ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ইইউ’র আচরণে হতাশ জেলেনস্কি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪৯, ২৭ মে ২০২২

Ekushey Television Ltd.

তেল নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে চরম নিষেধাজ্ঞা আরোপে এখনো অপারগ ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন জেলেনস্কি।

সম্প্রতি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ষষ্ঠ নিষেধাজ্ঞা জারির পরিকল্পনা করেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। কিন্তু ২৭টি দেশের ব্লকে দুই-একটি দেশের আপত্তির কারণে এখনো পর্যন্ত সেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা যায়নি। এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

দৈনিক ভিডিওবার্তায় জেলেনস্কি বলেছেন, ''সর্বসম্মতিতে পৌঁছাতে আর কত সপ্তাহ সময় নেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন? ইইউ'র অনেক দেশের কাছেই আমি কৃতজ্ঞ। কিন্তু যারা এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছে, তারা কোথা থেকে এত শক্তি পাচ্ছে?''

উল্লেখ্য, হাঙ্গেরি রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রস্তাবিত ষষ্ঠ নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজটি মানতে রাজি হচ্ছে না। এই প্যাকেজে স্থির হয়েছে, রাশিয়ার থেকে সমস্ত তেল আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হবে। রাশিয়ার অন্যতম বড় ব্যবসা তেল। সেই তেলের আমদানি বন্ধ করে দিলে রাশিয়া আরো অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু হাঙ্গেরি এই প্রস্তাবে এখনো সম্মত হয়নি। হাঙ্গেরি ব্যাপকভাবে রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের উপর নির্ভরশীল। সে কারণেই তারা সম্মত হচ্ছে না বলে মনে করা হচ্ছে। কূটনীতিকদের একাংশের বক্তব্য, হাঙ্গেরির বর্তমান শাসকের সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের যোগাযোগ আছে। সেটিও হাঙ্গেরির এই অবস্থানের অন্যতম কারণ।

রয়টার্স জানিয়েছে, মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র তাদের জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক এবং কূটনৈতিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রশাসনের দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। ওয়াশিংটন কিয়েভকে জানিয়েছে, রাশিয়ার সীমান্তের ভিতরে ঢুকে আক্রমণ চালানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। তাতে যুদ্ধের বিপদ আরো বাড়বে।

বস্তুত, এর আগে রাশিয়া অভিযোগ করেছিল, ইউক্রেনের সেনা তাদের সীমান্তের ভিতরে ঢুকে আক্রমণ চালাচ্ছে। রাশিয়া চার সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে কার্যত গোটা ইউক্রেন জুড়ে ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে। তারই জবাবে ইউক্রেনের সেনা রাশিয়ার ভিতরে আক্রমণ চালানোর পরিকল্পনা করেছিল বলে সূত্র জানিয়েছে। সে কারণে, বন্ধু রাষ্ট্রগুলির কাছে সেই ধরনের অস্ত্র চেয়েছিল ইউক্রেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে জানিয়েছে, রাশিয়ার ভিতরে আক্রমণ চালালে যুদ্ধ পরিস্থিতি আরো আশঙ্কাজনক হবে। রাশিয়া আরো ভয়াবহ পদক্ষেপ নিতে পারে। ফলে আপাতত সেই ভাবনা থেকে বিরত থাকাই উচিত।

রাশিয়াও জানিয়েছে, ইউক্রেনকে পশ্চিমা দেশগুলি যে ধরনের অস্ত্র সরবরাহ করছে, তাতে রাশিয়ার বিপদ বাড়ছে। রাশিয়ার সার্বভৌম ভূখণ্ডে আঘাত হানলে রাশিয়া ছেড়ে কথা বলবে না।

সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছিলেন, তাদের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলি যদি তুলে নেওয়া হয়, তাহলে রাশিয়া ইউক্রেন থেকে খাদ্যসামগ্রী বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেবে। কিন্তু পুতিনের এই প্রস্তাব নস্যাৎ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন কূটনীতিকদের বক্তব্য, নিষেধাজ্ঞার জন্য বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংকট তৈরি হয়নি। সংকট তৈরি হয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে। যার সম্পূর্ণ দায় রাশিয়ার। ফলে তাদের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জানিয়েছেন, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে খাবারের সরবরাহ আটকে রেখে দিয়েছে। কৃষ্ণসাগরে তারা কার্যত অবরোধ তৈরি করেছে। ইউক্রেনের বন্দরগুলিতেও অবরোধ তৈরি করা হয়েছে। সেই অবরোধ তুললেই বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংকট কমবে।

এর আগে ইটালির প্রধানমন্ত্রীকে ফোনে পুতিন নিষেধাজ্ঞা তোলার বিষয়ে জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, পশ্চিম যদি রাশিয়ার উপর থেকে কড়া নিষেধাজ্ঞাগুলি তুলে নেয়, তাহলে রাশিয়াও খাদ্যসংকট কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেবে।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি