মুক্তি পেলেন হুয়াওয়ের নির্বাহী কর্মকর্তা
প্রকাশিত : ১১:১১, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ | আপডেট: ১১:১২, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
হুয়াওয়ের নির্বাহী কর্মকর্তা মেং ওয়ানঝু
কয়েক বছরের কূটনৈতিক টানাপোড়েন শেষে মুক্তি পেয়েছেন চীনের প্রযুক্তি কোম্পানি হুয়াওয়ের নির্বাহী কর্মকর্তা মেং ওয়ানঝু। প্রতারণার অভিযোগে কানাডায় আটক ছিলেন তিনি। মেং ওয়ানঝুর মুক্তির পরপরই চীনে আটকাবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছেন দুই কানাডিয়ান নাগরিক। এ খবর বিবিসি’র।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ জানিয়েছে, তারা মামলা স্থগিতের একটি চুক্তিতে পৌঁছেছেন। এর মানে হলো, মেং-এর বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মামলার কার্যকলাপ স্থগিত রাখতে চায় বিচার বিভাগ। এর মধ্যে আদালতের নির্ধারিত শর্তগুলো যদি তিনি মেনে চলেন, তাহলে পুরো মামলাই বাতিল করা হতে পারে।
প্রতারণা সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগের পর মেং ওয়ানঝুকে আটক করেছিল কানাডা। গত তিন বছর ধরে তিনি ভ্যাঙ্কুভারে তার পিতার মালিকানাধীন একটি বাড়িতে গৃহবন্দী অবস্থায় ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কৌসুঁলিদের সঙ্গে একটি সমঝোতার পর তিনি নিজ দেশ চীনে ফিরে গেছেন। একই সঙ্গে চীনে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক থাকা দুই কানাডিয়ান নাগরিককে মুক্তি দেয়া হয়েছে। তারাও এখন কানাডার পথে রয়েছেন।
মেং হচ্ছেন হুয়াওয়ের প্রতিষ্ঠাতা রেন জেনফেং-এর মেয়ে। যিনি ১৯৮৭ সালে হুয়াওয়ে প্রতিষ্ঠা করেন। কোম্পানিটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় টেলিকম প্রযুক্তি উৎপাদক প্রতিষ্ঠান।
এই মামলার কারণে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়। এরপর অভিযোগ ওঠে পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে কানাডার নাগরিকদের আটক করেছে চীন। যদিও দেশটি সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কানাডার আটকাবস্থা থেকে মুক্তির পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মেং ওয়ানঝু। তিনি বলেন, ‘আমার জীবন পুরোপুরি উল্টেপাল্টে গেছে। এটা আমার জন্য একটা বিপর্যয়কর সময় ছিল।’
এএফপি জানিয়েছে, মুক্তির পরপরই তিনি চীনের শেনজেনগামী এয়ার চায়নার একটি বিমানে করে কানাডা ছেড়ে যান।
তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ ছিল, তিনি ইরানের ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে ফাঁকি দিয়ে হুয়াওয়ের ব্যবসা সম্পর্কে আমেরিকান ব্যাংকগুলোকে মিথ্যা বলেছিলেন। তবে মেং এবং হুয়াওয়ে উভয়েই ওই অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এদিকে, মেং ওয়ানঝুর মুক্তির পরপরই চীনে আটকাবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছেন দুই কানাডিয়ান নাগরিক। মেংকে কানাডা গ্রেপ্তার করার পরপরই ২০১৮ সালে মাইকেল স্পাভোর এবং মাইকেল কোভরিগকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে চীন গ্রেপ্তার করেছিল।
সংবাদ সম্মেলনে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, এই দুজন ‘অবিশ্বাস্য রকম কঠিন অবস্থার ভেতর দিয়ে গেছেন।’ চীনে কানাডার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে একটি বিমানে করে শনিবার সকালে (কানাডার সময়) তারা দেশটিতে পৌঁছবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সাবেক কূটনৈতিক মি. কোভরিগ ব্রাসেলসভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের একজন কর্মকর্তা। আর স্পাভোর একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, যারা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আন্তর্জাতিক ব্যবসা এবং সাংস্কৃতিক যোগাযোগের কাজ করে থাকে।
গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে এ বছরের মার্চে স্পাভোরকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল চীনের একটি আদালত। অন্যদিকে কোভরিগের সাজা এখনো ঘোষণা করা হয়নি।
এএইচ/
আরও পড়ুন