দোনেটস্কে মঠে অগ্নিকাণ্ড, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
প্রকাশিত : ২০:৪১, ৪ জুন ২০২২

সোভিয়াতোহিরস্ক লাভরা মঠে অগ্নিকাণ্ডের চিত্র
দোনেটস্ক অঞ্চলে সোভিয়াতোহিরস্ক লাভরা নামক একটি বড় কাঠের মঠে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। যেখানে সন্যাসী ও সন্যাসীনী ছাড়াও ছিল ৩০০ জন শরণার্থী, যাদের মধ্যে প্রতিবন্ধী, বয়স্ক এবং প্রায় ৬০ জন শিশু ছিল।
যদিও এতে তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি, তবে ঘটনার জন্য রুশ বাহিনীকে দায়ী করেছে ইউক্রেন। অন্যদিকে, এটা ইউক্রেনের সৈন্যদের কাজ বলেই দাবি করেছে রাশিয়া।
ইউক্রেনীয় অর্থোডক্স চার্চ কর্তৃপক্ষ তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, "শত্রুতার ফলস্বরূপ, পবিত্র ডরমিশন সোভিয়াতোহিরস্ক লাভরার অল সেন্টস হার্মিটেজের অঞ্চলে একটি বড় কাঠের মঠে ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। যা এটির প্রধান উপাসনালয়কে গ্রাস করেছে।"
ইউরি কোচেভেনকো নামে ইউক্রেনের একজন সেনা কর্মকর্তা, ফেসবুকে জ্বলন্ত মঠের একটি ছবি পোস্ট করেছেন। যার ক্যাপশনে তিনি লেখেন: "রাশিয়ান বর্বরদের আরেকটি অপরাধ, যারা পবিত্র কোনো কিছুকেই পরোয়া করে না।"
মঠটি মূলত সিভারস্কি দোনেটস নদীর তীরে পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে আছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে ঘেরাও করার লক্ষ্যে রুশ সেনারা বারবার এই নদী পার হওয়ার চেষ্টা করেছে। সোভিয়াতোহিরস্ক স্লোভিয়ানস্কের ঠিক উত্তরে অবস্থিত একটি শহর, যা এখনও ইউক্রেনীয়দের দখলে।
এই মঠটি কয়েক শতাব্দী আগের এবং গত শতাব্দীতে কমিউনিস্টদের দ্বারা বন্ধ করা হয়েছিল, কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ১৯৯২ সালে পুনঃরায় চালু করা হয়।
ইউক্রেনের একটি সরকারি টুইটে অভিযোগ করে বলা হয়, রাশিয়ান বাহিনী ৩০ মে সেখানে চার সন্ন্যাসীকে হত্যা করেছে। যদিও বিবিসির পক্ষে এই দাবি যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
ফেসবুকে, ইউক্রেনের সংস্কৃতি মন্ত্রী ওলেক্সান্ডার তাকাচেঙ্কো বলেছেন, "ইউক্রেনীয় অর্থোডক্স চার্চের দোনেটস্ক এপার্কি (বিশপ-স্কুল) নিশ্চিত করেছে যে, এই মঠে সন্ন্যাসী ও সন্ন্যাসীনীরা ছাড়াও ৩০০ জন শরণার্থী ছিল। তাদের মধ্যে প্রতিবন্ধী, বয়স্ক এবং প্রায় ৬০ জন শিশু ছিল। এমনকি নবজাতকও ছিল।"
এদিকে, রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সোভিয়াতোহিরস্ক লাভরা মঠে অগ্নিকাণ্ডের জন্য ইউক্রেনের "জাতীয়তাবাদী" সেনাদের দায়ী করেছে।
টেলিগ্রামে দেয়া মন্ত্রণালয়ের এক বার্তায় বলা হয়েছে, ইউক্রেনের ৭৯তম এয়ারবর্ন অ্যাসল্ট ব্রিগেডের ইউনিটগুলো সোভিয়াতোহিরস্ক থেকে পিছু হটছিল। আর এসময়েই "ইউক্রেনীয় জাতীয়তাবাদীরা কাঠের মঠে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।"
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, "একটি ইউক্রেনীয় কোজাক সাঁজোয়া যানে বসানো একটি বড়-ক্যালিবার মেশিনগান থেকে গুলি করা হয়েছিল, আর আগুনের গোলাটি কাঠামোর গম্বুজযুক্ত স্থানের কাঠের দেয়ালে আঘাত হানে।"
রাশিয়া অবশ্য বারবারই ইউক্রেনের বেসামরিক এলাকায় গোলাগুলিকে অস্বীকার করে এসেছে এবং ইউক্রেনীয় বাহিনীকে স্থানীয় বেসামরিকদের "মানব ঢাল" হিসাবে ব্যবহার করার অভিযোগ করেছে। কিন্তু অনেক ইউক্রেনীয় এবং বিদেশী সাক্ষীদের কাছ থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, রুশ বোমা হামলার কারণে ইউক্রেনের গ্রামগুলোতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। সূত্র- বিবিসি।
এনএস//
আরও পড়ুন