রাশিয়া হয়তো ঋণখেলাপি হয়ে পড়েছে: মুডি’স
প্রকাশিত : ২১:০০, ১৫ এপ্রিল ২০২২
রাশিয়া হয়ত ঋণখেলাপি হয়ে পড়েছে বলে সতর্ক করেছে মুডি’স ইনভেস্টর্স সার্ভিস। কারণ দেশটি বন্ড পরিশোধে ডলারের বদলে রুবল ব্যবহার করছে। ইউক্রেনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আক্রমণ শুরুর পর নিষেধাজ্ঞার কারণে পশ্চিমা আর্থিক ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া রাশিয়ার জন্য এটি ভয়াবহ একটি পরিণতি হতে পারে। বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, মস্কো যদি ঋণখেলাপি হিসেবে নিজেদের ঘোষণা করে তাহলে এটি হবে বিদেশি বন্ডে রাশিয়ার প্রথম বড় খেলাপি হওয়ার ঘটনা। যদিও ক্রেমলিন বলছে, নিষেধাজ্ঞা জারি করে পশ্চিমারা তাদেরকে ঋণখেলাপী হতে বাধ্য করছে।
৪ এপ্রিল দুটি সার্বভৌম বন্ডের একটি অর্থ প্রদান করেছে রাশিয়া। এগুলো পূর্ণতা পাবে ২০২২ ও ২০৪২ সালে। এই অর্থ প্রদান করা হয়েছে ডলারের বদলে রুশ মুদ্রা রুবলে। অথচ সিকিউরিটিজ শর্ত অনুসারে এই অর্থ ডলারে পরিশোধ করার বাধ্যবাধকতা ছিল।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে মুডি’স বলেছে, তাই ৪ মে-এর আগে যদি ঘুরে না দাঁড়ায় তাহলে মুডি’স এর সংজ্ঞা অনুসারে রাশিয়াকে ঋণখেলাপি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। কারণ ওই দিন অতিরিক্ত সময় (গ্রেস পিরিয়ড) শেষ হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বন্ডের চুক্তিতে ডলার ছাড়া অন্য কোনও মুদ্রায় পরিশোধের কোনও সুযোগ নেই।
মুডি’স বলছে, ২০১৮ সালের পরে ইস্যু করা কিছু রুশ ইউরোবন্ড নির্দিষ্ট কয়েকটি শর্তে রুবলে পরিশোধের অনুমতি রয়েছে। কিন্তু ২০২২ ও ২০৪২ সালে পূর্ণতা পাবে এমন বন্ডের ক্ষেত্রে এই শর্ত কার্যকর নয়।
সংস্থাটি আরও বলেছে, মুডি’স বিবেচনায় বিনিয়োগকারীরা বিদেশি মুদ্রার চুক্তির প্রতিশ্রুতি অনুসারে নির্দিষ্ট পরিশোধের দিনে অর্থ পাননি।
শুক্রবার এই বিষয়ে মন্তব্য জানতে রয়টার্সের পক্ষ থেকে রাশিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। এই মাসের শুরুতে রুশ অর্থমন্ত্রী আন্টন সিলুয়ানভ বলেছিলেন, রাশিয়াকে ঋণখেলাপি হতে বাধ্য করা হচ্ছে, আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এর আগে ১৯৯৮ সালে রাশিয়া ৪০ বিলিয়ন ডলার অভ্যন্তরীণ ঋণখেলাপি ঘোষণা ও রুবলের অবমূল্যায়ন করেছিল। এশীয় ঋণ সংকট ও তেলের দরপতনের কারণে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলেৎসিন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আর ১৯১৮ সালে ভ্লাদিমির লেনিনের নেতৃত্বাধীন বলশেভিক বিপ্লবীরা জার আমলের ঋণ খেলাপি ঘোষণা করেছিল। যা বিশ্বের ঋণ দাতাদের অবাক করেছিল। কারণ ওই সময় বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিদেশি ঋণ ছিল রাশিয়ার।
এবার রাশিয়ার কাছে অর্থ রয়েছে কিন্তু পরিশোধ করতে পারছে না। কারণ রাশিয়ার রিজার্ভ জব্দ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ব্রিটেন ও কানাডা।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া যেহেত এখন ঋণ নেবে না এবং পাবে না, তাই ঋণখেলাপি হবে মূলত প্রতীকী। যা শীতলযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে পশ্চিমা আর্থিক ব্যবস্থায় একীভূত হওয়ার প্রচেষ্টার ইতি টানবে।
এমএম/
আরও পড়ুন