ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৪ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মহড়ায় যোগ দিচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৫ দেশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৪২, ৫ জুন ২০২২

Ekushey Television Ltd.

চলতি বছরের জুন মাসের শেষে বিশ্বের বৃহত্তম নৌ যুদ্ধ মহড়া অনুশীলনের জন্য মার্কিন সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগদান করবে ২৫টি দেশ। এর মধ্যে অন্যান্য কোয়াড সদস্যসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৫টি দেশ রয়েছে।

মার্কিন নৌবাহিনী মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২৯ জুন থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত দ্বিবার্ষিক রিম অফ দ্য প্যাসিফিক (রিম্প্যাক) মহড়ায় ৩৮টি সারফেস জাহাজ, চারটি সাবমেরিন এবং ১৭০টিরও বেশি বিমান অংশ নেবে। এতে নয়টি দেশের স্থল বাহিনী এবং মোট ২৫ হাজার কর্মী অংশ নেবে। 

প্রথম ১৯৭১ সালে অনুষ্ঠিত এই মহড়া এবার হাওয়াইয়ান দ্বীপপুঞ্জ এবং দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার আশেপাশে অনুষ্ঠিত হবে। ইউএস প্যাসিফিক ফ্লিটের কমান্ডার দ্বারা আয়োজিত এই মহড়ায় সারা বিশ্বে মার্কিন মিত্র হিসেবে পরিচিত দেশ এবং অংশীদাররা অংশগ্রহণ করবে। এর মধ্যে রয়েছে ভারত, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া- মার্কিন নেতৃত্বাধীন কোয়াড নিরাপত্তা গোষ্ঠীর অন্যান্য সদস্যগণ, যাদের চীন এই অঞ্চলের ‘এশিয়ান ন্যাটো' বলে অভিহিত করেছে।

প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগরের সীমান্তবর্তী পাঁচটি দেশও রিম্প্যাক মহড়ায় যোগ দেবে। তারা হলো সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনাই এবং ফিলিপাইন। এতে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশ টোঙ্গাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, এই দেশটি এমন একটি অঞ্চলের অংশ যেখানে চীন তার কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি করছে।

ইউএস নৌবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যারা রিম্প্যাকে অংশ নিচ্ছেন তারা বিস্তৃত পরিসরে নৌ কর্মকাণ্ড অনুশীলন করবেন। দুর্যোগ-ত্রাণ ও সামুদ্রিক নিরাপত্তা কার্যক্রম থেকে শুরু করে জটিল যুদ্ধ কৌশলও এই নৌ কর্মকাণ্ডের অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

তারা ‘বাস্তবসম্মত’ প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতেও অংশ নেবে, যার মধ্যে রয়েছে জল ও স্থল অভিযান, ক্ষেপণাস্ত্র, অ্যান্টি-সাবমেরিন এবং বিমান প্রতিরক্ষা অনুশীলন। 

মার্কিন বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রিম্প্যাক তাদের সম্মিলিত বাহিনীকে শক্তিশালী করতে এবং একটি উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়তে একসঙ্গে প্রশিক্ষণ এবং কাজ করে যাবে।’

চীন ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো রিম্প্যাক অনুশীলনে যোগ দিলেও, কিন্তু পেন্টাগন পরে দক্ষিণ চীন সাগরে বিতর্কিত দ্বীপগুলিতে চীনের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির অভিযোগ করে ২০১৮ সালে চীনকে বাদ দিয়েছে।

সাংহাই ইউনিভার্সিটি অফ পলিটিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ল-এর অধ্যাপক নি লেক্সিয়ং উল্লেখ করেছেন, যুদ্ধ মহড়াগুলো এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হবে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অংশ হিসাবে তার জোট এবং অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়া ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ’অকুস’ নামে একটি নতুন নিরাপত্তা জোট ঘোষণা করেছে, যা চীনা প্রভাব মোকাবেলার একটি প্রচেষ্টা এবং গত মে মাসে, টোকিওতে নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের সময়, কোয়াড অবৈধ মাছ ধরার নিরীক্ষণে একটি ট্র্যাকিং সিস্টেমের জন্য স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহার করার একটি উদ্যোগ ঘোষণা করেছে।

মার্চ মাসে, হোয়াইট হাউসের ইন্দো-প্যাসিফিক সমন্বয়কারী কার্ট ক্যাম্পবেল এবং শীর্ষ জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের চীনের কর্মকর্তা লরা রোজেনবার্গার চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি  বিরোধপূর্ণ বিষয় তাইওয়ান নিয়ে ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে, ইউক্রেনের যুদ্ধে চীন ক্রমবর্ধমানভাবে রাশিয়াকে সমর্থন করায় চীন এখন একটি কঠিন অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রফেসর নি।

নি বলেছেন, ওয়াশিংটন জাপানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক জোট, আকুসের মতো ত্রিপক্ষীয় জোট এবং চার-মুখী কোয়াড সহ বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে কয়েক স্তরের জোট তৈরি করেছে।

নি আরও জানান, এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে খুব শীঘ্রই একটি যুদ্ধ হবে, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীতে, চীন খুব বেশি দেশকে নিজের দলে টানতে পারেনি।

এদিকে দুই দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। গত সপ্তাহে, পিএলএ নৌবাহিনীর লিয়াওনিং এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে মহড়া চালানোর পরপরই, মার্কিন নৌবাহিনী তাদের ইউএসএস আব্রাহাম লিংকন এবং ইউএসএস রোনাল্ড রিগান স্ট্রাইক গ্রুপকে একটি অনুশীলনের জন্য একই এলাকায় পাঠিয়েছে।

এসি
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি