মার্কিন বিমানে জন্ম নেয়া আফগান শিশুর নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন
প্রকাশিত : ০৯:১৩, ২৩ আগস্ট ২০২১
আফগান প্রসূতিকে বিমান থেকে নামিয়ে আনা হচ্ছে
আফগানিস্তান থেকে পালানোর পথে এক নারী যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ধারকারী সামরিক বিমানে সন্তান প্রসব করেন। ওই আফগান প্রসূতি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লাইটে কাবুল থেকে কাতার হয়ে জার্মানির রামস্টিন বিমান বন্দরে যাচ্ছিলেন। পথে তার প্রসব বেদনা শুরু হয়। তবে আকাশে জন্ম নেয়া ওই শিশুর জাতীয়তা কী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
তার পরিস্থিতি সংকটজনক হয়ে পড়লে পাইলট বিমানের ‘উচ্চতা কমিয়ে আনেন যাতে বিমানের কেবিনের ভেতরে বাতাসের চাপ বাড়িয়ে প্রসূতির জীবনরক্ষা সম্ভব হয়।’ বিমানটি অবতরণের পর রামস্টিন বিমানবন্দরে মার্কিন সামরিক চিকিৎসা কর্মীরা ওই নারীকে সন্তান প্রসবে সহায়তা করেন।
এরপর মা ও নবজাত কন্যা শিশুকে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। দু'জনেই সুস্থ আছেন। তবে আকাশে জন্ম নেয়া ওই শিশুর জাতীয়তা কী হবে তা নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। কেউ কেউ বলছেন, শিশুটি যেহেতু মার্কিন পতাকাবাহী এবং যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধন করা সামরিক বিমানে জন্মগ্রহণ করেছে সেজন্যে তার মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়া উচিত।
আরেক পক্ষ বলছেন, যেহেতু বিমানটি জার্মানিতে অবতরণের পর শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয়েছে। তাই জার্মান নাগরিকত্বই তার প্রাপ্য।
স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী শিশুর নাগরিকত্ব নির্ধারিত হয়ে থাকে তার মায়ের এবং বাবার নাগরিকত্ব অনুযায়ী। যাকে বলে ‘জুস স্যাংগুইনিস (রক্তের অধিকার)। কিন্তু কোন কোন দেশ তার সীমানার মধ্যে শিশুর জন্ম হলে তাকে নাগরিকত্ব দেয়। যুক্তরাষ্ট্রেও এই নিয়ম রয়েছে।
তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ফরেন অ্যাফেয়ার্স ম্যানুয়াল অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ভৌগলিক সীমানার বাইরে যে কোন স্থান যেমন দূতাবাস, কনসুলেট, সামরিক বিমান কিংবা ঘাঁটি ইত্যাদিতে জন্ম নিলেও কোন শিশু মার্কিন নাগরিকত্বের অধিকারী হবে না। যদি না তার পিতামাতার অন্তত একজনের মার্কিন নাগরিকত্ব থাকে।
তবে এই ম্যানুয়াল অনুযায়ী আমেরিকার সীমান্তের ভেতরে ১২ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে কোন শিশুর জন্ম হলে তাকে নাগরিকত্ব দেয়ার বিধান রয়েছে। একে বলে ‘জুস সলি’ বা ভূমির অধিকার।
কিন্তু অন্যান্য দেশে যেমন জার্মানিতে এই অধিকার নেই। সে দেশের নাগরিকত্ব পেতে হলে পিতা-মাতার অন্তত একজনের জার্মান নাগরিকত্ব থাকতে হবে এবং অন্যান্য বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে।
আর শরণার্থী শিশুর নাগরিকত্বের বিষয়টি একেক দেশে একেক আইন ব্যবহার করা হয়। সূত্র: বিবিসি বাংলা।
এএইচ/
আরও পড়ুন