ঢাকা, সোমবার   ৩১ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

স্ত্রীকে ভুল ওষুধ খাইয়ে হত্যা!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৫৮, ২৭ ডিসেম্বর ২০২১

Ekushey Television Ltd.

স্ত্রীকে খুন করেই আত্মহত্যা করেছেন স্বামী। ভারতের কলকাতার হাওড়ার চ্যাটার্জী হাটের মাইতি দম্পতির অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় এই দাবিই ক্রমশ জোরালো হয়ে উঠছে।

বিয়ের আগে মিথ্যাচার, তারপর সন্দেহের জেরে স্ত্রীকে কার্যত ঘরবন্দি করে রাখা, এমনকি ভুল ওষুধ খাইয়ে অসুস্থ করে তোলারও অভিযোগ ওঠে মৃত স্বামীর বিরুদ্ধে। আর এই অভিযোগ এনেছে খোদ দম্পতির কিশোরী মেয়ে মৌরুসি।

মা যে কী নিপীড়ন সহ্য করত, তা বুঝতে পেরেছিল নবম শ্রেণির পড়ুয়া মৌরুসিও। তাই বিয়ের সময় থেকে মায়ের নিপীড়নের কাহিনীও পুলিশের কাছে তুলে ধরতে পিছপা হয়নি হঠাৎ করে কার্যত অনাথ হয়ে পড়া এই মেয়েটি।

স্ত্রীর ফেসবুক করা নিয়ে যে মাইতি দম্পতির মধ্যে অশান্তি লেগে থাকত এবং পানশালায় কর্মরত গৌতম মাইতি তার স্ত্রী মৌসুমীকে সন্দেহ করতেন তা প্রতিবেশীদেরও অজানা ছিল না। তবে গৌতমবাবু যে স্ত্রীকে ভুল ওষুধ খাইয়েছিলেন এবং তাদের মধ্যে মারধরও হত তা জানিয়েছে মৌরুসি। 

পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে কিশোরী জানিয়েছে, তার মা-ই তাদের দুই বোনকে দেখাশোনা করতেন এবং তাদের সঙ্গে ঘুমোতেন। বাবা অনেক রাতে ফিরতেন। পান থেকে চুন খসলেই বাবা-মায়ের মধ্যে অশান্তি হত। মৌরুসির কথায়, ‘দুজনের মারামারি হত। আমি বারণ করতাম। কিন্তু বাবা কোনও কথা শুনত না। মায়ের থাইরয়েড ও মুখে স্কিনের সমস্যা ছিল। দামী প্রসাধনী কিনতে হত। এর জন্য টাকা খরচ হচ্ছে বলে কথা শোনাত বাবা।’

মায়ের কাছ থেকে মৌরুসি জানতে পেরেছে, দেখাশোনা করেই তাদের বাবা, মায়ের বিয়ে হয়। গৌতম নিজেকে প্রোমোটার বলে পরিচয় দিয়ে নিজস্ব ফ্ল্যাট আছে বলেছিলেন। কিন্তু বিয়ের পর মৌসুমীদেবী জানতে পারেন, সবই ফক্কা! এই নিয়েই তাদের মধ্যে অশান্তির সূত্রপাত। তারপর শিক্ষিত মৌসুমীদেবী চাকরি করতে চাইলেও স্বামীর অনুমতি মেলেনি। এমনকি ফেসবুক করতেন বলে গৌতমবাবু তাকে সন্দেহ করতেন। 

এমনকি গৌতমবাবু স্ত্রীকে ভুল ওষুধ খাইয়ে অসুস্থ করে দিয়েছিলেন বলেও বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছে মৌরুসি। তার কথায়, ‘যোগব্যায়াম, হাঁটাহাঁটি করে মা রোগা হয়ে গিয়েছিল। হঠাৎ করে আবার মোটা হয়ে যায়। তখনই মা বলেছিল, বাবা ইচ্ছে করে ভুল ওষুধ খাওয়াত।’

তবে একেবারে মা-কে খুন করে বাবা আত্মঘাতী হতে পারেন বলে ভাবতে পারছে না মৌরুসি। এখন তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া ছোট বোনকে নিয়ে সে কী করবে, কে দেখবে তাদের, কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না বছর ১৫-র এই কিশোরী। সজল চোখে কেবল একটা কথাই আউড়ে যাচ্ছে, ‘আমাদের কথা কেউ ভাবল না।’ আপাতত মাসির বাড়িতেই ঠাঁই হয়েছে দুই বোনের।

উল্লেখ্য, রবিবার দুপুরে নন্দলাল মুখার্জী লেনে নিজের ফ্ল্যাটেই গৌতম মাইতির ঝুলন্ত দেহ ও ঘরের মেঝে থেকে মৌসুমী মাইতির নিথর দেহ উদ্ধার হয়। মৌরুসি ও তার বোন ড্রয়িং ক্লাস থেকে এসে ডাকাডাকি করেও কারোর সাড়া না পাওয়ায় এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। তারপর পুলিশ ঘরের দরজা ভেঙে দম্পতির দেহ উদ্ধার করে। সূত্র: এই সময়

এসি


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি