাখুন এবং মুষ্টিমেয় কিছু স্বার্থান্বেসী সুবিধাবাদীর অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান জানিয়েছেন দূতালয় প্রধান গোলাম সারোয়ার।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি