ঢাকা, শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চীন থেকে চলে যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:১০, ২৬ অক্টোবর ২০২১

দক্ষিণ কোরিয়ার জাহাজ নির্মাণ জায়ান্ট স্যামসাং হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ (এসএইচআই) সম্প্রতি চীনের পূর্বাঞ্চলীয় ঝেজিয়াং প্রদেশে তার নিংবো প্ল্যান্ট বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।

শিল্প পুনর্নবীকরণের জন্য চীনের স্থানীয় সরকারের কাছে জমি হস্তান্তরে রাজি হওয়া এবং দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকদের বিক্ষোভের পর প্লান্ট বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

স্যামসাং হেভি ইন্ডাস্ট্রিজের দুটি প্লান্ট রয়েছে চীনে। একটি এসএইচআই নিংবো এবং অপরটি এসএইচআই রঙচেং। ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে নিংবো সামুদ্রিক ও গৃহস্থ জাহাজ নির্মাণের জন্য লোহার কাঠামোর সঙ্গে জাহাজের ব্লক তৈরির কাজ করে আসছে। প্রতি বছর এটি ২ লাখ ব্লক উৎপাদন ও সরবরাহ করে।

এশিয়ান জাহাজনির্মাণ শিল্পে ব্যাপক পরিবর্তনের মধ্যে প্লান্ট বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে স্যামসাং। হাজারো শ্রমিক চীনে প্লান্টের বাইরে তাদের ছাটাইকৃত বেতনের জন্য বিক্ষোভ করেছে। একটি চিঠিতে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, করোনা মহামারির কারণে ব্যবসার গুরুতর ক্ষতি হয়েছে। কর্মচারীদের উদ্দেশে দেওয়া চিঠিতে স্যামসাং সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রত্যেক এক বছরের পূর্ণ কর্মসংস্থানের জন্য এক মাসের বেতন প্রদান করবে স্যামসাং। এ ছাড়া এক মাসেরও বেশি বেতন ও দুই মাসের জন্য পুনরায় চাকরিতে যোগদানে সহায়তা দিবে প্রতিষ্ঠানটি। যাকে বলা হচ্ছে ‘এন+৩’ ক্ষতিপূরণ।

স্যামসাংয়ের নিংবো ইয়ার্ড চীনের রাসায়নিক শিল্প এলাকায় অবস্থিত। স্থানীয় সরকার এই এলাকায় রাসায়নিক শিল্প সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে এবং রাসায়নিক শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো নিংবোর দখলকৃত ২০০ একর জায়গাটিতে আগ্রহী হয়েছে।

স্যামসাং অন্য একটি চাইনিজ জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করেছে, তবে ট্রেডমার্ক ইস্যুর কারণে উভয়পক্ষ কোনো চুক্তিতে আসতে পারেনি। স্থানীয় সরকারের তথ্য মতে, নিংবো স্যামসাংয়ের সঙ্গে একটি  চুক্তি করেছে শিপইয়ার্ডের জমি ফিরে পেতে। গত আগস্টে স্থানীয় সরকার বলেছে, কুইনঝি কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের জন্য জমি অধিগ্রহণ করছে তারা। কারণ পার্কের কিছু নন-রাসায়নিক উদ্যোগ বর্তমান জাতীয় শিল্প নীতির সঙ্গে খাপ খায় না এবং উল্লেখযোগ্য সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে।

২০১৯ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার দেশের জাহাজ নির্মাণ এবং জাহাজ শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করার পরিকল্পনা তৈরি করেছে। এটি বিশ্বের বৃহত্তম জাহাজ নির্মাতা তৈরির জন্য হুন্দাই হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ডেইউ শিপবিল্ডিংকে একীভূতকরণের পদক্ষেপ নিয়েছে।

হাডসন ইনস্টিটিউটের ফেলো ডা সাতোরু নাগাও বলেছেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতি চীনের বাজারের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল হওয়া সত্ত্বেও, দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিগুলো তাদের কারখানা স্থানান্তর করতে শুরু করেছে। এই ধরনের একটি পদক্ষেপ ২০১০ সালের শেষ দিকে লক্ষ্য করা গেছে এবং পরবর্তীতেও তা অব্যাহত ছিল।

তিনি আরও বলেন, ‘এই সময়টির কারণ আছে। ২০১৭ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রকে অন্তর্ভুক্ত করার পরই চীন কোরিয়ার কোম্পানিগুলোর প্রতি দুর্ব্যবহার করা শুরু করেছে।’

নাগা উল্লেখ করেন, স্যামসাং চীনের প্রতিশোধের একটি সহজ লক্ষ্যবস্তু হতে পারে। মার্কিন-চীন ‘উচ্চ প্রযুক্তির যুদ্ধ’ শুরু হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন থেকে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল প্রকাশের পরই এটি শুরু হয়। জো বাইডেন প্রশাসনও এই নীতিগুলি অব্যাহত রেখেছে। সূত্র : ইকোনোমিক টাইমস

এসি
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি