ঢাকা, শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪

তেলচালিত গাড়ি নিষিদ্ধ করার পথে ইইউ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:২৯, ৯ জুন ২০২২

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একগুচ্ছ প্রস্তাব কার্যকর করতে চাইছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ পার্লামেন্টের সিদ্ধান্তের পর এবার সদস্যদের মনস্থির করার পালা৷

চলমান ইউক্রেন সংকট খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের উপর নির্ভরতার পরিণাম স্পষ্ট করে দিচ্ছে৷ ফলে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার চাপের পাশাপাশি সেই বাস্তবও ইউরোপকে বিকল্প জ্বালানির দিকে আরও দ্রুত ঠেলে দিচ্ছে৷

বুধবার ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সেই দিশায় একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করলো৷ ২৭টি সদস্য দেশের সরকার পরিষদের অনুমোদন পেলে সেই স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হবে৷

ইইউ পার্লামেন্টে অনুমোদিত একটি প্রস্তাবের খসড়া অনুযায়ী ২০৩৫ সাল থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে এমন কোনো নতুন গাড়ি পথে নামানো যাবে না, যা কার্বন নির্গমন করে৷ তবে পেট্রোল বা ডিজেল-চালিত পুরানো যানের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম কার্যকর হবে না৷

ফলে ইউরোপে কম্বাশচন ইঞ্জিনভরা গাড়ি ও ভ্যানের কার্যত মৃত্যু ঘটবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ সবুজ দলের কয়েক জন সংসদ সদস্য এ প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দিয়েছেন, যে ইইউ-র মোট গ্রিনহাউস নির্গমনের ১৫ শতাংশের উৎস সড়ক পরিবহণ৷ তাদের মতে, সেই নির্গমন বন্ধ করতে পারলে জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে৷

ইইউ পার্লামেন্ট শেষ পর্যন্ত যে প্রস্তাবের খসড়া অনুমোদন করেছে, সেটি আসলে মূল লক্ষ্য থেকে কিছুটা দুর্বল৷ রক্ষণশীল শিবিরের সংসদ সদস্যদের চাপে পেট্রোল ও ডিজেল-চালিত পুরানো গাড়ির উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো সম্ভব হয় নি৷ রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে নির্গমন সংক্রান্ত বাণিজ্যের পরিসরও বাড়ানো সম্ভব হয় নি৷ সংসদে সেই প্রস্তাব উত্থাপন করা হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে সেটি অনুমোদিত হয় নি৷ জলবায়ু সংক্রান্ত আরও কয়েকটি প্রস্তাব নিয়েও অগ্রসর হতে ব্যর্থ হয়েছে ইইউ পার্লামেন্ট৷

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার উদ্দেশ্যে ইইউ-র চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের রূপরেখা এখনো স্পষ্ট নয়৷ ইইউ সদস্য দেশগুলি পার্লামেন্টের প্রস্তাবে রদবদল চাইতে পারে৷ তবে মৌলিক লক্ষ্য ইতোমধ্যে স্থির হয়ে গেছে৷ শুধু সেই লক্ষ্য পূরণের পথ নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে৷ ‘ফিট ফর ফিফটি ফাইভ' উদ্যোগের আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে নির্গমনের মাত্রা ১৯৯০-এর তুলনায়  ৫৫ শতাংশ কমাতে হবে৷ তারপর ২০৫০ সালের মধ্যে নির্গমন পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে৷

পরিবেশ সংরক্ষণের প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়নে রাজনৈতিক বিভাজন ক্রমেই আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷ বিশেষ করে রক্ষণশীল শিবিরের সঙ্গে সমাজতন্ত্রী ও পরিবেশবাদী সবুজ দলের মতপার্থক্য প্রকট হচ্ছে৷ ফলে অস্বস্তি সত্ত্বেও দুই শিবিরকে বিভিন্ন প্রশ্নে শেষ পর্যন্ত চরম দক্ষিণপন্থি শক্তির সমর্থনের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে৷ বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষই পরস্পরকে আক্রমণও করছে৷ ফলে একদিকে ২৭টি সদস্য দেশের সরকারের নিজস্ব স্বার্থ, অন্যদিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক শিবিরের মধ্যে সংঘাত জলবায়ুর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও ঐকমত্য আরও কঠিন করে তুলছে৷ ফলে পরিবেশবাদীরা ইউরোপীয় নেতাদের সমালোচনা করে চলেছেন ও তাদের উপর চাপ বজায় রাখছেন৷

সূত্র: ডয়েচে ভেলে

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি