আফগানিস্তানের উন্নয়নে সন্ত্রাসবাদ বাড়বে: ভারত
প্রকাশিত : ২১:৫২, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২
আফগানিস্তানে উন্নয়ন মধ্য এশিয়া অঞ্চলে ‘বিরূপ প্রভাব’ ফেলবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি। স্থানীয় সময় বুধবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের উন্মুক্ত বিতর্কে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিরুমূর্তি বলেন, “দেশটিতে উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাপক বিরূপ প্রভাব তৈরি করবে এই অঞ্চলে, বিশেষ করে আফগান ভূখণ্ড থেকে উদ্ভূত আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ এবং মাদক পাচার বাড়বে।”
‘আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষণাবেক্ষণে জাতিসংঘ এবং আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সংস্থাগুলোর মধ্যে সহযোগিতা: জাতিসংঘ এবং যৌথ নিরাপত্তা চুক্তি সংস্থার (সিএসটিও) মধ্যে সহযোগিতা’ বিষয়ক বিতর্কে অংশ নিয়ে এসব কথা বলে ভারতীয় প্রতিনিধি।
গত বছরের আগস্টের মাঝামাঝিতে তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে আফগানিস্তানের পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে।
বৈদেশিক সাহায্য স্থগিত করা, আফগান সরকারের সম্পদ হিমায়িত করা এবং তালেবানের উপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশটি ইতোমধ্যেই উচ্চ দারিদ্র্যের স্তরে রয়েছে। আফগানিস্তান সম্পূর্ণভাবে অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজোলিউশন ২৫৯৩ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রত্যাশাই প্রতিফলিত করছে, যাতে বলা হয়েছে, আফগান মাটি আশ্রয়, প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়নের জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়।
তিরুমূর্তি বলেন, “আফগানিস্তানের উন্নয়ন নিয়ে মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর উদ্বেগের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিবেচনা করা দরকার।”
জাতিসংঘ এবং যৌথ নিরাপত্তা চুক্তি সংস্থা বা সিএসটিও আর্মেনিয়া, বেলারুশ, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান এবং তাজিকিস্তান নিয়ে গঠিত, সংস্থাটি এই বছর ২০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করছে।
সমন্বিত এবং স্থিতিশীল সম্প্রসারিত প্রতিবেশসূলভ মনোভাবের ক্ষেত্রে ভারতের লক্ষ্যর কেন্দ্রে রয়েছে মধ্য এশিয়া। ভারত ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলো ৩০ বছরের অর্থপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক পূর্ণ করেছে।
জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, আঞ্চলিক এবং উপ-আঞ্চলিক সংস্থাগুলো বারবার দেখিয়েছে যে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষণাবেক্ষণে তাদের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। সংঘাত বা বিরোধ নিষ্পত্তিতে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বলেন, “অতএব, আমরা জাতিসংঘ এবং আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সংস্থাগুলোর মধ্যে সক্রিয় সম্পৃক্ততাকে সমর্থন করি এবং জাতিসংঘের চার্টারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ রয়েছি।”
২০১০ সালের যৌথ ঘোষণার ভিত্তিতে জাতিসংঘ এবং সিএসটিও’র মধ্যে চলমান সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেছে ভারত। মধ্য এশিয়ার জন্য জাতিসংঘের আঞ্চলিক কেন্দ্রের প্রতিরোধমূলক কূটনীতি সন্ত্রাসবাদ, সহিংসতা, চরমপন্থা এবং মাদক পাচারের বিষয়ে সহযোগিতা জোরদার করতে আরও অবদান রেখেছে।
মধ্য এশীয় অঞ্চলের সঙ্গে অংশীদারত্বের চেতনায় ভারত অগ্রাধিকারমূলক উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলোর জন্য ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ প্রদান করেছে।
তিরুমূর্তি আরও বলেন, “ভারত এই অঞ্চলের দেশগুলোতে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য ‘হাই ইমপ্যাক্ট কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ (এইচআইসিডিপি) বাস্তবায়নের জন্য অনুদান সহায়তা প্রদান করছে। আমরা ভারত ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করার জন্য ভারত-মধ্য এশিয়া সংলাপ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছি।”
মধ্য এশিয়ার দেশগুলো ভারতের প্রশংসা করে বলেছে, ইরানের চাবাহার বন্দরের অবকাঠামো আধুনিকীকরণের জন্য ভারতের পদক্ষেপের ফলে মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার বাজারের মধ্যে বাণিজ্য ও পরিবহন যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ হয়ে উঠবে।
এসি
আরও পড়ুন