গণমাধ্যমের স্বাধীনতা শেষ : আফগান সাংবাদিক
প্রকাশিত : ০৯:৪৭, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১ | আপডেট: ২০:২০, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রতিকী ছবি
আফগানিস্তানের এক প্রবীণ সাংবাদিক তার টুইটারে বলেছেন, দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা শেষ হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার দুই আফগান সাংবাদিকের ওপর তালেবানের নির্যাতনের একটি ছবি ভাইরাল হওয়ার পর এই পোস্ট দেন তিনি।
বুধবার রাজধানী কাবুলে নারী অধিকার নিয়ে চলমান আন্দোলনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দুই আফগান সাংবাদিককে আটক করে তালেবান সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। এরপর তাদের ওপর নির্মম বেত্রাঘাত করা হয়।
নির্যাতনের শিকার দুই সাংবাদিক নকদি এবং তাকি দরিয়াবি জানান, একজন তালেবান পা দিয়ে মাথা চেপে ধরে এবং কৃক্রিটের সাথে মুখ পিষে দেয়। এরপর মাথায় লাথি মারে। নকদি বলেন যে, তিনি ভেবেছিলেন তাকে মেরে ফেলা হচ্ছে। এসময় দুই সাংবাদিককে উদ্দেশ্য করে তালেবান বলে যে, তোমাদের ভাগ্য ভালো, তোমাদের শিরোশ্ছেদ করা হয়নি।
এই নির্যাতনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে, আন্তর্জাতিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং সাংবাদিক সুরক্ষা কমিটি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সিপিজের রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই সপ্তাহের মাত্র দুই দিনে, কাবুলে নারী আন্দোলনের খবর সংগ্রহ করতে যাওয়া ১৪ জন সাংবাদিককে আটক করেছে তালেবান।
সিপিজের এশিয়া প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী স্টিভেন বাটলার বলেন, আফগানিস্তানের গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে এবং নিরাপদে পরিচালনার জন্য যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো তালেবান তা যে মূল্যহীন তার প্রমাণ মিলেছে গেলো কয়েকদিনের ঘটনায়। তারপরেও তিনি আবারও, গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়ার জন্য তালেবানের প্রতি আহ্বান জানান।
একই সুরে কথা বলেছেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সহযোগী এশিয়া পরিচাল প্যাট্রিসিয়া গসম্যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিনিয়র সাংবাদিক গার্ডিয়ানকে বলেন, তালেবান শীর্ষ নেতারা, যারা গণমাধ্যম কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ্যে কথা বলছেন তাদের সাথে মাঠে থাকা তালেবান বাহিনীর কাজে ও কথায় কোনো মিল নেই।
মাঠে থাকা তালেবান বাহিনী তাদের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশ না মেনে, দেশের সাধারণ জনগণের সাথে কঠোর আচরণ করছে।
এদিকে এরইমধ্যে দেশটিতে নারীদের ক্রিকেটসহ সব ধরনের খেলা নিষিদ্ধ করেছে সংগঠনটি। তালেবানের এই পদক্ষেপে উদ্বেগ জানিয়ে জাতিসংঘ বলেছে, সংগঠনটি নারীদের অধিকার সংরক্ষণের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা থেকে ক্রমেই সরে যাচ্ছে।
১৫ আগস্ট কাবুল দখল করে তালেবান। তার তিন সপ্তাহ পর মঙ্গলবার আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করে তারা। এই সরকারের মন্ত্রিসভায় কোনো নারী নেই। এর প্রতিবাদে বুধবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলসহ একাধিক স্থানে বিচ্ছিন্ন বিক্ষোভ হয়। এসব বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই ছিলেন নারী।
কাবুলে নারীদের একটি বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দেয় তালেবানের নিরাপত্তা বাহিনী। কাবুলের পাশাপাশি ফাইজাবাদেও বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করার কথা জানা যায়।
কাবুল দখলের পর তালেবানের সরকার গঠনের আগেও একাধিক দিন দেশটির বিভিন্ন স্থানে নারী-পুরুষের বিচ্ছিন্ন বিক্ষোভ হয়। এসব বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে তালেবান ছিল মারমুখী।
সূত্র : গার্ডিয়ান
এসবি/
আরও পড়ুন