‘আবার মিলিত হব, কিন্তু কবে তা কেউ জানে না’
প্রকাশিত : ১৭:২৩, ৪ জুন ২০২২ | আপডেট: ১৭:২৬, ৪ জুন ২০২২
সন্তানদেরকে শেষবারের মতো বুকে জড়িয়ে বিদায় জানাচ্ছেন লিউডমিলা
প্রতিদিনই গোলাগুলি হচ্ছে ইউক্রেনের আরেক বন্দর নগরী মাইকোলিভে। রাশিয়ান বাহিনী নগরীর পূর্ব এবং দক্ষিণ উপকণ্ঠে অবস্থান করছে। আশেপাশের গ্রামগুলোতে হামলা চালাচ্ছে এবং হাজার হাজার মানুষকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করছে।
মাইকোলিভ থেকে বিবিসির সাংবাদিক লরা বিকার বলেন, আমাদের গাড়িটি এই প্রধান বন্দরের শহরতলীর মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় বিমান হামলার সাইরেনের শব্দ আমাদের ডানদিকে দিয়ে অতিবাহিত হয়।
কয়েক কিলোমিটার দূরে ধোঁয়ার একটি কুন্ডলি হিট নিশ্চিত করে যে, সেখানে আরেকটি রকেট পড়েছে।
আমরা একটি ইউক্রেনীয় রেড ক্রস ভ্যান অনুসরণ করছিলাম, কারণ তারা নিয়মিত গোলাগুলির মধ্যেই কিছু লোককে উদ্ধার করার চেষ্টা করছে। এই দেশ থেকে ইতিমধ্যেই নির্বাসিত হওয়া ঐতিহাসিক সংখ্যক মানুষের দলে যোগ দেয়ার জন্য আরেকটি বাস লোড হয়ে গেছে।
করুণ এই বিদায়ের দৃশ্যগুলো গত ১০০ দিনে ইউক্রেনজুড়ে একটি পরিচিত দৃশ্য হয়ে উঠেছে। কিন্তু সেগুলো চোখে দেখাটা কম হৃদয়বিদারক নয়!
এখানকারই এক অসহায় নারী লিউডমিলা, যিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, তার ছোট ছোট বাচ্চাদেরকেও নিরাপদ কোথাও পাঠিয়ে দেয়ার সময় এসেছে। বোমাবর্ষণ অব্যাহত থাকায় তিনি তাদেরকে বাইরে খেলতে দিতে পারেন না এবং তিনি চান যে, তারা কোথাও নিরাপদে থাকুক।
সাংবাদিক লরাকে কাছে পেয়ে অসহায় লিউডমিলা বলেন, "এই বোমা হামলা বন্ধ হলে আমি তাদেরকে আবার দেখতে পাব।" তার এই কথা শুনে আমি মনে মনে বলি, কিন্তু কবে হবে তা কেউ জানে না!
ইউক্রেনে যখন এই আক্রমণ শুরু হয়েছিল, তখন প্রথম আক্রান্ত হওয়া শহরগুলোর মধ্যে একটি ছিল মাইকোলিভ। রাশিয়ান বাহিনী শহরটির সীমানার কাছাকাছি এসে পৌঁছেছিল কিন্তু ইউক্রেন বাহিনী তাদেরকে পিছু হটতে বাধ্য করে।
এই অঞ্চলটি রাশিয়ার সমগ্র দক্ষিণ উপকূলকে বিচ্ছিন্ন করার কৌশলগত মূল চাবিকাঠি। এখানে সামান্য অগ্রগতিই ক্রেমলিনের বাহিনীকে গুরুত্বপূর্ণ বন্দর নগরী ওডেসার নাগাল পাইয়ে দেবে। যেটি মূলত ইউক্রেনের বৃহত্তম বেসামরিক বন্দর।
আর ওডেসার নাগাল পেলে ভ্লাদিমির পুতিনও তখন মোলদোভার বিচ্ছিন্ন প্রজাতন্ত্র ট্রান্সনিস্ট্রিয়া পর্যন্ত তার স্থল সেতুটি সম্পূর্ণ করতে পারবেন। সূত্র- বিবিসি।
এনএস//
আরও পড়ুন