স্ত্রীকে বাঁচাতে এমবিবিএস ডিগ্রি বন্ধক রাখলেন চিকিৎসক!
প্রকাশিত : ১১:৫৭, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২
কোভিড মহামারীর প্রত্যেকটি ঢেউ মানবজাতির ভীতকে নড়বড়ে করার চেষ্টা করেছে। অগনিত মানুষ মুখোমুখি হয়েছেন এই মহামারীর নির্দয়তার। যেই ডাক্তাররা এই মরণভাইরাস থেকে মানবজাতিকে রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছেন, দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালীন তাদের একজনের অসহায়তার গল্প সম্প্রতি গণমাধ্যমের সামনে আসে।
ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, রাজস্থানের ৩২ বছর বয়সি চিকিৎসক সুরেশ চৌধুরির স্ত্রী অনিতা কোভিডে আক্রান্ত ছিলেন তখন। শ্বাসকষ্টসহ অন্যান্য উপসর্গ বাড়তে থাকায় তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান সুরেশ। কিন্তু রোগীর ভিড়ে শয্যা না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে জোধপুর এমসে হাসপাতালে ভর্তি করেন তিনি।
সুরেশ নিজেও পেশায় চিকিৎসক হওয়ায় স্ত্রীর দেখাশুনার জন্য একটানা ছুটি নেওয়া সম্ভব ছিল না। তাই নিকটাত্মীয়ের উপরে স্ত্রীর দেখাশোনার ভার দিয়ে প্রতিদিন হাসপাতালের ডিউটি করেছিলেন সুরেশ।
কিন্তু দিনে দিনে অনিতার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তার ফুসফুসের ৯৫ শতাংশ বিকল হয়ে যায়। তত দিনে হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। তবে স্ত্রীকে সুস্থ করে ঘরে ফেরাতে বদ্ধপরিকর ছিলেন সুরেশ। উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্ত্রীকে ভর্তি করেন তিনি।
অনিতা তখন ভেন্টিলেটরে। ফুসফুস আর হৃদযন্ত্র প্রায় বিকল। ইকমো যন্ত্রের সাহায্যে কোনও মতে টিকে ছিলো প্রাণ। বেসরকারি হাসপাতালে ওই চিকিৎসা চালাতে প্রতিদিন প্রায় ১ লক্ষ টাকার কাছাকাছি খরচ আসছিলো।
কিন্তু সুরেশের কাছে জমানো ছিলো মাত্র ১০ লাখ টকা। যা পাহাড় সমান সেই খরচের সামনে নিমিষেই শেষ হয়ে যায়।
এরপর স্ত্রীকে বাঁচাতে নিজের এমবিবিএস ডিগ্রি বন্ধক রাখার সিদ্ধান্ত নেন সুরেশ। যার বিনিময়ে পান ৭০ লাখ টাকা। পাশাপাশি জমি বিক্রি সহ ধার-দেনা করে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে স্ত্রীকে সুস্থ করে ঘরে এনেছিলেন তিনি। যার ফলে করোনাভাইরাসকে হারিয়ে অনিতা ফিরে পেয়েছেন পরিবার।
এমএম/
আরও পড়ুন