রাস্তায় ফেলে যুবকের বুকে-পিঠে লাথি পুলিশের
প্রকাশিত : ১১:২২, ৮ নভেম্বর ২০২১
এক যুবককে রাস্তায় ফেলে বুকের উপরে বুট পরা পা দিয়ে ঠেসে ধরেছেন সবুজ রঙের পোশাক পড়া পুলিশ। মাটিতে পড়ে থাকা যুবক বার বার নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছেন। আর মাটিতে শুইয়ে রাখতে বার বার বুকে-পিঠে লাথি মারছেন ওই ‘গ্রিন পুলিশ’।
ঘটনাটি কলকাতার। রোববার সন্ধ্যায় রবীন্দ্র সদনের এক্সাইড মোড়ে ঘটনাটি ঘটে। এই দৃশ্য ভিডিও রেকর্ডিং করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেন অনেকে। যার জেরে ধরে শুরু হয় তীব্র সমালোচনার ঝড়।
এক্সাইড মোড়ে তখন ডিউটি করছিলেন তন্ময় বিশ্বাস নামে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার। তন্ময় নিজে অকপটে ঘটনার কথা স্বীকার করেও নেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্য পুলিশকর্মীরা জানান, এদিন সন্ধ্যায় এক্সাইড মোড় থেকে হাওড়াগামী একটি চলন্ত বাস থেকে মহিলার ব্যাগ ছিনতাই করেছিলেন ওই যুবক। বাস থেকে নেমে পালাতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়ে মার খাচ্ছিলেন যুবক।
গ্রিন পুলিশ তন্ময় প্রথমে তাকে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করেন। তখন ওই যুবক পালানোর চেষ্টা করতেই তাকে আটকানোর চেষ্টা করেন তন্ময়। সেই কারণেই ফুটপাথে ফেলে পা দিয়ে ঠেসে ধরেছিলেন।
এ দৃশ্য দেখে শিউরে উঠে গোটা কলকাতা মহানগর।
ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, যে অপরাধই ওই যুবক করুন না কেন, ধরা পড়ার পরে এমন অমানবিকভাবে পা দিয়ে ঠেসে ধরে মারধর করতে হবে কেন? কেন তাকে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হল না?
অভিযুক্ত তন্ময়ের যুক্তি, ‘‘সেই সময় ওই যুববকে সামলানো যাচ্ছিল না। নেশাগ্রস্ত ওই যুবকের গায়ে ভীষণ জোর। তাই বাধ্য হয়েই তার বুকে পা দিয়ে কোনও মতে আটকে রাখা হয়েছিল।’’
তবে তন্ময়ের কথার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই। দেখা যায় ফুটপাতে জবুথবু অবস্থায় পড়েছিলেন ওই যুবক। মুখ দিয়ে অস্ফুট কিছু শব্দ করছিলেন। কোনও কথাই স্পষ্টভাবে বলতে পারছিলেন না তিনি। এমনকি নিজের নামও নয়। কুঁকড়ে থাকা ওই যুবককে দেখে অবশ্য মনে হয়নি, তিনি প্রবল শক্তিধর।
এদিকে কলকাতা পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র বলেন, ‘‘আমি ঘটনাটি দেখে বিব্রত। ঘটনার জন্য দুঃখিত। রাতেই ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই সময়ে ওখানে ডিউটিতে থাকা ট্রাফিকের সমস্ত অফিসারদের আমার অফিসে ডেকে পাঠিয়েছি। তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কী করে এই অমানবিক ঘটনা ঘটল, তা জানতে চাওয়া হবে। অফিসারদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য তদন্ত হবে।’’
সূত্র: আনন্দবাজার
এএইচ/
আরও পড়ুন