পাকিস্তানের সংসদীয় সমীকরণ বলছে ইমরানের বিদায় নিশ্চিত
প্রকাশিত : ০৯:০৪, ১ এপ্রিল ২০২২
রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি এখন ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য লড়ছেন। যদিও পাকিস্তানের বর্তমান সংসদীয় সমীকরণ বলছে এই দফায় ইমরান খানের পরাজয় নিশ্চিত।
বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের পেছনে বিদেশি ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পরিস্থিতি নিয়ে পাকিস্তানের সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে একের পর বৈঠক করছেন তিনি। বৃহস্পতিবারও তিনি দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, তার তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির (পিটিআই) কয়েক জন সদস্যের দল ত্যাগ এবং জোট সরকার থেকে শরিক দলের সরে যাওয়ায় তার প্রধানমন্ত্রী থাকার আর কোনো সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বেশ কিছু বিরোধী দল।
বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর বিতর্ক শুরু হতেই ভোটাভুটির দাবি তোলেন বিরোধী আইনপ্রণেতারা।
এ নিয়ে হট্টগোলের মুখে কয়েক মিনিটের মধ্যেই অধিবেশন মুলতুবি করেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি। আগামী রবিবার আবারও অধিবেশন বসবে। আগামী ৪ এপ্রিলের মধ্যেই অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হবে।
সরকার টিকিয়ে রাখতে হলে জাতীয় পরিষদে ইমরান খানের সদস্যের সমর্থন লাগবে। জিও নিউজের এক খবরে বলা হয়েছে, শরিকরা ত্যাগ করায় এবং তার দলের কয়েক জন আইনপ্রণেতা সরে যাওয়ায় ইমরান খানের প্রতি এখন ১৪২ জন আইনপ্রণেতার সমর্থন রয়েছে। অন্য দিকে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ১৯৯ জন আইনপ্রণেতা সমর্থন দিচ্ছেন। ফলে সবকিছু ঠিক থাকলে অনাস্থা ভোটে ইমরানের জয়ের কোনো সুযোগ নেই।
তার পরও ইমরান খান ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার তার বিশেষ সহকারী শাহবাজ গিল বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করবেন না। বরং সর্বশক্তি দিয়ে শেষ পর্যন্ত বিরোধীদের সঙ্গে লড়বেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইমরান এক সাম্রাজ্যবাদীর বিরুদ্ধে লড়ছেন। স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি চাওয়ার জন্য জুলফিকার আলী ভুট্টোকে যে সাম্রাজ্যবাদী হত্যা করেছিল। বিরোধী দুর্নীতিবাজ নেতারা তার জন্য কোনো বিষয় নয়।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের ৭৫ বছরের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত কোনো প্রধানমন্ত্রী তার মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। বর্তমান সরকার দেশের অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতিতে বিপর্যয় ডেকে এনেছে অভিযোগ করে অনাস্থা প্রস্তাব দেয় বিরোধীরা। ৪ এপ্রিলের মধ্যে এই প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হবে।
পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাসে এর আগে দুবার দায়িত্বরত প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়েছে। তবে সেই দুবারই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীরা ১৯৮৯ সালে বেনজীর ভুট্টো এবং ২০০৬ সালে শওকত আজিজ দায়িত্বে থেকে যেতে সক্ষম হন।
কিন্তু পাকিস্তানের বর্তমান সংসদীয় সমীকরণ বলছে এই দফায় ইমরান খান বড় ধরনের পরাজয়ের সম্মুখীন হতে চলেছেন।
এসবি/
আরও পড়ুন