ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

জারকন ক্ষেপণাস্ত্রে ফের শক্তি দেখাল রাশিয়া

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৫৪, ২৯ মে ২০২২ | আপডেট: ১৭:১৩, ২৯ মে ২০২২

রাশিয়া তার ঝুলি থেকে ফের নতুন ক্ষেপণাস্ত্র বের করল। নাম ‘জারকন হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল’। গত কাল তার সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ ঘটিয়েছে মস্কো।

ব্যারেন্টস সাগরে উপস্থিত রুশ যুদ্ধজাহাজ অ্যাডমিরাল গোরশকোভ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। হাজার কিলোমিটার দূরে উত্তর মেরুর শ্বেত সাগরে (হোয়াইট সি) গিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর উপরে আঘাত হানে সে।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, তাদের নতুন অস্ত্রশস্ত্রের পরীক্ষা চলছে। এটিও সেই পরীক্ষার অংশ ছিল। জ়ারকনের পরীক্ষা প্রথম হয়েছিল ২০২০ সালের অক্টোবরে। সে সময়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, ‘দারুণ ঘটনা’। তবে এখনের এই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের বার্তা আলাদাই। এক কথায় গোটা বিশ্বকে ‘হুঁশিয়ারি’। 

শব্দের চেয়ে ৫ থেকে ১০ গুন বেশি গতিতে এটি হাজার কিলোমিটার দূরের নিশানায় আছড়ে পড়তে পারে। ইতিমধ্যেই ইউক্রেনের যুদ্ধে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে রাশিয়া। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রও ছুড়েছে। 

পুতিনের কথায়, এটি তাঁর অস্ত্র ভান্ডারের নতুন ‘অপ্রতিরোধ্য’ সদস্য। একাধিক হামলায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইউক্রেন।

হুমকি তো শুধু ইউক্রেনকে নয়, গোটা পৃথিবীকেই। বিশেষ করে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে যে সব দেশ, তাদের। আজ সকালে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো ও জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ়ের সঙ্গে কথা বলেন পুতিন। 

দুই রাষ্ট্রনেতাকে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে অস্ত্র পাঠানোর পরিণতি মারাত্মক হতে পারে। সতর্ক করেছে, এতে ইউরোপের স্থিতাবস্থা আরওই বিঘ্নিত হবে। মানব-সঙ্কটও দেখা দিতে পারে। তবে এ সব নতুন নয়। যুদ্ধের গোড়া থেকে গোটা বিশ্বকে এই হুমকি দিয়ে চলেছে রাশিয়া। এক প্রকার এই কারণেই ইউক্রেনের যুদ্ধে শামিল হয়নি কোনও দেশ। কিন্তু সরাসরি যুদ্ধের ময়দানে না নামলেও প্রায় গোটা ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, জাপান আর্থিক সাহায্য, অস্ত্র সাহায্য পাঠিয়েছে ইউক্রেনকে। ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে। তাতে মারাত্মক ক্ষুব্ধ পুতিন।

রুশ প্রেসিডেন্ট আজ জানিয়েছেন, তারা সন্ধি করতে চান। কিন্তু ‘কিয়েভের দোষেই’ তা সম্ভব হচ্ছে না। বিশ্ববাজারে শস্যদানা ও সারের যে অভাব দেখা দিয়েছে, তার সমাধান করতে তাদের উপরে চাপানো নিষেধাজ্ঞা তোলার কথা বলেছেন পুতিন। 

ক্রেমলিনের বক্তব্য, রাশিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তোলা হলে বিশ্বের খাদ্য বাজারে তৈরি হওয়া সঙ্কট অনেকটাই কমবে।

তবে রাশিয়ার অজস্র ক্ষোভ ও দাবিদাওয়ায় ম্যাক্রো ও শোলৎজ় একেবারেই দমে যাননি বলে শোনা গিয়েছে। তারা আজ মারিউপোলের আজ়ভস্টল কারখানা থেকে ধৃত ইউক্রেনীয় সেনাদের মুক্তির দাবি জানান। আজ়ভস্টলে কোণঠাসা হয়ে আটকে পড়া ইউক্রেনীয় সেনারা পরে রাশিয়ার হাতে বন্দি হয়। তাদের সংখ্যা কমপক্ষে ২৫০০।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি জানিয়েছেন, ডনবাসের পরিস্থিতি ক্রমশই খারাপ হচ্ছে। মারিউপোল একেবারই চলে গিয়েছে রাশিয়ার হাতে। এমনকি, গত কালই লিম্যান শহরও দখল করেছে রাশিয়া। শুধু তাই নয়, আজ সে খবর নিশ্চিত করে বিবৃতি দিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। 

মন্ত্রণালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, ‘ইউক্রেন থেকে লিম্যান সম্পূর্ণ রূপে স্বাধীন হল।’ রাতের সাংবাদিক বৈঠকে জ়েলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়া সর্বশক্তি দিয়ে সব সেনা, অস্ত্র নামিয়ে দিয়েছে পূর্ব ইউক্রেনে। সেভেরোডনেৎস্কও রুশ নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার অপেক্ষায়। দুই-তৃতীয়াংশ দখল করে ফেলেছে তারা। রাশিয়ার হাতে বন্দি হওয়ার মতো পরিস্থিতি আটকাতে ইতিমধ্যেই এই শহর থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবতে শুরু করেছে কিয়েভ।

এসি
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি