ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

ভিন ধর্মে বিয়ের অপরাধে প্রকাশ্য রাস্তায় খুন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:১৬, ৬ মে ২০২২

প্রকাশ্য রাস্তায় বাইক থেকে নামিয়ে পিটিয়ে খুন করা হলো এক ব্যক্তিকে। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে মোবাইলে ছবি তুললেন পথচারীরা। সাহায্যের হাত বাড়ালেন না কেউ। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ভাইরাল হলো সেই ভিডিও। প্রতিবাদ করতে গিয়ে আহত হলেন ওই ব্যক্তির স্ত্রী।

ভারতের উত্তর প্রদেশের নয়াবান গ্রামে মোট ৪ হাজার মানুষের মধ্যে ৪০০ জন মুসলিম৷ গত দুই বছরে তাদের মধ্যে প্রায় এক ডজন ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন অন্যত্র৷ আরো অনেকে গ্রাম ছাড়ার পরিকল্পনা করলেও সামর্থের অভাবে পারছেন না বলে জানিয়েছেন তারা৷ এর মধ্যে গত বছরের শেষে গরু নিয়ে সহিংসতার ক্ষত এখনো তাদের মধ্যে দগদগে৷

ছোটবেলা থেকেই প্রেম নাগারাজু এবং আসরিন সুলতানার। মাসতিনেক আগে বাড়ির অমতেই বিয়ে করেন তারা। আলাদাই থাকছিলেন তারা।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তারা বাইক নিয়ে বাইরে বের হন। মাঝ রাস্তায় তাদের বাইক আটকায় কয়েকজন যুবক। ওই যুবকদের কেউ কেউ তার পরিচিত বলে সুলতানা জানিয়েছেন। বাইক থেকে নামিয়ে লোহার রড দিয়ে নাগারাজুর মাথায় আঘাত করা হয়। এরপর ক্রমাগত নাগারাজুর মাথায় আঘাত করতে থাকে ওই যুবকরা। ভিডিওতে দেখা যায়, সুলতানা একাই আক্রমণকারীদের সরানোর চেষ্টা করছেন। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছেন। কিন্তু সাহায্য না করে তারা ছবি তুলতে থাকেন।

ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় নাগারাজুর। তার মাথা সম্পূর্ণ থেতলে দেওয়া হয়। এরপর সকলের সামনে দিয়েই পালিয়ে যায় আততায়ীরা। সুলতানা পুলিশকে জানিয়েছেন, হিন্দু হয়ে কেন নাগারাজু তাকে বিয়ে করেছে, এই নিয়ে একাধিকবার হুমকি দেওয়া হয়েছে তাদের। শেষপর্যন্ত ঘটল এমন মর্মান্তিক হত্যা।

পরে পুলিশের কাছে সুলতানা জানিয়েছেন, আক্রমণকারীদের মধ্যে একজন তার ভাই। সবমিলিয়ে পাঁচজন আক্রমণ করেছিল বলে তিনি জানিয়েছেন। হায়দরাবাদ পুলিশ আক্রমণকারীদের ধরতে বিশেষ তদন্ত দল তৈরি করেছে।

প্রশ্ন উঠছে, কেন পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে থাকা পথচারীরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন না? সমাজ কি এতই বোধহীন হয়ে পড়েছে, এ প্রশ্নও সোশ্যাল মিডিয়াতে তুলছেন কেউ কেউ।

সাংবাদিকদের সুলতানা জানিয়েছেন, বিয়ের আগে পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল, পরিবারের পক্ষ থেকে এতটাই চাপ আসছিল যে তিনি নাগারাজুকে বিয়ে না করার কথা বলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, নাগারাজুকে বিয়ে না করলে অন্য কাউকে তিনি কখনো বিয়ে করবেন না। দুইমাস তার সঙ্গে যোগাযোগ না রাখার চেষ্টাও করেছিলেন তিনি। কিন্তু শেষপর্যন্ত তারা আলাদা থাকতে পারেননি। বিয়ে করে নাম বদলে ফেলেছিলেন সুলতানা। নতুন নাম নিয়েছিলেন পল্লবী।

নাগারাজুর বোন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তার ভাই বাড়ির একমাত্র রোজগেরে ছিলেন। পুলিশের অপদার্থতার জন্যই আজ তাকে এভাবে নিহত হতে হলো।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে

এসবি/ 

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি